শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

মানকালীর ভিটা মসজিদ

মানকালীর ভিটা মসজিদ

মানকালীর ভিটা মসজিদ বগুড়ার মহাস্থানগড় তথা প্রাচীন পুণ্ড্রনগরের ধ্বংসাবশেষের ওপর স্থাপিত। ১৯৬৫-৬৬ সালের শীতকালে নিয়মিত খননকালে অস্বাভাবিক কিছু স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্যসংবলিত প্রাক-মুঘল যুগের ১৫ গম্বুজের একটি জামে মসজিদের চিহ্ন আবিষ্কৃত হয়। ইটের তৈরি এ মসজিদের পরিত্যক্ত ধ্বংসাবশেষ চারদিকের ভূমি থেকে প্রায় ১.৫ মিটার উঁচু। ভূমি নকশায় আয়তাকার এ মসজিদটির পরিমাপ ২৮.৪ মিটার ী ১৬ মিটার। এর দেয়ালগুলো ১.৫ মিটার পুরু। আদিতে ১৫টি গম্বুজ উবু করে বসিয়ে মসজিদটিতে ছাদ দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিম দেয়ালের অভ্যন্তরে পাঁচটি খাঁজকৃত অর্ধগোলাকৃতি মেহরাব আছে। পুব দেয়ালে আছে পাঁচটি প্রবেশদ্বার। খননকালে সুলতানি যুগের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ চমৎকার পোড়ামাটির ফলক ও খোদাইকৃত ইটের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। অলংকরণ রীতির মধ্যে ছিল প্রধানত ফুলের নকশা, জ্যামিতিক নকশা, শিকল, পিরামিড, খোদাই করা পদ্মপাপড়ি ও গোলাপ। নামাজ কক্ষের অভ্যন্তরে অদ্ভুত ধরনের বেশ কয়েকটি ছোট পাকা মঞ্চের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মেহরাবের কাছে উত্তর দিকে ধাপসহ একটি মিম্বার বা প্রচারমঞ্চ দেখা যায়, যার আয়তন ১.৮ ী ১.৭ মিটার। এগুলোর একটি কেন্দ্রীয় মেহরাবের কাছে ছিল, যা ১.৫ মিটার প্রশস্ত প্রবেশপথসহ দেয়ালের ভিতরে ছিল। এতে এটি মসজিদের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। সম্ভবত এ এলাকার প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য এটি প্রথম থেকেই নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছিল। মসজিদটির অন্য অপরিচিত বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে নামাজ কক্ষের অভ্যন্তরে তিনটি ছোট উঁচু মঞ্চ, যা মেঝের সাধারণ স্তর থেকে প্রায় ০.২৫ মিটার উঁচু। এর উদ্দেশ্য কী তা স্পষ্ট নয়। পুব দিকে রয়েছে ৭.৮ মিটার প্রশস্ত একটি খোলা আঙিনা। মসজিদটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। এ সময় গম্বুজের ভার রক্ষাকারী অষ্টভুজী স্তম্ভগুলো অতিরিক্ত ইটের সাহায্যে আবৃত করে আরও শক্তিশালী করা হয়। এর ফলে এগুলো বিশাল আয়তাকার রূপ লাভ করে।

সুদীপ্ত সুজন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর