শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

পদ্মা মেঘনার চরে বিদ্যুৎ

অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণ

বিদ্যুতের মাধ্যমে মানুষ পায় আলো। দূর হয় অন্ধকার। আজকের যুগে উন্নয়নের চাবিকাঠিও বিদ্যুৎ। কলকারখানা চালাতেও এটি ইন্ধনশক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে বিদ্যুতের ব্যবহার সুবিদিত। আশার কথা, গত ১১ বছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কয়েক গুণ বেড়েছে। একসময় বিদ্যুতের দাবি জানাতে গিয়ে মানুষকে প্রাণ হারাতে হতো। আলো আর অন্ধকারের লুকোচুরি খেলা চলত বিদ্যুৎ সংযোগ আছে এমন এলাকাগুলোতেও। আশার কথা, সেই দিনগুলো এখন অতীত। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ নামের জাদু। তার পরশে কেটে যাচ্ছে অন্ধকার। এমনকি পদ্মা-মেঘনার প্রত্যন্ত চরগুলোর জনপদে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক সংযোগ। আজ সন্ধ্যায় পদ্মা ও মেঘনার চরের ১৮ হাজার পরিবারে মিলবে অন্ধকার থেকে মুক্তি। শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জের তিনটি ইউনিয়নের এ পরিবারগুলোয় কেরোসিনের কুপিবাতির পরিবর্তে জ্বলবে বিদ্যুতের আলো। জেলা-উপজেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা এসব চর কখনো বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবেÑ তা কারও ভাবনায় ছিল না। কিন্তু মুজিববর্ষে প্রতিটি ঘর হবে আলোকিতÑ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার বাস্তবায়নে প্রত্যন্ত ওই চরগুলোয় নেওয়া হয়েছে বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ। শরীয়তপুর জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে পদ্মা ও মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা চরে প্রায় ৭০ বছর আগে মানুষের বসবাস শুরু হয়। চরের নওয়াপাড়া ও চরআত্রা ইউনিয়ন পড়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। আর কাঁচিকাটা ইউনিয়ন ভেদরগঞ্জ উপজেলার অংশ। বিদ্যুতের আলো এখানকার মানুষের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। সন্ধ্যা নেমে এলেই অন্ধকারে ডুবে যায় পুরো চরাঞ্চল। এ অবস্থায় গত বছরের ২৩ এপ্রিল এ অঞ্চল বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আনতে পাশের মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে পদ্মার তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর ৮০০ মিটার অংশে বিদ্যুতের লাইনের প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের কর্মসূচি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের এক মহতী উদ্যোগ। এ উদ্যোগ প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্যও আধুনিক জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। প্রত্যন্ত এলাকায়ও হবে তথ্যপ্রযুক্তির চর্চা, গড়ে উঠবে কলকারখানা। জেগে উঠবে সব মানুষ।

জেগে উঠবে সুন্দরভাবে বাঁচার প্রত্যাশা।

সর্বশেষ খবর