শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সংকট

আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে হবে

রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতেই হবে। বাংলাদেশ কখনই এদের ভার চিরদিনের জন্য বহন করবে না। এদের ফেরত দেওয়ার জন্য অবশ্যই জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। এটা শুধু মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়ভাবে করলে হবে না, চীনসহ আসিয়ানভুক্ত দেশের সরকারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সমাধান বের করতে হবে। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্ব^র রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহকে হত্যার পর থেকেই জল্পনা চলছিল, এর পেছনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠন আরাকান স্যালভেশন আর্মি বা আরসা জড়িত। সরকার বিভিন্ন সময় বলে আসছিল বাংলাদেশে আরসার কোনো তৎপরতা নেই। কিন্তু কোনো না কোনোভাবে যে তারা বাংলাদেশে সক্রিয় আছে এবং বিপদ ঘটানোর সামর্থ্যও রাখে তার প্রমাণ মিলেছে মুহিব্বুল্লাহ হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। গত পাঁচ বছরে ১২৩ জনকে হত্যা করেছে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর চরম অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হলে বাংলাদেশ মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আগেও বিভিন্ন সময় অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার চাপ বাংলাদেশকে নিতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর কারণে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত নানা সমস্যা বাংলাদেশকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এখন এসব শিবিরকে কেন্দ্র করে যদি সহিংসতা বা সশস্ত্র তৎপরতা ঘটে, তা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির সৃষ্টি করবে। আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যু আরও জোরদারভাবে তুলতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জনমত তৈরির বিষয়ে জোর দেওয়ার প্রয়োজন আছে। আমরা মনে করি রোহিঙ্গা শিবিরকে কেন্দ্র করে আরসার তৎপরতার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ জোরদার করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর