সোমবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মানব পাচার মামলা

দীর্ঘসূত্রতার জট খুলতে হবে

মানব পাচার এক জঘন্য অপরাধ। বাংলাদেশকে বলা হয় মানব পাচারের অভয়ারণ্য। এ পরিচিতি দেশের সুনামের জন্যও বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে। এ লজ্জা কাটিয়ে উঠতে মানব পাচার সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি প্রত্যাশিত হলেও সে ক্ষেত্রে সময় ক্ষেপণ নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার কথা থাকলেও এ সংক্রান্ত মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। ২০০৪ সাল থেকে গত বছর ৩০ জুন পর্যন্ত মানব পাচারের সাড়ে ৭ হাজার ৫১৭টি মামলা দায়ের হলেও নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ১৩৪টি, অর্থাৎ মাত্র ১৫ শতাংশ মামলা। আর নিষ্পত্তি হওয়া মামলার মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ৪৩৪টিতে। বাকি সব মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাজা হওয়া ৪৩৪ জন আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদন্ড, ২৯৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১২৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। বিভিন্ন আদালতে মানব পাচারের অধিকাংশ মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। মামলার উপাদান, সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তারা যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারছেন না। মানব পাচার আইনে করা মামলায় ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ গঠন এবং ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার শেষ করার বিধান রাখা হলেও তদন্তে ধীরগতির কারণে যথাসময়ে মামলা শেষ করা যাচ্ছে না। মানব পাচার আইনের মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার জন্য সাতটি বিভাগীয় শহরে রয়েছে মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল। আইনজ্ঞদের অভিমত, আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ কমে আসবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পুলিশকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। যে কোনো মামলায় সময় ক্ষেপণ যে বিচারহীনতার নামান্তর এ বিষয়ে আদালত সংশ্লিষ্ট কারোর দ্বিমত নেই।  তদন্ত সংশ্লিষ্টদেরও রয়েছে এ বিষয়ে অভিন্ন অভিমত। তারপরও কেন মানব পাচার সম্পর্কিত মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হচ্ছে না সে বিষয়ে সচেতনতা কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর