গাজীপুরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা গৃহিণী জায়েদা খাতুন ১৬ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান। দেশের জাতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও তাতে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো সাড়া পড়েনি। জ্যৈষ্ঠের খরতাপে ইভিএমের ভোটে ধীরগতি সত্ত্বেও প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লার পরাজয় প্রার্থী বাছাইয়ে ক্ষমতাসীন দলের ব্যর্থতারই পরিচয়। বিজয়ী প্রার্থী জায়েদা খাতুন জয়ী হয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের জননী হিসেবে। সহানুভূতি ভোট তাকে জিতিয়ে এনেছে। শিল্পনগরী গাজীপুরের সিটি নির্বাচনে হারলেও ক্ষমতাসীনদের জন্য সান্ত্বনা এতটুকু প্রদত্ত মোট ভোটের সিংহভাগই পেয়েছেন সরকারপক্ষীয় দুই প্রার্থী। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন দেশবাসীর কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। আমরা আশা করব, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিজেদের সক্ষমতার যে প্রমাণ নির্বাচন কমিশন রেখেছে তা অনুষ্ঠেয় খুলনা, রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশালেও অনুভূত হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে তা ভূমিকা রাখবে। আমরা এ কলামে গাজীপুরের ভোটযুদ্ধ সম্পর্কে বলেছিলাম স্থানীয় সরকার হলো জনগণের সরকার। নির্বাচন হলো জনগণের উৎসব। আশা করেছিলাম, গাজীপুরের নির্বাচনে দল বা প্রার্থী নয়-সুষ্ঠু ভোটযুদ্ধের মাধ্যমে যেন গণতন্ত্রের জয় হয়। শুধু গাজীপুরের মানুষ নয়, এটি ছিল দেশবাসীর প্রত্যাশা। এ প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের ঐকান্তিকতায়। আমরা গাজীপুরের সিটি নির্বাচনে জয়ী মেয়র ও কাউন্সিলরদের অভিনন্দন জানাই। তারা ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে যত্নবান হবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।