রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বিমানের পথচলা

সাজ্জাদুল হাসান

বিমানের পথচলা

সবকিছুর একটা শুরু থাকে। বিমানের পথচলার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে সর্বপ্রথম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে হয়। আকাশে উড়তে পারার মানুষের যে আজন্ম লালিত স্বপ্ন, বাঙালি জাতির সে স্বপ্ন পূরণের অগ্রনায়ক হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরই দূরদর্শিতা ও দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্যস্বাধীন দেশে সরকারের দেওয়া বিমানবাহিনীর একটি ডিসি-৩ উড়োজাহাজ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস যাত্রা করে। যে যাত্রার শুরু জাতির পিতার হাতে হয়েছিল মাত্র একটি পুরনো ডগলাস ডিসি-৩ উড়োজাহাজের মধ্য দিয়ে, দীর্ঘ ৫০ বছর পর সে যাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বিমানের উড়োজাহাজ বহর রূপায়িত হয়েছে ২১টি অত্যাধুনিক উড়োজাহাজসংবলিত বিশ্বের অন্যতম তরুণ বহর হিসেবে। স্বাধীনতার কয়েক বছর আগে থেকেই পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসে (পিআইএ) কর্মরত বাঙালি পাইলট ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বতন্ত্র এয়ারলাইনস স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে কথাও বলেন ক্যাপ্টেন আবু তারেক আলমগীর, ক্যাপ্টেন শাহাবউদ্দিন, ক্যাপ্টেন সাত্তারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধু উত্তরে বলেছিলেন, ‘দেশটাই তো স্বাধীন করে দিচ্ছি। আবার আলাদা এয়ারলাইনস কী? দেশটা স্বাধীন হলে এমনিতেই তো আলাদা এয়ারলাইনস হবে।’ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বাঙালি সদস্যদের পাশাপাশি পিআইএতে কর্মরত বাঙালি পাইলটরা মিলে ২৮ সেপ্টেম্বর গড়ে তোলেন স্বাধীন বাংলাদেশের বিমানবাহিনী, আর স্বাধীনতা লাভের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি জন্ম হয় বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার থেকে উপহার পাওয়া একটি পুরনো ডগলাস ড্যাকোটা-৩ (ডিসি-৩) ছিল বিমানবহরের একমাত্র উড়োজাহাজ। ১৯৭২ সালে ট্রেনিং ফ্লাইট চলাকালে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় বলে বিমানের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে এটা আর ব্যবহার করা যায়নি। এমনি যখন বাস্তবতা তখন ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনস থেকে প্রাপ্ত দুটি এফ-২৭ উড়োজাহাজের মাধ্যমে ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও যশোর অভ্যন্তরীণ রুটগুলোয় বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু হয়। অন্যদিকে ব্রিটিশ ক্যালিডোনিয়ান থেকে একটি বোয়িং ৭০৭ চার্টার্ড উড়োজাহাজ নিয়ে ঢাকা-লন্ডন রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্য দিয়ে বিমানের আন্তর্জাতিক পরিষেবা শুরু হয়।

২০০৭ সালে সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা বিমান পরবর্তীকালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বিমান আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০০৮ সালে নতুন প্রজন্মের ১০টি উড়োজাহাজের জন্য বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুক্তি করে বিমান। বিগত ১০ বছরে বিমানের আধুনিকায়ন সবচেয়ে বেগবান হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় বাংলাদেশ সরকার-প্রদত্ত সহায়তা এবং ঝড়াবৎবরমহ এঁধৎধহঃবব-এর আওতায় ২০১১ সালে দুটি ও ২০১৩ সালে দুটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং ২০১৫ সালে আরও দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এনজি বিমান বহরে যুক্ত হয়। ২০১৮ সালের আগস্ট ও নভেম্বরে দুটি এবং ২০১৯ সালের জুলাই ও সেপ্টেম্বরে আরও দুটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানবহরে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে মোট ১০টি এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতা ও নির্দেশনায় ডিসেম্বর ২০১৯ সালে দুটি অত্যাধুনিক ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ কেনার ফলে বিমানের নতুন উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২টিতে।

জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানে নতুন উড়োজাহাজ সংযোজন, নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন, ইন-ফ্লাইট বিনোদন বৈচিত্র্য আনয়ন, নিরাপদ উড্ডয়নের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পাঁচ তারকা খেতাব অর্জন, মোবাইল অ্যাপস চালুকরণ, বিমানকে একটি লাভজনক সংস্থায় উন্নীতকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে সত্যিকার অর্থে বিশ্বমানের একটি এয়ারলাইনস হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বহুমাত্রিক নেতৃত্ব ও নির্দেশে বিমানের যাত্রীদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। প্রধানমন্ত্রী তাঁর পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিমানকে গড়ে তুলেছেন একটি আধুনিক এয়ারলাইনস হিসেবে। বিমানবহরকে ঢেলে সাজাতে তিনি বিশ্বখ্যাত উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনারসহ ১২টি নতুন উড়োজাহাজ কেনার সভরেন গ্যারান্টি প্রদান করেন। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অভিপ্রায়ে তিনটি নতুন ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ বিখ্যাত Canadian উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডিহ্যাভিল্যান্ড থেকে কেনা হয়। বিমানের সব নতুন উড়োজাহাজের নামকরণও তিনি নিজে করেন। প্রধানমন্ত্রী বিমানের উড়োজাহাজগুলোকে সোনার তরী, অচিন পাখি, আকাশবীণা, গাঙচিল, হংসবলাকা, রাজহংস, পালকি, অরুণ আলো, আকাশপ্রদীপ, রাঙাপ্রভাত, মেঘদূত, ময়ূরপঙ্খী, ধ্রুবতারা, আকাশতরী, শ্বেতবলাকা, হংসমিথুন ইত্যাদি মনোরম ও চিত্তাকর্ষক নামে নামকরণ করেন। যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি বিমান বাংলাদেশ কার্গো পরিবহনের সুবিধার্থে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি কার্গো ভিলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে বিদেশে পাঠানোর আগে মালামাল মোড়কীকরণ এবং লেবেলযুক্তকরণের কাজ করা হয়। সুরক্ষার মান উন্নত করার পর ২০১৮ সালের মার্চ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে সরাসরি কার্গো পরিবহনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। বর্তমানে বিমান তার বহরের ২১টি উড়োজাহাজের মাধ্যমে ২০টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। গন্তব্য সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে এ বছরের ২৫ জানুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চালু করা হয়েছে এবং মাত্র কদিন আগে ২৬ মার্চ কানাডার টরন্টোয় বিমানের ফ্লাইট পরিচালনার উদ্দেশ্যে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট অত্যন্ত সুচারুরূপে সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী জুনে ঢাকা ও টরন্টোর মধ্যে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া নারিতায় ফ্লাইট পুনঃপ্রবর্তন এবং নতুন গন্তব্য হিসেবে বাহরাইন, চেন্নাই, কলম্বো ও মালেতে বিমানের সার্ভিস সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্যাটাগরি-১-এ উন্নীত হওয়া সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যথাশিগগিরই বিমানের ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।

শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্চ মানের যাত্রীসেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিমান। বিমান তার হাজারো নিবেদিতপ্রাণ কর্মীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে সর্বদা সচেষ্ট। দক্ষ কর্মীগোষ্ঠীর পাশাপাশি নতুন অত্যাধুনিক মানের উড়োজাহাজগুলো বিমানবহরে যোগ দেওয়ায় বিমানের সেবার মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। মোবাইল অ্যাপ ও অনলাইনে টিকিট সেবা প্রদানের মাধ্যমে টিকিট কেনাবেচায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিমান সর্বোচ্চ মানের সেবা নিশ্চিতের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফলে বিমানের অনটাইম পারফরম্যান্স (ওটিপি) এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়া ও টেকনিক্যাল ত্রুটিজনিত সমস্যা ছাড়া উড়োজাহাজ নির্ধারিত সময় অনুযায়ীই যাত্রীসেবা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদেরও প্রথম পছন্দের জায়গায় স্থান করে নিচ্ছে বিমান। জন্মের পর থেকে বিমান সবচেয়ে প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে কভিডকালে। বিশ্বের একের পর এক স্বনামধন্য এয়ারলাইনস যখন নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করছে, বিমান তখন নিজের অস্তিত্ব রক্ষার সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা মহামারির ফলে উ™ূ¢ত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের প্রত্যাবর্তনে পৃথিবীর বিভিন্ন গন্তব্যে (পর্তুগাল, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, লেবানন, গ্রিস, স্পেন, রোম, জাপান, মালদ্বীপ, বাহরাইন, হংকং, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, ফিলিপাইন, জর্ডান, আলজেরিয়া ইত্যাদি) বিমান বাংলাদেশ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। লেবাননের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রায় এক মাস নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে বৈরুত থেকে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ন্যূনতম খরচে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। করোনায় চরম বিপর্যয়গ্রস্ত চীনের উহান থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্ধারকার্যে ৩১ জানুয়ারি ২০২০-এ বিমানই প্রথম একটি ফ্লাইট পরিচালনা করে। বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনাক্রমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস চীনের বেইজিং ও তিয়ানজিন থেকে ভ্যাকসিন আনয়নে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এ ছাড়া বিমান ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের জাতিসংঘ শান্তি মিশনের ৪০টির অধিক ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শান্তিরক্ষীদের মালি, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিক ও সাউথ সুদানের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পৌঁছে দিয়েছে। জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী পরিবহনের কাজ এখনো চলমান এবং বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের আকাশ ভ্রমণে আস্থার প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বিমান। অপরিহার্য এসব ফ্লাইটের পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করে। এ দুঃসময়ে মাথা উঁচু করে টিকে থাকা নিঃসন্দেহে বিমানের সবচেয়ে সেরা সাফল্য। বিমান আজ যে অদম্য গতিতে ছুটছে, এ গতির পেছনের অন্যতম কারিগর আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার অভিভাবকত্বে বিমানের অনেক অর্জনের মধ্যে অন্যতম অর্জন বলা যায় অতিসম্প্রতি ঢাকা-টরন্টো-ঢাকা রুটে পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা। এ বছর মহান স্বাধীনতা দিবসে ঢাকা থেকে যাত্রা করে দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টা ৪০ মিনিট উড্ডয়নের পর টরন্টোর পিয়ারসন বিমানবন্দরে গুঁড়িগুঁড়ি বরফবৃষ্টি চলাকালে দেশি দক্ষ বৈমানিক কর্তৃক বিমানের ড্রিমলাইনার ‘সোনার তরী’ অবতরণের মাধ্যমে এ ইতিহাস রচিত হয়। উড্ডয়নসংশ্লিষ্ট অনেকের মতে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম বাণিজ্যিক ফ্লাইট। নতুন মাইলফলক সৃষ্টির এ শুভক্ষণটিকে উড়োজাহাজ অবতরণের ‘শর্ট ফাইনাল’ অবস্থান থেকে তীব্র শীত উপেক্ষা করে তরুণ বাংলাদেশিরা যেভাবে ভিডিও ধারণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে তাদের আনন্দ আর গভীর উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। নেট দুনিয়ায় এ ভিডিও যেভাবে ভাইরাল হয়েছে তা লাল সবুজের পতাকাবাহী জাতীয় এয়ারলাইনস বিমানের প্রতি সমস্ত বাঙালি জাতির ভালোবাসা এবং প্রত্যাশাই প্রতিফলিত হয়েছে। শত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলভাবে ঢাকা-টরন্টো-ঢাকা রুটে পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক ফ্লাইট শেষে ড্রিমলাইনার ‘সোনার তরী’ যথারীতি ফিরেও এসেছে ঢাকায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় এবার আমাদের লক্ষ্য নারিতা, চেন্নাই, মালেসহ অন্যান্য গন্তব্যে বিমানের ডানা বিস্তৃত করা। আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া এই যে প্রধানমন্ত্রী বিমানের একজন সম্মানিত আস্থাশীল গ্রাহক। রাষ্ট্রীয় কার্যের প্রয়োজনে দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে হলে তিনি সব সময় বিমানকে বেছে নেন। বিমানের উন্নতির পথে যে কোনো ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সর্বদাই বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জাতির পিতার স্বপ্নে লালিত এবং নিজ হাতে গড়া এ বিমানকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী চিন্তা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আজ বিমানের এ সাফল্যে দৃশ্যমান। বিমান এখন সেদিনের অপেক্ষায় যেদিন লাল সবুজের পতাকা খচিত উড়োজাহাজ বিশ্বের আনাচে কানাচে বাংলাদেশের আতিথেয়তা পৌঁছে দেবে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা এয়ারলাইনস হিসেবে আরও এগিয়ে যাবে বিমান- এ প্রত্যাশা করছি।

লেখক : সাবেক সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়  ও চেয়ারম্যান, বিমান পরিচালনা পর্ষদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর