নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে একদল জাতীয় বেইমান। এক থেকে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র। এ অপকর্মের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও জড়িত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কিছু অসাধু কর্মচারী। এদের সহযোগীর ভূমিকা পালন করছেন কক্সবাজারের কয়েকজন শিক্ষক এবং ব্যবসায়ী নামধারী। ইতোমধ্যে এ চক্রের ১০ জন চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরা পড়েছে। অপরাধীদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পাঁচজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরও রয়েছে। এ চক্রে জড়িত কক্সবাজারের শিক্ষক ও ব্যবসায়ী নামধারীরা বাংলাদেশি এনআইডি পেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কেউ রাজি হলে তারা প্রতিজনের কাছ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা নেন। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় রোহিঙ্গার নাম, পিতা ও মাতার নাম। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রোহিঙ্গারা পেয়ে যান ঢাকা উত্তর সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডের জন্মনিবন্ধন। এরপর নির্বাচন কমিশনের ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের কথামতো বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান তারা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে আঙুলের ছাপ ও ছবি তুলে নির্বাচন কমিশনের মূল সার্ভারে তা আপলোড করা হয়। পরে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের সহায়তায় রোহিঙ্গারা পেয়ে যান এনআইডি। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে এক সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। ১২ লাখ রোহিঙ্গা বিষফোঁড়ার মতো অবস্থান করছে বাংলাদেশে। জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর চাপে বাংলাদেশ অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে বাধ্য হয়েছে। যারা রোহিঙ্গাদের এনআইডি দেওয়ার অপকর্মে জড়িত সেই জাতীয় বিশ্বাসঘাতকদের বিচারের মাধ্যমে কঠিন সাজার ব্যবস্থা করা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।