বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা

রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিকার কাম্য

রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে মিয়ানমার। এ-সংক্রান্ত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত দি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে গাম্বিয়া। ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সদস্য হিসেবে গাম্বিয়া এ মামলা দায়ের করেছে। গাম্বিয়া তাদের ৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাস ধ্বংসের কথা বলেছে। গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর তামবাদউ বলেছেন, জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। আমাদের চোখের সামনে গণহত্যা ঘটবে আর আমরা তা দেখেও কিছু না করলে আমাদের প্রজন্মের জন্য তা খুবই লজ্জার ব্যাপার হবে। আইসিজে মামলাটি বিচারের জন্য গ্রহণ করলে এটাই হবে গণহত্যার নিজস্ব তদন্তে আইসিজের প্রথম উদ্যোগ। এর আগে তদন্তের ক্ষেত্রে তারা অন্য সংস্থার ওপর নির্ভর করত। আইসিজের বিধি অনুসারে, জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারে। গণহত্যা প্রতিরোধ ও এর শাস্তির বিধানে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। ১৯৫৬ সালে ওই ‘জেনোসাইড কনভেনশন’-এ সই করেছিল মিয়ানমার। গাম্বিয়াও এ কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। এ কনভেনশনের আওতায় দেশগুলো শুধু গণহত্যা থেকে বিরত থাকাই নয়, বরং এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ এবং এমন অপরাধের জন্য শাস্তিবিধানেও বাধ্য। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের আদালতে গণহত্যার অভিযোগ উত্থাপনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ওআইসির সর্বশেষ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা আশা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ কোনো সংঘাত ছাড়াই প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। কিন্তু মিয়ানমারের দিক থেকে এ পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। আশা করা যায় আন্তর্জাতিক আদালত রোহিঙ্গাদের অস্তিত্বের স্বার্থে এ বিষয়ে

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দেবে।

সর্বশেষ খবর