শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

শিক্ষক রাজনীতি

লেজুড়বৃত্তি মুক্ত হয়ে গবেষণায় মন দিন

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পেশা নির্বাচনে পাকিস্তান আমল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়ার বিষয়টি সামাজিকভাবে স্বীকৃত রীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে মেধাবীদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় হলো নতুন জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা। সুতরাং জ্ঞান অর্জনের সর্বশেষ ধাপে গবেষণার মাধ্যমে মানব জাতির জন্য নতুন জ্ঞান সৃষ্টির দায়িত্বটি সব দেশেই মেধাবী সন্তানদের ওপর অর্পণের রীতি চালু রয়েছে। মেধাবীরা যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আকৃষ্ট হন এবং নির্বিঘ্নে শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিয়োজিত থাকতে পারেন সে জন্য উন্নত ও উন্নয়নশীল প্রায় সব দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকারের হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত রাখা হয়। আমাদের দেশে শিক্ষাঙ্গনের বড় সমস্যা শিক্ষকদের রাজনীতিতে অতিরিক্ত জড়িয়ে পড়া। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক এখন সরাসরি রাজনৈতিক দলের সদস্য। অনেকে রয়েছেন জেলা ও উপজেলা কমিটিতেও। তারা শিক্ষকতার চেয়ে বেশি সময় দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে। আবার কেউ কেউ আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়েও বেশি দলীয় অবস্থান প্রদর্শনে ব্যস্ত। শিক্ষকরা রাজনীতিসচেতন হবেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করতে পারেন। কিন্তু দলীয় লেজুড়বৃত্তি শিক্ষকদের মানায় না। শিক্ষকদের প্রধান কাজ পাঠদান, গবেষণা। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে দেশের শিক্ষকসমাজ। তাদের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা অতীতেও শিক্ষকদের ছিল। কিন্তু এখনকার মতো ভয়াবহ অবস্থা অতীতে কখনো হয়নি। তাই এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। দেশ ও মানুষের প্রশ্নে শিক্ষক রাজনীতি অবশ্যই থাকবে কিন্তু দলবাজিতে বেশি যুক্ত হলে সমস্যা হয়। সবারই একটি রাজনৈতিক দর্শন থাকতে পারে। কিন্তু শিক্ষকতা করার ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। শিক্ষকদের নিরপেক্ষতার জায়গা থেকে ছাত্রদের পাঠদান করাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর