শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩ আপডেট:

মহানায়কের জন্মদিন আজ

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

তোফায়েল আহমেদ
প্রিন্ট ভার্সন
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার নিভৃত পল্লীতে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন মাতৃক্রোড়ে যে শিশু প্রথম চোখ মেলেছিল, পরবর্তীকালে সেই শিশুর পরিচিতি দেশের সীমানা পেরিয়ে পরিব্যাপ্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। মা-বাবার আদরের ‘খোকা’, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের সুপ্রিয় ‘মুজিবভাই’, সমসাময়িকদের প্রিয় ‘শেখ সাহেব’ থেকে মুক্তিকামী বাঙালির ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে অর্জন করেন ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি। শেষত কায়েমি স্বার্থবাদীদের প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে হয়ে ওঠেন জাতির অবিসংবাদিত নেতা- ‘জাতির পিতা’, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’। বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে তাঁর নাম একাকার হয়েছে। এ তো শুধু একটি নাম নয়, বাঙালির জাতীয় মুক্তির ইতিহাস। যেজন্য বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। ১৭ মার্চ আমাদের জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন। দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে প্রতি বছর পালিত হয়ে থাকে। জাতির জনকের শুভ জন্মদিনে সমগ্র জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে। ইতোমধ্যে জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ ‘মুজিববর্ষ’ সগৌরবে পালিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের আলোয় জাতীয় দিগন্ত আজ উদ্ভাসিত।

বঙ্গবন্ধু জীবনব্যাপী একটিই সাধনা করেছেন, বাঙালির মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। ধাপে ধাপে প্রতিটি সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৪৮ থেকে ’৫২ অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য আন্দোলন, ’৫০ থেকে ’৫৪ জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ, ’৫৪ থেকে ’৫৬ সাংবিধানিক স্বায়ত্তশাসন, ’৬৪-তে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িকতা, ’৬৬-তে জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার অর্থাৎ স্বাধিকার তথা ছয় দফা, ’৬৯-এর গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মৃত্যুকূপ থেকে মুক্তমানব হয়ে বেরিয়ে এসে সর্বজনীন ভোটাধিকারের দাবি এবং সংখ্যাগুরুর অধিকার আদায়, ’৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ভূমিধস বিজয় অর্জন ও পরিশেষে ’৭১-এ স্বাধীনতার ডাক দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক এ পর্বগুলো সংঘটনে তাঁকে জীবনের ১৩টি বছর কারান্তরালে কাটাতে হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিকামী মানুষের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার একটি উক্তি এ ক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন, It is said that no one truly knows a nation until one has been inside its jails. অর্থাৎ ‘বলা হয়ে থাকে, সত্যিকার অর্থে কেউ একটি জাতিকে জানতে পারে না যতক্ষণ না কেউ একজন এর কারাগারে বন্দি থাকে।’ ২০১২ সালে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য সরকারি সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা যাই এবং রোবেন আইল্যান্ডে নেলসন ম্যান্ডেলার কারাকক্ষ পরিদর্শন করি। এখানেই আমার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকেও মিয়ানওয়ালি কারাগারে এ রকম একটি নির্জন কক্ষে বন্দি রাখা হয়েছিল। এ বন্দিশালাতেই নেলসন ম্যান্ডেলা তাঁর দীর্ঘ ২৭ বছর কারাজীবনের ১৮ বছর বন্দি ছিলেন। স্বচক্ষে দেখেছি বন্দিশালার নির্জন সেলটি। যেখানে সংরক্ষিত রয়েছে কারাবন্দি ম্যান্ডেলার বিছানার জন্য একটি ও গায়ে দেওয়ার জন্য আরেকটি কম্বল, একটি প্লেট, গ্লাস ও জগ। ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থটি পাঠ করে জেনেছি কারারুদ্ধ অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সম্বল ছিল একটি থালা, বাটি, গ্লাস আর কম্বল। প্রকৃতপক্ষে ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থটির শিরোনাম তিনি দিয়েছিলেন ‘জেলখানার সম্বল থালা-বাটি কম্বল’। এখানে গিয়েই বারবার আমাদের কেন্দ্রীয় কারাগার এবং পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারের কথা ভেবেছি; যে কারাগারে বঙ্গবন্ধু দীর্ঘকাল বন্দিজীবন অতিবাহিত করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী হিসেবে লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলনে গিয়ে মিয়ানওয়ালি কারাগারের প্রিজন গভর্নর (জেল সুপার) হাবিব আলীর কাছ থেকে বর্ণনা শুনেছি, কারাকক্ষের সামনে কবর খুঁড়ে বঙ্গবন্ধুকে প্রধানমন্ত্রী অথবা কবর বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কবরকেই বেছে নিয়ে বলেছিলেন, ‘যে বাংলার আলো-বাতাসে আমি বর্ধিত হয়েছি, মৃত্যুর পর এই কবরে না, আমার লাশ প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিও।’ জাতির পিতা সাড়ে নয় মাস পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারের নির্জন সেলে বন্দি ছিলেন। মিয়ানওয়ালি কারাগার ভিনদেশে হওয়ায় আমরা তা সংরক্ষণ করতে পারিনি। তবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের যে কক্ষে তিনি বন্দি ছিলেন সেসব সংরক্ষণ করা হয়েছে। আগরতলা মামলায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের যেখানে তিনি বন্দি ছিলেন, সেটিও জাদুঘর করা হয়েছে। মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে আত্মোৎসর্গকারী নেতৃত্বের রয়েছে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত আদর্শিক মিল। যেমন ’৭১-এর ৪ মার্চ বাঙালির সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে জাতির জনক বলেছিলেন, ‘চরম ত্যাগ স্বীকার করা ছাড়া কোনো দিন কোনো জাতির মুক্তি আসে নাই।’ তদ্রুপ দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘জনগণের মুক্তির জন্য অবশ্যই সবকিছু ত্যাগের জন্য প্রকৃত নেতাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু সব সময় বলতেন, ‘মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে। যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত।’ ‘আমার সবচেয়ে বড় শক্তি দেশের মানুষকে ভালোবাসি, সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তাদেরকে খুউব বেশি ভালোবাসি।’ বঙ্গবন্ধু সব সময় ছোটকে বড় করে তুলতেন। যেসব জায়গায় সফর করতেন, বক্তৃতায় সেখানকার নেতা-কর্মীদের বড় করে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকে থানার, থানা আওয়ামী লীগের নেতাকে জেলার এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকে জাতীয় নেতায় উন্নীত করে তিনি জাতির পিতা হয়েছেন। ফলত, সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজও বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করেই টিকে আছে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন হৃদয়বান এক মহান নেতা। কারও দুঃখ তিনি সহ্য করতে পারতেন না। পরকে সহজেই আপন করে নিতেন। যারা বিরোধী ছিলেন তাদের কাছে টেনে নিতেন। তিনি যখন বলতেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না’, মানুষ তা-ই বিশ্বাস করত। তিনি ক্ষমতার জন্য, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করেননি। প্রিয় মাতৃভূমিকে শোষণ-বঞ্চনার নাগপাশ থেকে রক্ষা করে বাঙালিরা যাতে বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা হতে পারে সেজন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে রাজনীতি করেছেন। ’৬৭-এর ১৭ মার্চ নিজের জন্মদিনে লিখেছেন, “আজ আমার ৪৭তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনে ১৯২০ সালে পূর্ববাংলার এক ছোট্ট পল্লীতে জন্মগ্রহণ করি। আমার জন্মবার্ষিকী আমি কোনো দিন নিজে পালন করি নাই- বেশি হলে আমার স্ত্রী এই দিনটাতে আমাকে ছোট্ট একটি উপহার দিয়ে থাকত। এই দিনটিতে আমি চেষ্টা করতাম বাড়িতে থাকতে। খবরের কাগজে দেখলাম ঢাকা সিটি আওয়ামী লীগ আমার জন্মবার্ষিকী পালন করছে। বোধ হয়, আমি জেলে বন্দী আছি বলেই। ‘আমি একজন মানুষ, আর আমার আবার জন্ম দিবস’।” (কারাগারের রোজনামচা, পৃষ্ঠা-২০৯) মনে পড়ছে ’৭১-এর রক্তঝরা মার্চের ১৭ তারিখের কথা। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ৫২তম জন্মদিন ছিল। দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন চলছে। ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা শেষে তখনকার প্রেসিডেন্ট ভবন অর্থাৎ পুরনো গণভবন সুগন্ধা থেকে দুপুরে যখন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে ফিরে এলেন তখন বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনাকালে একজন সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেন, ‘৫২তম জন্মদিনে আপনার সবচাইতে বড় ও পবিত্র কামনা কী?’ উত্তরে স্বভাবসুলভ কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’ এরপর সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনকালে বেদনার্ত স্বরে বলেছিলেন, ‘আমি জন্মদিন পালন করি না, আমার জন্মদিনে মোমের বাতি জ্বালি না, কেকও কাটি না। এ দেশে মানুষের নিরাপত্তা নাই। আপনারা আমাদের জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে কোনো মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে। আমি জনগণেরই একজন, আমার জন্ম দিনই কি, আর মৃত্যু দিনই কি? আমার জনগণের জন্য আমার জীবন ও মৃত্যু। আমি তো আমার জীবন জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছি।’ জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে আসা জনসাধারণকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা থেকে আবৃত্তি করে বলতেন, ‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক।’

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই বঙ্গবন্ধু লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। বারবার ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছেন। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল সময়োপযোগী। সেই কবে ’৬৬-তে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা...’ গেয়ে হোটেল ইডেনে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেছিলেন। সেই সম্মেলনে দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ২০ মার্চ পল্টন ময়দানের বক্তৃতায় বলেছিলেন ‘ছয় দফা কর্মসূচি নিয়ে অনেকের কাছে গিয়েছি, কেউ আমাকে সমর্থন করে নাই।’ কবিগুরুর গান থেকে উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে...।’ আরও বলেছিলেন, ‘আমার দলের নেতা-কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তবে আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছবই।’ বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেওয়ার সমস্ত ষড়যন্ত্র আইয়ুব খান গ্রহণ করেছিল। আগরতলা মামলার সরকারি নাম ছিল ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’ মামলা। স্বৈরশাসক তাঁকে প্রধান আসামি করে ফাঁসিকাষ্ঠে দাঁড় করিয়েছিল। কিন্তু মাথা নত করেননি। এ দেশের সংগ্রামী ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছিল। সেই গণ আন্দোলন প্রবল গণ অভ্যুত্থানে রূপান্তরিত হয়। ফাঁসির মঞ্চ থেকে মুক্ত করে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞ চিত্তে রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) গণসংবর্ধনায় জাতির পিতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থেই বাঙালির বন্ধু তথা ‘বঙ্গবন্ধু’। ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আই ফিল ফর মাই কান্ট্রি অ্যান্ড মাই পিপল, অ্যান্ড দ্যান মাই ফ্যামিলি।’ সবকিছুর ঊর্ধ্বে জাতির পিতার কাছে ছিল বাঙালি ও বাংলাদেশ। তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা। যেখানেই মুক্তিসংগ্রাম সেখানেই তিনি সমর্থন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে তুলনা করা যায় ভারতের মহাত্মা গান্ধী, আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, ভিয়েতনামের হো চি মিন, তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক, যুগোস্লাভিয়ার মার্শাল টিটোর সঙ্গে। তাঁদের সমকক্ষ নেতা ছিলেন তিনি। পৃথিবীতে অনেক দেশ স্বাধীন হয়েছে আলোচনার টেবিলে বসে। বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে। নিজ জীবনকে তিনি বাঙালি জাতির জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা যেমন বলেছিলেন, ‘যে মরতে চায়, তাঁকে কেউ মারতে পারে না।’ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘যে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত, তাঁর মৃত্যু নাই।’ বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের একজন মহান নেতা, বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তিনি চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন। একবার যে সিদ্ধান্ত নিতেন, মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও আপোস করতেন না।

‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা ছিল বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের লালিত স্বপ্ন। ’৬৯-এর ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে স্বকণ্ঠে স্লোগান দেন, ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যা কিছু সংঘটিত হয়েছে সবকিছু বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে হয়েছে। নেলসন ম্যান্ডেলা ’৫২ সালে বলেছিলেন, ‘একদিন আমি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হব।’ আর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘একদিন আমি এই দেশকে স্বাধীন করব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রিত্ব আমার কাছে তুচ্ছ।’ সেই লক্ষ্যে উপনীত হতে ধাপে ধাপে তাঁর আরাধ্য কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ’৭১-এর ৩ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে ’৭০-এর নির্বাচনে নবনির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। শপথ গ্রহণ করাবেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। সেদিন বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘ছয় দফা ও ১১ দফা আজ আমার নয়, আমার দলেরও নয়। এ-আজ বাংলার জনগণের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। কেউ যদি এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে বাংলার মানুষ তাঁকে জ্যান্ত কবর দেবে। এমনকি আমি যদি করি আমাকেও।’ জনগণের জন্যই ছিল তাঁর রাজনীতি ও কর্মসূচি। বক্তৃতায় সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমাকে মোনেম খান কাবু করতে পারেনি, এমনকি আইয়ুব খানও পারেনি; কিন্তু আমাকে দুর্বল করে দিয়েছে আপনাদের এই অকুণ্ঠ ভালোবাসা। আপনারা দোয়া করবেন যেন আপনাদের এই ভালোবাসার মর্যাদা দিতে পারি।’ বাংলার মানুষের প্রতি ভালোবাসার মর্যাদা দিতে তিনি একাই রক্ত দেননি, সপরিবারে রক্ত দিয়ে সে ঋণ পরিশোধ করে গেছেন।

মনে পড়ে, ’৭১-এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের কথা; যে ভাষণ আজ ‘বিশ্বঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল’ হিসেবে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে আসীন। সেদিন তিনি একটি ভাষণের মধ্য দিয়ে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত করেছেন। সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে জাতীয় মুক্তির মোহনায় দাঁড় করিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই ৭ মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের প্রেরণার উৎস। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রারম্ভে বলেছিলেন, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’ তাঁর এই শেষ বার্তা স্বাধীনতার ঘোষণা হৃদয়ে ধারণ করে হাতিয়ার তুলে নিয়ে নয় মাস যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর দেশকে হানাদারমুক্ত করেও আমরা স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করতে পারিনি। ’৭২-এর ১০ জানুয়ারি যেদিন তিনি স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন, সেদিন মনে হয়েছে আজ আমরা প্রকৃতই স্বাধীন। এরপর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ১০ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’-এর প্রথম অধিবেশনে দেশের জন্য সংবিধান প্রণয়নের ঘোষণা দেন। মাত্র সাত মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা অর্জন করি সদ্যস্বাধীন দেশের উপযোগী বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিদেশ সফরে গিয়ে তাঁর প্রতি বিদেশি রাষ্ট্রনায়কদের শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসা স্বচক্ষে দেখেছি। বিশ্বের রাষ্ট্রনায়কগণ বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী, সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রপ্রধান নিকোলাই পোদগর্নি, প্রধানমন্ত্রী আলেক্সেই কোসিগিন, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক লিওনিদ ইলিচ ব্রেজনেভ, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, যুগোসøাভিয়ার রাষ্ট্রনায়ক মার্শাল জোসেফ ব্রোজ টিটোসহ বিশ্ববরেণ্য নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রকাশ করেছেন। আলজেরিয়ায় জোট-নিরপেক্ষ সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’ সেই বক্তৃতা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। জাতিসংঘে প্রিয় মাতৃভাষা বাংলায় বক্তৃতা করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। বক্তৃতায় বলেছেন, ‘মানব জাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার।’ যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে যান তখন দেশটির শীর্ষ চার নেতা পোদগর্নি, কোসিগিন, ব্রেজনেভ ও আঁন্দ্রে গ্রোমিকো তাঁকে অভ্যর্থনার জন্য ক্রেমলিনে সমবেত হন। ব্রেজনেভ বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘আমি ধন্য। আজ আপনার মতো মহান নেতার সান্নিধ্য লাভ করেছি।’ জাপান সফরকালে সম্রাট হিরোহিতো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে করমর্দন করে বলেছিলেন, ‘সত্যিই আপনি ইতিহাসের একজন মহান নেতা।’ তৎকালীন বিশ্বে মার্শাল টিটো অন্যতম রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। কাছে থেকে দেখেছি বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। ’৭৩-এ কমনওয়েলথ সম্মেলনে ৩২টি দেশের রাষ্ট্রনায়ক ও সরকারপ্রধান এসেছিলেন। আফ্রিকা মহাদেশের নেতৃবৃন্দ কেনিয়ার জুমো কেনিয়াত্তা, জাম্বিয়ার কেনেথ কাউন্ডা, তানজানিয়ার জুলিয়াস নায়ারে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুইটলাম, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী টুংকু আবদুর রাজ্জাক, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট শ্রীমাভো বন্দরনায়েক, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইদি আমিন, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়াকুব গোয়েনসহ বিশ্বের খ্যাতিমান নেতৃবৃন্দ অনেকেই কমনওয়েলথ সম্মেলনে এসেছিলেন। কিন্তু আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের আকর্ষণে সাংবাদিকরা তাঁকে ঘিরে ধরত। তিনি অন্তরে যা বিশ্বাস করতেন দেশের মানুষকে এবং বিশ্ববাসীকে তা-ই বলতেন। যেখানেই গিয়েছেন মানুষ তাঁকে আপন করে নিয়েছে। দীর্ঘ কারাবাসের পর পাকিস্তানের জিন্দানখানা থেকে মুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছার সংবাদ শুনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ তৎক্ষণাৎ অবকাশ কেন্দ্র থেকে ফিরে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানিয়ে আলিঙ্গন করে বলেছিলেন, ‘আপনি একজন মহান নেতা এবং আমি কখনো ভাবিনি আপনার সঙ্গে দেখা হবে।’ এই ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।

আজ বিশেষভাবে ’৭১-এর ২৫ মার্চের থমথমে দিনটির কথা মনে পড়ে। সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বের হই, কাজ শেষে পুনরায় নেতার সঙ্গে দেখা করি। বিদায় নেওয়ার সময় বলি, বঙ্গবন্ধু, আমার তো মনে হয় তারা অবশ্যই আপনাকে গ্রেফতার করবে। দৃঢ়প্রত্যয়ী বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘করুক না। তাতে কী? ওরা আমাকে আগেও গ্রেফতার করেছে এবং তাতে ওদের কোনো লাভ হয় নাই। ওরা ফের আমাকে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু এ থেকে ওরা কী সুবিধা পাবে আমি জানি না। ওরা যদি আমাকে মেরেও ফেলে তাতেও ওদের কোনো লাভ হবে না। আমার মৃত্যুর বদলা নিতে বাংলার মাটিতে হাজারো শেখ মুজিবের জন্ম হবে। ওদের দিন শেষ এটা ওরাও জানে। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের পর আজ এই সত্যই আমার হৃদয়টাকে অনাবিল আনন্দে ভরে দিচ্ছে। ওরা যদি আমাকে মেরে ফেলে এবং তুমি আমার লাশ দেখার সুযোগ পাও তখন দেখবে, আমি কেমন সুখে হাসছি।’ গণহত্যা শুরুর প্রাক্কালে সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা উদ্ধৃত করে বিষাদাচ্ছন্ন স্বরে অথচ অটল মনোবলে বলেছিলেন, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে এই বাংলায়...।’

’৭২-এর ১০ জানুয়ারি স্বদেশে ফিরে রেসকোর্স ময়দানের সর্বকালের সর্ববৃহৎ জনসমুদ্রে হৃদয়ের অর্ঘ্য ঢেলে আবেগমথিত ভাষায় বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাবার সময় বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ স্থির-প্রতিজ্ঞ থেকে জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘ভাইয়েরা, তোমাদেরকে একদিন বলেছিলাম, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। আজকে আমি বলি, আজকে আমাদের উন্নয়নের জন্য আমাদের ঘরে ঘরে কাজ করে যেতে হবে।’ সেদিন বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মীয় ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে- গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র।’ বঙ্গবন্ধু জীবনের প্রতিটি ধাপেই বাঙালির সার্বিক মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। যে স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, যে বাংলার জন্য তিনি যৌবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, ফাঁসির মঞ্চে গেয়েছেন বাঙালির জয়গান, সেই বাংলা ও বাঙালির জন্য তাঁর ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। সমুদ্র বা মহাসমুদ্রের গভীরতা পরিমাপ করা সম্ভব; কিন্তু বাংলা ও বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের যে দরদ, যে ভালোবাসা তার গভীরতা অপরিমেয়।

 

লেখক : আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা, সংসদ সদস্য, সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

ইমেইল : tofailahmed69@gmail.com

এই বিভাগের আরও খবর
বাজেটের চ্যালেঞ্জ
বাজেটের চ্যালেঞ্জ
পবিত্র ঈদুল আজহা
পবিত্র ঈদুল আজহা
হজ ও ঈদুল আজহা
হজ ও ঈদুল আজহা
পরিবেশ ও কোরবানি
পরিবেশ ও কোরবানি
নির্বাচন দিতে টালবাহানা কেন?
নির্বাচন দিতে টালবাহানা কেন?
বানরের পিঠা ভাগের পর নির্বাচন
বানরের পিঠা ভাগের পর নির্বাচন
রাজস্ব বাড়ান
রাজস্ব বাড়ান
প্রাথমিকে স্কুল ফিডিং
প্রাথমিকে স্কুল ফিডিং
জিয়া : অনন্য রাষ্ট্রনায়ক
জিয়া : অনন্য রাষ্ট্রনায়ক
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয় মানুষের কামাই
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয় মানুষের কামাই
৪০০ হাজিকে পুড়িয়ে হত্যার সেই বর্বরতা
৪০০ হাজিকে পুড়িয়ে হত্যার সেই বর্বরতা
গণহত্যার বিচার
গণহত্যার বিচার
সর্বশেষ খবর
‘ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেইমানি করে রাজনীতি করার সুযোগ নেই’
‘ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেইমানি করে রাজনীতি করার সুযোগ নেই’

এই মাত্র | রাজনীতি

ক্লাসেন জানালেন অবসরের নেপথ্য কারণ
ক্লাসেন জানালেন অবসরের নেপথ্য কারণ

৫ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কাবরেরা
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কাবরেরা

১৭ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

আরও ৫ জনের করোনা শনাক্ত
আরও ৫ জনের করোনা শনাক্ত

২২ মিনিট আগে | হেলথ কর্নার

মেট্রোরেল ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা
মেট্রোরেল ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা

৪৮ মিনিট আগে | জাতীয়

২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় নারী শিশুসহ ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার
২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় নারী শিশুসহ ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার

৫৫ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

সিকান্দার রাজার অভিযোগের পর বরখাস্ত হলেন কোচ
সিকান্দার রাজার অভিযোগের পর বরখাস্ত হলেন কোচ

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

রাজনীতিতে কোন ধরনের পেশি শক্তির ব্যবহার থাকবে না : আখতার
রাজনীতিতে কোন ধরনের পেশি শক্তির ব্যবহার থাকবে না : আখতার

১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার কারণ জানালেন ক্লাসেন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার কারণ জানালেন ক্লাসেন

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

গভীর রাতে টর্চ জ্বালিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০
গভীর রাতে টর্চ জ্বালিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

চামড়া শিল্পে নৈরাজ্য সিন্ডিকেট ভাঙতে কাজ করছে সরকার
চামড়া শিল্পে নৈরাজ্য সিন্ডিকেট ভাঙতে কাজ করছে সরকার

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বিএনপি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় : সালাহউদ্দিন
বিএনপি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় : সালাহউদ্দিন

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

কক্সবাজার সৈকতে ১৭ ঘণ্টায় বাবা-ছেলেসহ ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজার সৈকতে ১৭ ঘণ্টায় বাবা-ছেলেসহ ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ভাঙ্গায় পুকুরে মিলল নিখোঁজ যুবকের মরদেহ
ভাঙ্গায় পুকুরে মিলল নিখোঁজ যুবকের মরদেহ

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

লালমনিরহাটে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু, নিখোঁজের ৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার
লালমনিরহাটে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু, নিখোঁজের ৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

পশু কোরবানি দিতে গিয়ে তিন দিনে আহত ৯৪২
পশু কোরবানি দিতে গিয়ে তিন দিনে আহত ৯৪২

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

গাজীপুরে আগুনে পুড়লো ৬ ঝুট গুদাম
গাজীপুরে আগুনে পুড়লো ৬ ঝুট গুদাম

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

মোংলায় পৌর বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
মোংলায় পৌর বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ঈদের তিন দিনে ডিএনসিসির ২০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ: প্রশাসক এজাজ
ঈদের তিন দিনে ডিএনসিসির ২০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ: প্রশাসক এজাজ

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

সান ফ্রান্সিসকোতে সহিংস বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৬০
সান ফ্রান্সিসকোতে সহিংস বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৬০

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

‘সংস্কারের নামে নির্বাচন দীর্ঘায়িত করার কোনও সুযোগ নেই’
‘সংস্কারের নামে নির্বাচন দীর্ঘায়িত করার কোনও সুযোগ নেই’

২ ঘণ্টা আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কক্সবাজার সৈকতে পিতাপুত্রের মৃত্যু
কক্সবাজার সৈকতে পিতাপুত্রের মৃত্যু

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১০ মিনিট হলেও খেলতে চান জামাল
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১০ মিনিট হলেও খেলতে চান জামাল

৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা
ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা

৩ ঘণ্টা আগে | পর্যটন

ভোলায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘের ফল উৎসব
ভোলায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘের ফল উৎসব

৩ ঘণ্টা আগে | বসুন্ধরা শুভসংঘ

গাজীপুরে আগুনে পুড়লো ৬ ঝুট গুদাম
গাজীপুরে আগুনে পুড়লো ৬ ঝুট গুদাম

৩ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

রডনি কিং থেকে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার: লস অ্যাঞ্জেলেস যেন প্রতিবাদের স্বর্গভূমি
রডনি কিং থেকে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার: লস অ্যাঞ্জেলেস যেন প্রতিবাদের স্বর্গভূমি

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে চাই: সারজিস আলম
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে চাই: সারজিস আলম

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সর্বাধিক পঠিত
দেশে ফিরেছেন আব্দুল হামিদ
দেশে ফিরেছেন আব্দুল হামিদ

১৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গাজাগামী ‘ম্যাডলিন’ জাহাজ দখলে নিল ইসরায়েল
গাজাগামী ‘ম্যাডলিন’ জাহাজ দখলে নিল ইসরায়েল

১২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কানাডায় নৌকাডুবিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি পাইলট ও ব্যবসায়ীর
কানাডায় নৌকাডুবিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি পাইলট ও ব্যবসায়ীর

৮ ঘণ্টা আগে | পরবাস

আবদুল হামিদ প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আবদুল হামিদ প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

১১ জুন মুক্তি পেতে পারেন ইমরান খান
১১ জুন মুক্তি পেতে পারেন ইমরান খান

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

এপ্রিলে নির্বাচনের যে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব
এপ্রিলে নির্বাচনের যে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইসরায়েলের সংবেদনশীল গোপন নথি প্রকাশ করা হবে: ইরান
ইসরায়েলের সংবেদনশীল গোপন নথি প্রকাশ করা হবে: ইরান

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ থামাতে চায় ইসরায়েল
গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ থামাতে চায় ইসরায়েল

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কাতার জাতীয় ফুটবল দলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাবিল
কাতার জাতীয় ফুটবল দলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাবিল

২৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই দিতে হবে : নবীউল্লাহ নবী
নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই দিতে হবে : নবীউল্লাহ নবী

১৭ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

রণক্ষেত্র লস অ্যাঞ্জেলেস, দফায় দফায় সংঘর্ষে বাড়ছে উত্তেজনা
রণক্ষেত্র লস অ্যাঞ্জেলেস, দফায় দফায় সংঘর্ষে বাড়ছে উত্তেজনা

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ড. ইউনূস ছাগল দিয়ে হালচাষের চেষ্টা করছেন : কনক সরওয়ার
ড. ইউনূস ছাগল দিয়ে হালচাষের চেষ্টা করছেন : কনক সরওয়ার

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন আজ
প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন আজ

১৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

অভিবাসনবিরোধী অভিযানে টালমাটাল লস অ্যাঞ্জেলেস
অভিবাসনবিরোধী অভিযানে টালমাটাল লস অ্যাঞ্জেলেস

১২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির
দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা
সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা

২১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

ড. ইউনূস-নরেন্দ্র মোদির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
ড. ইউনূস-নরেন্দ্র মোদির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

১৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের নিরাপত্তায় থাকবে সোয়াট
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের নিরাপত্তায় থাকবে সোয়াট

২২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে কী হচ্ছে
থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে কী হচ্ছে

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে আন্তরিক: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে আন্তরিক: প্রধান উপদেষ্টা

২২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে সমুদ্র সৈকতে নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে সমুদ্র সৈকতে নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

১১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

কক্সবাজার সৈকতে পিতাপুত্রের মৃত্যু
কক্সবাজার সৈকতে পিতাপুত্রের মৃত্যু

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

দেশের মানুষ আর রূপকথা চায় না, চায় প্রকৃত গণতন্ত্র: জিল্লুর রহমান
দেশের মানুষ আর রূপকথা চায় না, চায় প্রকৃত গণতন্ত্র: জিল্লুর রহমান

২১ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল ভারতের মণিপুর
দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল ভারতের মণিপুর

৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

এপ্রিলে নির্বাচন মাথায় রেখে সময়মতো রোডম্যাপ দেবে ইসি: আসিফ মাহমুদ
এপ্রিলে নির্বাচন মাথায় রেখে সময়মতো রোডম্যাপ দেবে ইসি: আসিফ মাহমুদ

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

জামায়াত নেতার মৃত্যু রাজনৈতিকভাবে টেনে না নেওয়ার অনুরোধ বিএনপির
জামায়াত নেতার মৃত্যু রাজনৈতিকভাবে টেনে না নেওয়ার অনুরোধ বিএনপির

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

উয়েফা নেশন্স লিগে জার্মানিকে হারিয়ে তৃতীয় ফ্রান্স
উয়েফা নেশন্স লিগে জার্মানিকে হারিয়ে তৃতীয় ফ্রান্স

২০ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

কুসিকের সহকারী প্রকৌশলী তোফাজ্জল গ্রেফতার
কুসিকের সহকারী প্রকৌশলী তোফাজ্জল গ্রেফতার

১০ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

আটক ‘ম্যাডলিন’ থেকে যে বার্তা দিলেন গ্রেটা থুনবার্গ
আটক ‘ম্যাডলিন’ থেকে যে বার্তা দিলেন গ্রেটা থুনবার্গ

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কোরবানি দিতে গিয়ে ৩ দিনে ৯৪২ জন পঙ্গু হাসপাতালে, ভর্তি ৩২৪
কোরবানি দিতে গিয়ে ৩ দিনে ৯৪২ জন পঙ্গু হাসপাতালে, ভর্তি ৩২৪

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

প্রিন্ট সর্বাধিক