কিশোর অপরাধ বাড়ছে। পৃথিবীজুড়ে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। জীবন-জীবিকা নিয়ে যখন চরম উৎকণ্ঠায় সাধারণ মানুষ তখন গড্ডালিকায় গা ভাসাচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলার সুযোগ ভিন্নভাবে কাজে লাগাচ্ছে কিশোরদের বখে যাওয়া একটি অংশ। জড়িয়ে পড়ছে নানা অসামাজিক ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। উঠতি ছেলেদের ঘরে আটকে রাখা আরও বেশি কষ্টকর হয়ে পড়ছে নতুন ডিভাইসের কারণে। মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে কেউ কেউ লেখাপড়া ছেড়ে অশ্লীল ভিডিও দেখছে। ফেসবুকের সুবাদে জড়িয়ে পড়ছে প্রেমে। মানছে না সরকার নির্ধারিত বয়সের পরিসীমা। কোথাও বা ছোট-বড় কিশোর গ্যাং সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ ঘটাচ্ছে। লকডাউনে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে শিশু-কিশোরদের অপরাধের ধরনও অনেকটা বদলেছে। আজকের কিশোররাই আগামী দিনে দেশের হাল ধরবে। অথচ প্রশ্ন উঠেছে আমাদের কিশোররা কি সঠিক পথে হাঁটছে? আমরা কি তাদের সুষ্ঠু বিনোদন কিংবা খেলাধুলার পরিবেশ দিতে পারছি? পরিবারও কি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে? বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রাজধানীতে এখন অন্তত ৭০ থেকে ৭৫টি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এদের সদস্য সংখ্যা দেড় থেকে দুই হাজার। কিশোর গ্যাংয়ের মদদ দিচ্ছে এলাকার কথিত বড় ভাইয়েরা, ক্ষেত্রবিশেষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব। বয়সের কারণে এদের বলা হয় কিশোর। কিশোর বলতে আমরা বুঝি সেই বালকদের যাদের গোঁফ গজিয়েছে তবে এখনো তা কামায়নি। কিশোরের সংজ্ঞা যা-ই হোক তারা পুরুষ। পুরুষ তার পৌরুষ দেখাবে না তা হয় না। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তা দেখাচ্ছে। গ্যাংয়ের কিশোরেরা রাস্তার পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ নয়, তারা বাস করে পরিবারে মা-বাবা ও অভিভাবকদের সঙ্গে। তারা কেমন ছেলে এবং তারা কী করে তা তাদের অভিভাবকদের অজানা নয়। অভিভাবকদের দায়িত্বহীনতা বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রশ্রয় ছাড়া সন্তান বিপথে যেতে পারে না। এ ব্যাপারে অভিভাবক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।