যানজটে নাকাল দেশের ছোটবড় অধিকাংশ শহর, নগর, মহানগরের বাসিন্দা। তাতে তাদের প্রচুর কর্মঘণ্টার দুঃখজনক অপচয় হয়। কাজের ক্ষতি হয় এবং বিস্তর জ্বালানিও পোড়ে অকারণে। নাগরিকদের এই তিক্ত অভিজ্ঞতার অংশীদার হচ্ছে এখন বগুড়া শহরের অধিবাসীরাও। বগুড়া পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে শহরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন অবৈধ অটোরিকশা, ইজিবাইক ও অন্যান্য যানবাহনের চালকরা। বাস-ট্রাক-প্রাইভেট কার তো আছেই। ফলাফল অনিবার্য পরিণতি দুঃসহ যানজট। তাতে হেনস্তার শেষ নেই বগুড়াবাসীর। এ থেকে যেন মুক্তিও নেই। অবৈধ ইজিবাইক, মোটা চাকার অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনের দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। ১০ মিনিটের দূরত্বে পৌঁছাতে সময় লেগে যাচ্ছে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিত্যদিন নানা কাজে শহরে আসা কয়েক লাখ মানুষকে।
অভিযোগ জেলায় দাপিয়ে বেড়ানো অবৈধ অটোরিকশা ও ইজিবাইক গিলে খাচ্ছে বরাদ্দের বিদ্যুতের একটা বড় অংশ। অথচ সময়-অসময়ে ভুগতে হচ্ছে লোডশেডিংয়ে। রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি শহরে অবৈধ অটোরিকশা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হলেও বগুড়ায় প্রশাসনের এ বিষয়ে এখনো টনক নড়েনি। শহরবাসী এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলা শহরের মধ্যে বগুড়া সবচেয়ে জনবহুল। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক শহর বলে প্রতিদিন উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ নানা কাজে মানুষ বগুড়ায় আসে। ফলে শহরে মানুষের সমাগম চলাচল বেড়ে যায়। ব্যস্ত নগরীর রূপ নেয় বগুড়া। একদিকে যেমন মানুষের সমাগম, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অবৈধ যানবাহন। শহরে চলাচলরত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক চালকদের অনেকেই ট্রাফিক আইন জানেন না, মানছেনও না। ইচ্ছামতো যেখানে-সেখানে রিকশা স্ট্যান্ড বানিয়ে যানজটের সৃষ্টি করছেন। অবৈধ অটোরিকশার জটে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে দীর্ঘ যানজটে পড়ে নাভিশ্বাস অবস্থা তৈরি হয়। এদিকে শহরে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের সংখ্যা কম হওয়ায় যানজট নিরসনে মহা হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। যানজট নিয়ন্ত্রণে যেসব নিয়মকানুন করা হয়েছে, সেগুলো কাজে আসছে না। ব্যস্ততম এই শহরে বর্তমানে অসংখ্য বিশৃঙ্খল যানবাহনের জটে সড়কের এক পাশ থেকে অন্য পাশে পার হওয়াই কষ্টসাধ্য। এর অবসান চায় শহরবাসী। কবে এ হতোদ্যম কেটে যানজটমুক্ত হবে বগুড়া শহর-এই প্রশ্ন বগুড়াবাসীর।
তারা সহসাই এ অচলাবস্থার সুরাহা চায়। আশা করে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ সমন্বিত উদ্যোগ, প্রচেষ্টা, পদক্ষেপে এ সংকট সমাধানের পন্থা উদ্ভাবন ও তার বাস্তবায়ন করবে।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী