শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ওষুধের গুণমান

প্রচারের বাধা তুলে নিন

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে ওষুধশিল্পে সবচেয়ে সমৃদ্ধ। বিশ্বের বিপুলসংখ্যক দেশে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোয়ও যাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। এসব দেশ ওষুধ তো বটেই যে কোনো খাদ্য ও পানীয়ের মানের ব্যাপারে আপসহীন। ওষুধের ক্ষেত্রে তাদের সংবেদনশীলতা আরও বেশি। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি ওষুধের সুনাম থাকলেও দেশজুড়ে ওষুধ বাণিজ্যে চলছে সীমাহীন নৈরাজ্য। নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ এবং ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি হয়ে পড়েছেন রোগীরা। ক্রেতারা জানতেও পারছেন না টাকা দিয়ে কী ওষুধ কিনছেন। ক্রেতাদের সচেতনতা বাড়াতে নেই প্রচারের সুযোগ। উপরন্তু আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওষুধ সম্পর্কিত প্রচারের ব্যবস্থাটি। ফলে অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তাররাও নতুন ওষুধ সম্পর্কে জানেন না। অপ্রয়োজনীয় ওষুধে সয়লাব হয়ে আছে দেশের বাজার। বিশেষজ্ঞদের মতে দুনিয়ার সব দেশে ওষুধের গুণগত মান ও কার্যকারিতা সম্পর্কে ক্রেতাদের জানার ব্যবস্থা থাকলেও বাংলাদেশে তা অনুপস্থিত। ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচারে আইনগত বাধা থাকায় মূল্য নির্ধারণ, গুণগত মান এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে ক্রেতারা কিছুই জানতে পারেন না। অন্যদিকে কমিশনের লোভে অনেক ডাক্তার অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও টেস্ট লিখে দিচ্ছেন রোগীকে। ১৯৮২ সালের ওষুধনীতিতে ওষুধ ও স্বাস্থ্য বিষয়াবলির বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের দ্বারা মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা না থাকলেও ওষুধ কোম্পানিগুলো বিক্রয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিপণন ও প্রচার খাতে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে ডাক্তারদের পেছনে। এর ফলে রোগীদের কাছে কোনটি মানসম্মত আর কোনটি মানহীন ওষুধ সে সত্য গোপন থাকছে। ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচার উন্মুক্ত হলে ক্রেতাদের অন্ধকারে রাখার অপকৌশলের ইতি ঘটবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর