বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

রেমিট্যান্স আয়ে রেকর্ড

সরকারের চোখ কান খোলা রাখতে হবে

একদিকে করোনাভাইরাস অন্যদিকে ভয়াবহ বন্যায় দেশের অর্থনীতি যখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে তখন সুখবর এসেছে রেমিট্যান্স খাত থেকে। সবারই জানা, দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রমবাজার। গত পাঁচ মাসে কাজ নিয়ে বিদেশে যাওয়া দূরের কথা, হাজার হাজার প্রবাসী দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। বিদেশে কর্মহীন বা অর্ধবেকার জীবন কাটাচ্ছেন এমন প্রবাসীর সংখ্যাও কম নয়। তার পরও জুলাইয়ে একক মাস হিসেবে প্রবাসীরা দেশে ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এটি কোনো মাসে পাঠানো রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ রেকর্ড, যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। জুলাইয়ে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি রেমিট্যান্স আসায় গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩ হাজার ৭২৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩ লাখ ১৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। প্রতি বছরই দুই ঈদ উপলক্ষে পরিবারের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠান প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে জুলাইয়ের আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল আগের মাস অর্থাৎ চলতি বছরেরই জুনে। ওই মাসে ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী গত অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ আসেনি। রেমিট্যান্সের পরিমাণ বিপুলভাবে বৃদ্ধি অবশ্যই একটি সুখবর। তবে এতে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। রেমিট্যান্স বেড়েছে কার্যত দুটি কারণে। প্রথমত, সরকার ব্যাংকিং খাতে যারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তাদের ২ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোকে লাভজনক মনে করছেন। দ্বিতীয়ত, করোনার দুঃসময়ে প্রবাসীরা টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে হুন্ডির প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না। রেমিট্যান্স বিপুলভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করেছে রেমিট্যান্স আয়ের এক বড় অংশ আসত হুন্ডির মাধ্যমে। অর্থনীতি শুধু নয়, দেশের নিরাপত্তার জন্যও যা ছিল বিপজ্জনক। অর্থনীতির স্বার্থেই এ ব্যাপারে সরকারকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর