ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রনেত্রী নামধারী নারী মাস্তান ও তার সহযোগীরা র্যাগিংয়ের নামে এক নবাগত শিক্ষার্থীর সঙ্গে যে আচরণ করেছে তা বোধসম্পন্ন যে কোনো মানুষের হৃদয় কেঁপে ওঠার মতো। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিকৃত মনোভাবাপন্ন সিনিয়র শিক্ষার্থীর দ্বারা এক সময় র্যাগিংয়ের মতো নিকৃষ্ট ও বর্বর আনন্দ-উল্লাসের শিকার হতো নবাগত ছাত্রছাত্রীরা। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে একের পর এক খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ছাত্রনেত্রী নামধারীরা তাদের নারীসত্তার মুখে কলঙ্ক লাগিয়ে নবাগত এক ছাত্রীর সঙ্গে যে নোংরা আচরণ করেছে তাকে জঘন্য বললেও কম বলা হবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা আক্তার অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নবীন ছাত্রীকে অমানবিক নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠেছে তাতে নির্যাতনকারীরা সভ্য সমাজের বাসিন্দা কি না দেশবাসী সন্দিহান। র্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নবীন ছাত্রী। পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান তিনি। ঘটনার পরের দিন প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। এরপর হল প্রশাসনও চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে জোরালোভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও হয়রানি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনই করে না এমন দাবিও করেছেন তিনি। আমরা ছাত্রলীগ নেতৃত্বের বক্তব্যকে সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে বলতে চাই যে, ছাত্রলীগের ইতিহাসকে বাংলাদেশের ইতিহাস বলা হয়, সে সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা একের পর এক অপকর্মে জড়িত হবেন তা প্রত্যাশিত নয়। ছাত্রী নির্যাতনে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ তাদের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।