সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

হালদা নদীর দুরবস্থা

উজানে তামাক চাষ বন্ধে উদ্যোগ নিন

উপমহাদেশের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী। বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজেরও মর্যাদা পেয়েছে প্রাণবন্ত হালদা। দেশে মাছের উৎপাদন বাড়াতে হালদা থেকে সংগৃহীত মাছের পোনা বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ১৬ কোটি মানুষের আমিষ চাহিদা পূরণে যে নদী অনন্য অবদান রাখছে সে নদী আকণ্ঠ দূষণের শিকার হয়ে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননের বৈশিষ্ট্য হারাতে বসেছে। নদীতীরবর্তী এলাকার আবাসিক-বাণিজ্যিক বর্জ্যরে সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উজানে তামাক চাষের কীটনাশকের নির্যাস। একরের পর একর জমির তামাক চাষের বিষাক্ত কীটনাশকের পানি সরাসরি পড়ছে নদীতে। ফলে দূষণে নাভিশ্বাস উঠছে। প্রতিনিয়তই হচ্ছে নদী বেদখল, চলছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা, তোলা হচ্ছে বালি, নষ্ট হচ্ছে মা-মাছের কূপ, কমছে ডিম, দূষণে মরছে ডলফিন- এসব কারণে হুমকির মুখে পড়েছে হালদার ভবিষ্যৎ। ২০১৬ সাল থেকে ‘হালদা নদীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও হালদা উৎসের পোনার বাজার সম্প্রসারণ’ শীর্ষক ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সরকারি উন্নয়ন সংস্থা পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে, ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আর মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উজান এলাকার জমিগুলোতে সবজি চাষ করা হয়। ২০২০ সালের দিকে হালদার উজানে মানিকছড়ি অংশে তামাকের চাষাবাদ শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। কিন্তু গত বছর থেকে ফের শুরু হয় তামাক চাষ। গত নভেম্বর থেকে মানিকছড়ি এলাকার বড় একটি অংশের চাষিদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করে টোব্যাকো কোম্পানিগুলো। চলতি মৌসুমে ঘোরখানা, আসাদতলী, কালাপানি, তুলাবিল, ছদুরখীল এলাকায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ২৮ জন কৃষক নতুনভাবে তামাক চাষে জড়িয়ে পড়েন। তামাক চাষের কীটনাশকের তরল বর্জ্য সরাসরি পড়ছে নদীতে। হালদা নদীর অস্তিত্বের ওপর আঘাত হানছে কিছু লোভী মানুষের অনাচার। এ যথেচ্ছতা বন্ধে প্রশাসনকে কড়া হতে হবে। বিশেষ করে হালদা নদীর উজানে তামাক চাষ বন্ধে নিতে হবে কড়া ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর