শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইসলাম জ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দেয়

মুহম্মদ জিয়াউদ্দিন

জ্ঞানচর্চা মানুষকে আলোর পথে যেতে উৎসাহিত করে। অপজ্ঞান ঠিক বিপরীত পরিণাম নিশ্চিত করে। যে কারণে জ্ঞানের অপচর্চা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। ইসলামে জ্ঞানীদের প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যারা জ্ঞানী তারা যাতে তাদের জ্ঞানের সদ্ব্যবহার করেন সে ব্যাপারেও তাগিদ দেওয়া হয়েছে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে। আলেমদের নৈতিক বিচ্যুতির ব্যাপারেও একাধিক হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। কারণ তাদের নৈতিক অধঃপতন সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও রক্তক্ষয়ী বিরোধের জন্ম দিতে পারে। কেড়ে নিতে পারে মানুষের শান্তি। সামাজিক ঐক্য দুর্বল করতে পারে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভ্রষ্টতা থেকে সুরক্ষার জন্য আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসুলের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। পক্ষান্তরে শেষ জমানায় ভ্রান্তদলের কার্যক্রম বোঝাতে গিয়ে ইরশাদ করেছেন, ‘আখেরি জমানায় অনেক দাজ্জাল ও চরম মিথ্যুক লোকের আবির্ভাব হবে। তারা তোমাদের কাছে এমন এমন হাদিস পেশ করবে, যা তোমরাও শোননি। তোমাদের বাপ-দাদারাও শোনেনি। সাবধান! তোমরা নিজেদের তাদের থেকে বাঁচিয়ে চলবে। যেন তারা তোমাদের বিভ্রান্ত করতে না পারে এবং ফেতনায় ফেলতে না পারে।’ মুসলিম। ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে (তিনটি বিষয়ে) সবচেয়ে বেশি শঙ্কিত : আলেম বা যাদের মাঝে কোরআন ও হাদিসের প্রচুর জ্ঞান রয়েছে তাদের নৈতিক অধঃপতন, মুসলমান পরিচয়ধারী কপট-ভ-দের কোরআনের বিষয় নিয়ে বিতর্কে জড়িত হওয়া এবং পার্থিব কামনা-বাসনা, যা তোমাদেরও রক্তক্ষয়ী বিরোধের উৎসাহ জোগায়।’ তাবারানি। কোরআন আল্লাহর বাণী। আল্লাহ এমন এক সত্তা যিনি সব ধরনের ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে। কোরআনের প্রতিটি বিষয় যেহেতু নিশ্চিতভাবে সত্য সেহেতু তা নিয়ে কোনো বিতর্কের সুযোগ নেই। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে আবু দাউদে ও ইবনে হেব্বানে বর্ণিত আছে, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া কুফরি।’ ইসলাম জ্ঞানচর্চাকে উৎসাহিত করেছে। জ্ঞানার্জনের জন্য মুমিনদের মধ্যে অনুসন্ধিৎসু মনোভাব থাকবে এমনটিও কাক্সিক্ষত। তবে যারা না জেনে না বুঝে অযথা কোনো বিষয়ে মতপ্রকাশ করে তাদের নিরুৎসাহ করা হয়েছে। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অজ্ঞাত বিষয় নিয়ে যে তর্কে লিপ্ত হয়, সে তর্কে ক্ষান্ত না দেওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তার প্রতি নাখোশ থাকেন।’ আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

সর্বশেষ খবর