রবিবার, ২৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

মানব পাচার

প্রশাসনকে কড়া হতে হবে

মানব পাচার দেশের সুনামের জন্য কলঙ্ক হয়ে উঠছে। কিছু মানুষের লোভের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের সুনাম। দুনিয়ার যেসব দেশ থেকে মানব পাচার বেশি হয় তার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এজন্য ‘আদম ব্যাপারি’ নামধারী কিছু অসৎ মানুষ যেমন দায়ী, তেমন দায়ী তাদের প্রলোভনে ভোলা কিছু লোভী মানুষও। পত্রপত্রিকা ও রেডিও-টিভিতে মানব পাচার সম্পর্কে প্রায়ই খবর প্রকাশ পেলেও দিবাস্বপ্নে ভোগা লোকজনের সংবেদনশীলতায় তা কোনো অবদান রাখতে পারছে না। আর এ কারণেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের পথে বংলাদেশিদের মরণযাত্রা থামছে না। দিন যাচ্ছে আর স্বপ্নে বিভোর যুবকের ভিড়ও বাড়ছে লিবিয়ায়। স্থানীয় পুলিশ ও কোস্টগার্ডের অভিযানে লিবিয়ায় প্রায় প্রতিদিনই আটক হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। সাগর থেকে উদ্ধারও হচ্ছেন নিয়মিত। খাটতে হচ্ছে জেল। জীবন বাজি রেখে এ পথে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেকে। বেঁচে থাকা অনেককে ফিরতে হচ্ছে নিঃস্ব-রিক্ত হয়ে। বৃহস্পতিবারও এমন ১৬০ হতভাগ্য ফিরে এসেছেন বাংলাদেশে। এর পরও ইউরোপের হাতছানি থেকে ফেরানো যাচ্ছে না বাংলাদেশিদের। লিবিয়া ও তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড এবং ইউরোপের উদ্ধার অভিযান চালানো এনজিওগুলোর তথ্যানুসারে বৃহস্পতিবার ভূমধ্যসাগরে একটি কাঠের নৌকা থেকে ১০৯ শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি ১০৪ জন, আফ্রিকান তিনজন ও মরক্কোর দুজন। ২৩ মে লিবিয়া থেকে ছাড়া এ নৌকার যাত্রীদের উদ্ধার করেছে এস্ট্রাল ও নাদির নামের দুটি জাহাজ। একই দিন তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে ৭৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন। লিবিয়ার জুয়ারা থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করে তিউনিসিয়া উপকূলে যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়। ওই নৌকায় কারা ছিলেন সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য না মিললেও মরণযাত্রায় যেহেতু বাংলাদেশিরা এগিয়ে সেহেতু অনুমান করা যায় তাদের সিংহভাগই হয়তো আমাদের কারোর না কারোর স্বজন। মানব পাচার বন্ধে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কড়া হতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর শাস্তিযোগ্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে পাচারকারীদের নিরুৎসাহ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর