বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার

আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি

বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈধ অস্ত্রের অধিকারীরা সামাজিক ও আর্থিকভাবে প্রভাবশালী। তাদের অধিকাংশই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের কেউ বৈধ অস্ত্রধারী হলে তাদের বিষয়ে অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পাশ কাটিয়ে যাওয়ার মানসিকতায় ভোগে। টেন্ডারবাজি, জমি দখল ইত্যাদি অপরাধে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার অহরহই ঘটছে। অভিযোগ রয়েছে, অপরাধ কর্মকান্ডের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে বৈধ অস্ত্রের ব্যবসা। বৈধতার লেবাসে কিছু অস্ত্র ব্যবসায়ী রীতিমতো আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছেন। তাদের সরবরাহ করা অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদগুলো চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসীদের কাছে। তবে অবাক করা বিষয় হলো, এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়ার পর এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি সংশ্লিষ্টদের অস্ত্রের দোকান। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি না থাকার কারণেই এমনটা ঘটছে। অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিষয়ে যাদের নিয়মিতভাবে মনিটরিং করার কথা তাদের দায়িত্বহীনতার সুযোগে দিনের পর দিন এমনটা চলে আসছে। ‘আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা, ২০১৬’ আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কারা কীভাবে অস্ত্রের ব্যবসা করবেন। অস্ত্র আইনের ৩৪ নম্বর ধারার ক উপধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি ছয় মাস পর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত অস্ত্র, গোলাবারুদের মজুদ ও বেচাকেনার হিসাব সরেজমিন পরিদর্শন করবেন এবং পরিদর্শন প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। তবে আইনের এসব ধারা প্রতিপালন কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। অস্ত্র বৈধ হলেও তার অপব্যবহার কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই।  বিদেশ থেকে বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীরা যেসব অস্ত্র আমদানি করে তাতেও রয়েছে ভয়ানক কারচুপি। আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্সধারীদের পাশাপাশি লাইসেন্সধারী অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ওপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থাকা দরকার। এ ক্ষেত্রে কোনো অন্যথা হওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর