চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হওয়া সত্ত্বেও দেশজুড়ে চলছে লোডশেডিংয়ের উৎপাত। রাজধানীতে এর মাত্রা কম হলেও গ্রামের অবস্থা এই আসে এই যায়। অথচ গ্রামে বিদ্যুতের ব্যবহার খুবই কম। ভয়াবহ গরমে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের চাহিদা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। গত ঈদের আগে সেচ মৌসুম ও রমজান মাসকে গুরুত্ব দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। কিন্তু এর পরও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকদের পোহাতে হয় চরম লোডশেডিং ভোগান্তি। ঈদের ছুটিতে ভোগান্তি সামান্য কমলেও ছুটি শেষ হতেই আবারও ভয়াবহ রূপ নেয় লোডশেডিং। একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ, অন্যদিকে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের নাকাল দশা। দিনে-রাতে গ্রামাঞ্চলে এলাকাভেদে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। জ্বালানি সংকটের কারণে দেশের বড় দুই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরে সংকট তৈরি হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুই সপ্তাহের বেশি উৎপাদন বন্ধ, অন্যদিকে যান্ত্রিক ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুরনো কেন্দ্রগুলোতে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভাগও শিগগিরই লোডশেডিং ঘিরে কোনো স্বস্তির খবর দিতে পারছে না। এ অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। থমকে যাচ্ছে কল-কারখানার চাকা। গরম আর লোডশেডিংয়ে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। সরকার চলতি মে মাসে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু এর পরও ১০ মে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এদিন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। আর এদিন ৮৩৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থেকে যায়। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। কিন্তু জ্বালানির অভাবে এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আশা করব চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি এর ব্যবহারে সবাই যাতে সাশ্রয়ী হয় সে উদ্যোগও নেওয়া জরুরি।