রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মোবাইল আসক্তি

শিশুদের জন্য বিপদ ডেকে আনছে

ডিজিটাল ডিভাইস শিশুদের শৈশব কেড়ে নিচ্ছে। তাদের বুদ্ধির বিকাশ রুদ্ধ হচ্ছে মোবাইল ব্যবহারের কারণে। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক গবেষণায় দেখা যায়, যেসব শিশু দৈনিক পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সাধারণ শিশুদের চেয়ে তাদের বুদ্ধির বিকাশ কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ৬৬ শতাংশ শিশু শরীরচর্চার পিছনে দৈনিক এক ঘণ্টা সময়ও ব্যয় করে না। চক্ষু ও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তিতে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাধা পাচ্ছে মানসিক বিকাশ। এ কারণে এখন ছয় থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের দৃষ্টি ও মানসিক সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হচ্ছে ব্যাপকভাবে। বিপুল সংখ্যক শিশু এখন মানসিক সমস্যায় ভুগছে এর পিছনে অন্যতম কারণ মোবাইল আসক্তি। শিশুর ক্ষীণদৃষ্টির অন্যতম কারণও মোবাইলসহ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের আসক্তি। করোনায় দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং বাইরে খেলার সুযোগ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ স্কুলপড়ুয়া শিশু ঘরে থেকে মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বেশি ব্যবহার করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে গেলেও কার্টুন দেখা, গেমস খেলা ও মুভি দেখার মতো বিনোদনমূলক কাজগুলো শিশুরা এখনো মোবাইলেই বেশি করছে। মোবাইল স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকার ফলে শিশুর দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শহরে খেলার মাঠের অভাব এবং ঘরের বাইরে নিরাপত্তা কম থাকায় শিশুরাও বাইরে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারছে না। ডিজিটাল ডিভাইস দুনিয়াকে পাল্টে দিয়েছে। মানবজাতির বিস্ময়কর অগ্রগতির পিছনে এর অবদান অনস্বীকার্য। মোবাইল আসক্তি ইতোমধ্যে শিশুদের যে ক্ষতি করছে তা অপূরণীয়। অনেক বাবা-মা শিশুদের কান্না থামাতে নিজেরাই তাদের হাতে মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দেন। সরে আসতে হবে এই আত্মঘাতী বোকামি থেকে। শিশুদের স্বার্থেই তাদের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর