শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাবিকে পুড়িয়ে হত্যা

বর্বরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

পাষণ্ড দেবরের প্রতিহিংসার রোষানলে পড়ে প্রাণ হারাতে হলো গৃহবধূ সুফিয়া বেগমকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন এই গৃহবধূ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের বাগঝাপা গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে বাড়ির উঠানের পেয়ারা গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন দেবর লিয়াকত মোল্লা। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে কাশিয়ানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আগুনে গৃহবধূর শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লার সঙ্গে তার আপন ভাই লিয়াকত মোল্লার দীর্ঘদিন পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। অভিযুক্ত লিয়াকত মোল্লাও একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। লিয়াকত মোল্লা তার পৈতৃক সম্পত্তির প্রাপ্য অংশ আগেই বিক্রি করে অন্যত্র বসবাস করছেন।

কিন্তু এখনো তিনি পৈতৃক সম্পত্তি পাবেন বলে দাবি করে আসছেন। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে মঙ্গলবার লিয়াকত তার ভাবি সুফিয়া বেগমকে ঘর থেকে টেনে বাইরে এনে উঠানে থাকা পেয়ারা গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। এর এক বছর আগেও লিয়াকত জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে সুফিয়া বেগমের চুল কেটে দিয়েছিলেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ঘাতক লিয়াকত মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবারই সুফিয়ার ভাই বাদী হয়ে লিয়াকতসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে কাশিয়ানী থানায় মামলা করেছেন। এক বছর আগে জমিসংক্রান্ত বিরোধে ওই দেবরবেশী মানুষশকুন সুফিয়া বেগমের চুল কেটে দিলেও সেই ধৃষ্টতার যথাযথ বিচার না হওয়ায় তার সাহস দুঃসাহসে পরিণত হয়। জমিজমার বিরোধে পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্বজনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা আইয়ামে জাহেলিয়ার নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে। সভ্য যুগে এ ধরনের বর্বরতার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর