শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ আপডেট:

প্রয়াত শফি আহমেদের পুরস্কার

অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন
প্রয়াত শফি আহমেদের পুরস্কার

৩ জুন ২০২৪, সোমবার। গ্রীষ্মের লম্বা দিনের বিকাল পেরিয়েছে, সন্ধ্যা তখনো নামেনি। নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমান হোসেন হাসিবের ফোনে জানলাম শফি আহমেদ প্রায় ৪০ মিনিট আগে ঘুমের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে। মনের পর্দায় তিন যুগের বেশি সময় ধরে চেনা শফিকে ঘিরে একের পর এক দৃশ্যাবলি ভেসে আসছিল। প্রথমে মনে পড়ল এই তো অল্পদিন আগে ১৩ মে ২০২৪, সোমবার শহীদ মিনারে কফিনে চিরনিদ্রায় শায়িত বিপ্লবী হায়দার আকবর খান রনো, আমাদের প্রিয় রনো ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছি। শোকার্ত মানুষের লাইন দীর্ঘ। প্রচণ্ড গরমে ভাবছি যদি লাইনের প্রথমদিকে কেউ একটু জায়গা দেন। মুহূর্তে পেছন থেকে কেউ একজন এসে আমার হাতটি ধরল। সাধারণ বেশভূষার শফি হাসিমুখে বলল, ‘আনোয়ার ভাই সামনে আসেন’। এখানে প্রচণ্ড গরমে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন, তাদের প্রায় সবার কাছে ৯০-এর দশকে এরশাদ সামরিক জান্তাবিরোধী প্রবল গণআন্দোলন ও অভ্যুত্থানে একেবারে সামনের কাতারের লড়াকু ছাত্রনেতা শফির সদা হাসিমাখা মুখটি তো বড় পরিচিত। ঝড়-ঝাপটা গেছে তার ওপর দিয়ে। নিদারুণ বঞ্চনা ও অপ্রাপ্তির দহন তাকে সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু তার হাসিমুখ কখনো হারিয়ে যায়নি। সেদিন শহীদ মিনারে মনে হলো তার হাসিটি বড় ম্লান। ক্লান্ত এবং কিছুটা বিধ্বস্তও মনে হয়েছিল তাকে। এ তো আমার চেনা শফি নয়। শঙ্কাও জেগেছিল মনে। সেটাই শেষ দেখা। এক মাসও পেরোল না। শুধু মদন বা নেত্রকোনা নয়, সারা দেশের লড়াই-সংগ্রামের পোড় খাওয়া মানুষের নয়নমণি শফি তার জীবন সংগ্রামের সাথী স্ত্রী, আদরের দুই পুত্র, ছটি অতি প্রিয় বোন, স্বজন, বন্ধু এবং সাধারণ মানুষের মায়া ছেড়ে চলে গেছে আরেক জগতে, যেখানে কোনো বঞ্চনা নেই, কষ্ট নেই, ক্লান্তি নেই। শফির বয়স ৬৩ হবে সামনের অক্টোবরে। এ বয়সে এমন কেন হলো? কেন এমন প্রস্থান, তা নিয়ে কিছু কথা বলব। আমাদের নেত্রকোনা জেলার মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে তাদের সাহস, এবং যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন, একরোখা-গোয়ার মনোভাব। নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাখনা গ্রামের শফি আহমেদ সেসব বিরল মানবিক বৈশিষ্ট্যের সবটাই ধারণ করেছিল। তার সংগ্রামী জীবন নিয়ে কথা বলব। তার আগে বলব সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সূচিত সামাজিক বিপ্লবে শফি আহমেদ ও তার মতো অসংখ্য তরুণদের যোগ দেওয়ার প্রেক্ষাপটটি কীভাবে তৈরি হয়েছিল।

পাকিস্তান আমলের একেবারে শুরুতে তরুণ জাতীয়তাবাদী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের (তখনো তিনি বঙ্গবন্ধু বা জাতির জনক হয়ে ওঠেননি) হাতে গড়া পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেগবান প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছিল বাংলার স্বাধীনতাকামী অংশটি। তাদের দিকনির্দেশনায় শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম স্বাধীনতার স্লোগানটিকে আন্দোলনের শীর্ষভাগে নিয়ে এসেছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুকূল ও সাহসী নেতৃত্বে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রগতিশীল এ অংশ স্বাধীনতার সঙ্গে সমাজতন্ত্রের স্বপ্নটিকেও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পরপর তারা জাতির জনকের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন করে ঔপনিবেশিক পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্থলে স্বাধীন দেশের উপযোগী একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পত্তনের আহ্বান জানিয়েছিল। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে বিপুল শক্তি জেগে উঠেছিল স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে, তাদের চালিত করে যে কোনো অসাধ্য সাধন করার ইতিহাস নির্দিষ্ট সুযোগটি পেয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

যেখানে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বহু আলোচনা ও বিতর্কের পর সংবিধানে জাতীয় চার মৌল নীতির অন্যতম সমাজতন্ত্র যুক্ত হয়েছিল, সেখানে ছাত্রলীগের স্বাধীনতা ও সমাজতন্ত্রপন্থি অংশকে পরিত্যাগ করে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে রাষ্ট্র গঠনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ছাত্রলীগের আপসকামী অংশকে বেছে নিয়েছিলেন। তারপরের ইতিহাসে দ্রুতলয়ে সমাজতন্ত্রপন্থি ছাত্রলীগ থেকে একটি বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের অভ্যুদয় রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং বিরোধী দলে মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনৈতিক দলের সহাবস্থানের একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। বাস্তবে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের এই বিভক্তি কোনো ভালো ফল বয়ে আনেনি। যাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার অধিকাংশ মানুষ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অকাতরে জীবন দিয়েছিল, সেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পারতেন জাসদকে একটি বিরোধী দল হিসেবে তার যাত্রাকে কণ্টকমুক্ত রাখতে। তা হয়নি। বিপরীতে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনী এনে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত একদলীয় কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ‘দ্বিতীয় বিপ্লবের’ মধ্য দিয়ে দেশে সমাজতন্ত্র কায়েমের লক্ষ্য তিনি ঘোষণা করেন। কিন্তু তখন তো অনেক দেরি হয়ে গেছে। ততদিনে নিজ দল আওয়ামী লীগ এবং রাষ্ট্রের শক্তিশালী অঙ্গ সেনাবাহিনী ও আমলাতন্ত্রের ভিতরে ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁদের নীলনকশা সাজিয়ে ফেলেছে। হয়তো বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম কিংবা ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদরা এই ভেবে অবাক হবেন, কেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫-এর পরিবর্তে ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে একটি বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন করেননি, যখন পরাজিত পাকিস্তানপন্থি শক্তির পক্ষে নিজেদের সংগঠিত করার কোনো সুযোগই ছিল না। বাকশাল গঠনের পর দিন ২৬ জানুয়ারি বাকশাল সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন করেন বঙ্গবন্ধু। জাসদসহ সব রাজনৈতিক দল শুধু নয়, সব পেশাজীবী সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। তার পরিণাম যে শুভ হয়নি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সাড়ে তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে জাতির জনকের জীবন দেওয়া ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি সম্পূর্ণভাবে দুই যুগের বেশি সময় তাদের দখলে চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হলো।

অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও সমাজতন্ত্রপন্থি ছাত্রলীগ এবং তাদের তাত্ত্বিক নেতা সিরাজুল আলম খান এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসা তরুণ বিপ্লবী সংগঠকেরা সদ্য স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু সরকারের বিপরীতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন না করে অপেক্ষা করতে পারতেন, সমাজতন্ত্রের আদর্শিক লড়াই চালাতে পারতেন। পারতেন যথাসম্ভব আত্মরক্ষা করে বাংলার মেহনতি মানুষ, যারা সমাজতন্ত্রের লড়াইটি চালাবেন আপসহীনভাবে তাদের মধ্যে সংগঠন গড়ে তোলার দুরূহ কাজে নিজেদের নিয়োজিত করতে। যখন জাতির জনককে হত্যার জন্য খোদ আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের ভিতরে ওত পেতে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা আঘাত হানল, তখন তা মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগ বা জাসদ উভয়েই শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হলো। একদিকে হিমালয়সম বঙ্গবন্ধুর চার পাশে এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বস্তরে জায়গা করে নেওয়া অধিকাংশ নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদ ও পদাধিকারীরা বিপদে জাতির জনককে বাঁচাতে সামান্য চেষ্টাটুকুও করেননি। অপরদিকে সারা বাংলায় বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম অনুসারী তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মী এবং নিরস্ত্র ও পরিত্যক্ত দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধারা, যারা স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনৈতিক ক্ষমতা না পেয়েও জাতির জনকের প্রতি আস্থা হারাননি, সেই প্রকৃত দেশপ্রেমিক বিপুল সাধারণ মানুষ অশ্রু ও বেদনায় দগ্ধ হয়ে অক্ষম নীরব দর্শক হিসেবে সবকিছু অবলোকন করেছে। কিন্তু কখনো তাদের হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে পরিত্যাগ করেনি।

এমন পরাজয়ের পর জাতীয় চার নেতা এবং মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতা সংগঠক ছাড়া বঙ্গবন্ধু বাকশাল সরকারের প্রায় সব মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের একই দিনে, ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ তারিখে। জাসদের ক্ষেত্রে কী হয়েছিল? বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে এবং একদলীয় জরুরি অবস্থায় চরম রাষ্ট্রীয় নিপীড়নে অকাতরে জীবন দিয়েছে জাসদের বহু নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মী। কিন্তু জাসদের রাজনৈতিক আন্দোলন কোনো যৌক্তিক ও ইতিবাচক পরিণতিতে পৌঁছার আগেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে পাকিস্তানি রাষ্ট্রটিকে অক্ষত রেখে দেওয়ার সুযোগে তার স্তরে স্তরে সংগঠিত হওয়া পরাজিত বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে রাষ্ট্রের মালিক হয়ে গেল বাকশাল গঠনের ছয় মাসের মাথায়। বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশে জাসদ উপলব্ধি করল রাজনীতির মাঠে জাসদের প্রাসঙ্গিকতা কত সীমিত হয়ে পড়েছে। তারপরও আওয়ামী লীগের মতো খুনি মোশতাক সরকারে যোগদান বা তাকে সমর্থন করার বদলে জাসদ শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। কঠিন মূল্যও দিতে হয় জাসদ ও তার গণবাহিনীকে। দলীয় রণনীতি অনুযায়ী সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার এক মরিয়া চেষ্টায় ব্রতী হয়েছিল জাসদ। কিন্তু সময় যখন এলো তখন এ দুরূহ কাজে তাদের সাংগঠনিক শক্তি যে কত অপ্রতুল ও দুর্বল, তা প্রকট হয়ে দেখা দিল। অভ্যুত্থানী সিপাহিদের সঙ্গে সংগঠিত মেহনতি মানুষের দৃঢ় বন্ধন ঘটাতে জাসদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিদারুণভাবেই ব্যর্থ হন। তার ফল হলো মারাত্মক। অভ্যুত্থান পরাজিত হলো। পরিণামে জাসদ, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের ওপর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির শাসন-নিপীড়ন দীর্ঘ ও নিরঙ্কুশ হলো। হাজার হাজার সিপাহি ও তাদের আপসহীন নেতা মুক্তিযুদ্ধের ক্রাচের কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমকে ফাঁসির মঞ্চে জীবন দিতে হয় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির প্রতিনিধিত্বকারী নেতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাতে। বাংলাদেশের কারাগারগুলো মুখ্যত জাসদের নেতা-কর্মী এবং আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাপের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মী, যারা নীতিভ্রষ্ট হননি তাদের দিয়ে ভরে ফেলা হয়।

জাসদের বিপ্লবী নেতা কর্নেল আবু তাহেরের ফাঁসির মঞ্চে বীরোচিত আত্মদান ও সব শীর্ষ নেতার দীর্ঘমেয়াদি সাজার পরও জাসদের মূল ধারা এবং বিশেষ করে তার সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো সামরিক শাসকদের সঙ্গে আপসের পথে যায়নি। জিয়াউর রহমানের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছরের শাসন এবং তাঁর উত্তরসূরি জেনারেল এরশাদের নয় বছরের রাজত্বকালে আওয়ামী লীগ এবং তার মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো সময়ে সময়ে সামরিক জান্তার কাছে নতি স্বীকার করেছে। জিয়ার শাসনামলের শেষদিকে কারাবন্দি সিরাজুল আলম খানের ‘বিপ্লবীদের পোশাক বদলের তত্ত্বের’ আড়ালে খুনি জিয়ার সঙ্গে আপসের মাধ্যমে জাসদের শীর্ষ নেতাদের কারামুক্তি ছিল জাসদের আপসহীন রাজনীতির সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। কিন্তু জাসদের তরুণ বিপ্লবী নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে কাজী আরেফ আহমদ ও হাসানুল হক ইনু এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো সামরিক শাসনের সঙ্গে আপস করেনি। প্রতিনিয়ত সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে মুক্তিযুদ্ধের সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই করেছেন সম্মুখভাগের সৈনিক হিসেবে। এ সময়কালে নেত্রকোনার ভাটি অঞ্চল থেকে উঠে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহজাত সাহসী ছাত্রনেতা জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফি আহমেদ এরশাদ-বিরোধী নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে পুরো আশির দশকজুড়েই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শফি আহমেদ। ছাত্রশিবির ছাড়া সব ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গড়ে তোলার দুরূহ কাজে কুশলী নেতৃত্ব দেন তিনি। এরশাদের গোয়েন্দা বাহিনী পুষ্ট অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেত্রকোনার এ ‘গোয়ার’ ছাত্রনেতা সব সময় সামনে থাকেন।

মুখ্যত ছাত্রদের সৃষ্ট গণঅভ্যুত্থান জয়যুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশে সেনা শাসনের স্থলে রাজনীতিবিদরা গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ পেলেন বহু বছর পর। কিন্তু পরিতাপের কথা, তারা ছাত্র সমাজের স্বকীয় সুস্থ গণতন্ত্র চর্চার পথ রুদ্ধ করে দেন। ছাত্র সংগঠনগুলোকে পরিণত করেন তাদের দলীয় আজ্ঞাবহ লাঠিয়াল হিসেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র শফি আহমেদ ছাত্রত্ব শেষ করেছিলেন গণঅভ্যুত্থানের আগেই। এদিকে অভ্যুত্থান পরবর্তী ১৯৯১ সালের নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। বলতে গেলে আওয়ামী লীগের দুঃসময় তখন। ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য সারা দেশের মানুষ তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে। জাসদের কাজী আরেফ আহমেদ ছিলেন এ আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা। তার অনুসারী শফি আহমেদ ও গণঅভ্যুত্থানের পোড় খাওয়া কয়েকজন ছাত্রনেতা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। সে সময় বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা এ আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন দেন। তার সঙ্গে শফি ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের আরও কয়েকজন নেতার যোগাযোগ গড়ে ওঠে। ধারণা করি শেখ হাসিনার আগ্রহে শফি ও ঘাতক দালাল বিরোধী কয়েকজন তরুণ নেতা ১৯৯২ সালের শেষদিকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়াও দলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপকমিটির সদস্য হন তিনি। ভবিষ্যৎ রাজনীতির মাঠে নেত্রকোনার ভাটি অঞ্চলের মোহনগঞ্জ, মদন ও খালিয়াজুরি উপজেলার সাধারণ মানুষের প্রাণের নেতা শফি আহমেদ বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নেত্রকোনা চার আসনে নির্বাচন করবেন, এমন প্রত্যাশা থেকেই তিনি হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ২০০৭ সালের বাতিল হওয়া নির্বাচনে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও পেয়েছিলেন শফি আহমেদ। কিন্তু সেবার আর নির্বাচন হয়নি। এরপর গত চারটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পাননি শফি আহমেদ। ১৯৯৬ সালে এ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মোমিন ছিলেন বঙ্গবন্ধু সরকারের খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী, যিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের দিনে খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভা আলোকিত করেছিলেন খাদ্য ও ত্রাণের সঙ্গে অতিরিক্ত কৃষিমন্ত্রীর পদ লাভ করে। ২০০৪ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সঙ্গত কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে শফি আহমেদ নৌকা প্রতীক পাবেন এ আশা করেছিল এলাকার সাধারণ মানুষ। তাকে না দিয়ে নৌকা দেওয়া হয় মোশতাকের মন্ত্রী আবদুল মোমিনের স্ত্রী রেবেকা মোমিনকে। একবার নয়, উপর্যুপরি পরপর তিনবার! বিদ্রোহ করেননি শফি আহমেদ। দল ত্যাগ করেননি। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থেকেছেন। অনেকের মতো আওয়ামী লীগে থেকে অবৈধ উপায়ে বিত্তের মালিক হননি। নেত্রকোনার স্বনামধন্য আইনজীবী এ টি এম আজিজুল হকের ছয় কন্যা ও একমাত্র পুত্র শফি। পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তির বড় অংশ ব্যয় করেছেন শফি রাজনীতি করতে গিয়ে। মোক্তারপাড়ার সর্বজন পরিচিত সুদৃশ্য দোতলা আজিজ মহলে আমি গিয়েছিলাম প্রয়াত শফির স্মরণসভায় যোগ দেওয়ার আগে। বৈঠক ঘরে পিতার রেখে যাওয়া পুরনো বাহারি সোফাগুলো শতছিন্ন। গণমানুষের বহু দিনের পদচারণে মেঝে ভেঙে গেছে।

সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন শফি আহমেদ। কিন্তু তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। আমি নিজেও পার্শ্ববর্তী পূর্বধলা আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলাম। শফির মতো আমার প্রার্থিতাও বাতিল হয়ে যায়। প্রতিবাদ ও লড়াই করেই আমি তা ফিরে পেয়েছিলাম। একই দিনে আমার পরেই শফির প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার শুনানি হয় নির্বাচন কমিশনে। আমি নিশ্চিত ছিলাম সে তা ফিরে পাবে। কারণ যে দশজন ভোটারের দস্তখতে ত্রুটি আছে বলে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল, তারা ছিলেন গ্রামের অতি দরিদ্র নারী। তাদের প্রত্যেককে শফি হাজির করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের সামনে। আমার চোখের সামনে দেখলাম, শফিকে কথা বলার কোনো সুযোগই দেওয়া হলো না। সেই ভাটি অঞ্চল থেকে আসা নারীদেরও কিছু জিজ্ঞাসা করা হলো না তারা শফিকে সমর্থন করে টিপসই দিয়েছিলেন কি না। তারপরও শফির মুখে হাসিটি ছিল। আমাকে বলল, হাই কোর্টে রিট করবে সে, জয়লাভও করবে। তা আর হয়নি। নেত্রকোনা-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন একান্ত সচিব ও বাংলাদেশের মহামান্য প্রধান বিচারপতির কনিষ্ঠ ভ্রাতা সাজ্জাতুল হাসান। এ লেখার শুরুতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শফির ম্লান হাসি ও অনেকটা ভেঙে পড়া চেহারার কথা বলেছি। তাকে কি এই সমাজ, রাষ্ট্র, দল, নেতা সবাই মিলে নেত্রকোনার-৪ আসন শুধু নয়, এ পৃথিবী থেকেই বিদায় করে দিল? একজন নীতিনিষ্ঠ, নিষ্কলুষ গণমানুষের রাজনীতিবিদ শফি আহমেদ কি কোনো পুরস্কার পাননি? পেয়েছিলেন বৈকি। জীবিতকালে শফিকে বিপুল ভোটে জয়ী করে পুরস্কৃত করার কোনো সুযোগই পায়নি মানুষ। তবে মৃত্যুর পর তার প্রতিটি জানাজায় শোকার্ত মানুষের যে বিপুল ঢল নেমেছিল, তা-ই ছিল সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে তাদের নেতার প্রতি হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার পুরস্কার। এমন মহান পুরস্কার কয়জন রাজনীতিবিদের ভাগ্যে জোটে? ভেবে দেখলাম, শফির মতো কত শত সহস্র যুবক, যুবনারী সুস্থ রাজনীতি করতে এসে অনাদর, অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে রাজনীতি থেকে সরে গেছে অথবা পৃথিবী থেকেই বিদায় নিয়েছে। এমন নিরাশার চিত্র কোনো সুস্থ সমাজের লক্ষণ নয়। দৃশ্যমান বিপুল উন্নয়ন, রক্তচোষা অলিগার্কদের সিন্ডিকেট, একশ্রেণির মানুষের বিপুল বৈভব ও অসুস্থ রাজনীতি এ রুগ্ন সমাজকে নিরাময় করতে পারবে না। এর থেকে পরিত্রাণের পথ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে সুস্থ রাজনীতিবিদদেরই খুঁজে বের করতে হবে।

লেখক : সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর
ধর্মীয় সহনশীলতা ও ইসলাম
ধর্মীয় সহনশীলতা ও ইসলাম
দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান
দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান
গণভোট বিতর্ক
গণভোট বিতর্ক
টাইফয়েড নির্মূলের লড়াই বনাম গুজব
টাইফয়েড নির্মূলের লড়াই বনাম গুজব
নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন : চাই রাজনৈতিক অঙ্গীকার
নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন : চাই রাজনৈতিক অঙ্গীকার
রাজনীতির বিজ্ঞানে ম্যাটিকুলাস ডিজাইন!
রাজনীতির বিজ্ঞানে ম্যাটিকুলাস ডিজাইন!
একীভূত ব্যাংক
একীভূত ব্যাংক
নির্বাচনের ঢেউ
নির্বাচনের ঢেউ
মানবাধিকারের কথা বলে ইসলাম
মানবাধিকারের কথা বলে ইসলাম
মাদকে বিপথগামী লাখ লাখ মানুষ
মাদকে বিপথগামী লাখ লাখ মানুষ
নির্বাচনের পথে বাংলাদেশ
নির্বাচনের পথে বাংলাদেশ
বাঙালির গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের বাঙালি
বাঙালির গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের বাঙালি
সর্বশেষ খবর
বগুড়ায় দুই পা হারানো আহাদের পাশে সাবেক এমপি মোশারফ
বগুড়ায় দুই পা হারানো আহাদের পাশে সাবেক এমপি মোশারফ

২ সেকেন্ড আগে | দেশগ্রাম

মন্দার আশঙ্কায় বেড়েছে স্বর্ণের দাম
মন্দার আশঙ্কায় বেড়েছে স্বর্ণের দাম

৩ মিনিট আগে | অর্থনীতি

পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির কোনও নির্দেশ দেননি পুতিন: ক্রেমলিন
পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির কোনও নির্দেশ দেননি পুতিন: ক্রেমলিন

৪ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

রংপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত
রংপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত

৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

বিরলে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার অপরাধে ৫ জনকে জেল-জরিমানা
বিরলে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার অপরাধে ৫ জনকে জেল-জরিমানা

৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

রোমাঞ্চকর জয়ে শীর্ষে ফিরল পিএসজি
রোমাঞ্চকর জয়ে শীর্ষে ফিরল পিএসজি

১১ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

চট্টগ্রামে এক উপজেলায় মিললো দুই অজ্ঞাত লাশ
চট্টগ্রামে এক উপজেলায় মিললো দুই অজ্ঞাত লাশ

১১ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নিউইয়র্কের নতুন মেয়র মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের চেষ্টা
নিউইয়র্কের নতুন মেয়র মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের চেষ্টা

১৭ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

খাগড়াছড়িতে আন্তস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু
খাগড়াছড়িতে আন্তস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু

২১ মিনিট আগে | ক্যাম্পাস

বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে গ্রেফতার
বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে গ্রেফতার

২৫ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গাইবান্ধায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার
গাইবান্ধায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার

২৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

টাঙ্গুয়ার হাওরে উচ্চস্বরে গান-বাজনা ও পার্টি আয়োজন করা যাবে না
টাঙ্গুয়ার হাওরে উচ্চস্বরে গান-বাজনা ও পার্টি আয়োজন করা যাবে না

৩০ মিনিট আগে | জাতীয়

ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে তারেক রহমানের অবদান রয়েছে: খোকন
ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে তারেক রহমানের অবদান রয়েছে: খোকন

৩১ মিনিট আগে | ভোটের হাওয়া

সাতকানিয়ায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষ, নিহত ১
সাতকানিয়ায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষ, নিহত ১

৩২ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাদেক খানের ১২ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
সাদেক খানের ১২ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

৩৪ মিনিট আগে | জাতীয়

হবিগঞ্জে ৪৩ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ
হবিগঞ্জে ৪৩ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ

৩৭ মিনিট আগে | চায়ের দেশ

নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই: ফরহাদ মজহার
নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই: ফরহাদ মজহার

৩৯ মিনিট আগে | জাতীয়

আলমডাঙ্গায় বিএনপির প্রার্থী শরীফের গণসংযোগ
আলমডাঙ্গায় বিএনপির প্রার্থী শরীফের গণসংযোগ

৪০ মিনিট আগে | ভোটের হাওয়া

প্রতিবন্ধী ও ক্যান্সার রোগীদের পাশে ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট
প্রতিবন্ধী ও ক্যান্সার রোগীদের পাশে ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট

৪৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

আখাউড়ায় রেলওয়ের সিগন্যাল পোস্টের তার চুরি, ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন
আখাউড়ায় রেলওয়ের সিগন্যাল পোস্টের তার চুরি, ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন

৪৬ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

স্লোভাকিয়ায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে আহত বহু যাত্রী
স্লোভাকিয়ায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে আহত বহু যাত্রী

৫০ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

৮ ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি নিচ্ছে শাবিপ্রবি
৮ ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি নিচ্ছে শাবিপ্রবি

৫২ মিনিট আগে | ক্যাম্পাস

বিমান বাহিনীর আন্তঃঘাঁটি ভলিবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
বিমান বাহিনীর আন্তঃঘাঁটি ভলিবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

আসামে দ্বিতীয় বিয়ে করলেই সাত বছর জেল
আসামে দ্বিতীয় বিয়ে করলেই সাত বছর জেল

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মৌলভীবাজার-৪ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী ঘোষণা
মৌলভীবাজার-৪ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী ঘোষণা

১ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

ঢাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে
ঢাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

সিলেটজুড়ে যে ভাইরাস ছড়াচ্ছে আতঙ্ক, শনাক্ত ৩৮২
সিলেটজুড়ে যে ভাইরাস ছড়াচ্ছে আতঙ্ক, শনাক্ত ৩৮২

১ ঘণ্টা আগে | চায়ের দেশ

পরিবারসহ উমরাহ পালন করলেন প্রাণ গ্রুপের শতাধিক পরিবেশক
পরিবারসহ উমরাহ পালন করলেন প্রাণ গ্রুপের শতাধিক পরিবেশক

১ ঘণ্টা আগে | কর্পোরেট কর্নার

নারায়ণগঞ্জে মাদক মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জে মাদক মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

যশোরে ২০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ আটক ১
যশোরে ২০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ আটক ১

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

সর্বাধিক পঠিত
ওবায়দুল কাদের ও মডেল মেঘলার ফোনালাপ ফাঁস
ওবায়দুল কাদের ও মডেল মেঘলার ফোনালাপ ফাঁস

২১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

বিএনপির ৫ নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার
বিএনপির ৫ নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার

১৭ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

সালাহউদ্দিন আহমদের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন আমজনতার তারেক
সালাহউদ্দিন আহমদের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন আমজনতার তারেক

১৮ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

রাজধানীতে দুই বাসে আগুন
রাজধানীতে দুই বাসে আগুন

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পুরান ঢাকায় সিনেমা স্টাইলে গুলি, যা দেখা গেল সিসি ক্যামেরায়
পুরান ঢাকায় সিনেমা স্টাইলে গুলি, যা দেখা গেল সিসি ক্যামেরায়

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

মামদানি নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন?
মামদানি নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন?

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি 'শীর্ষ সন্ত্রাসী' মামুন: পুলিশ
পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি 'শীর্ষ সন্ত্রাসী' মামুন: পুলিশ

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে যে বার্তা দিলেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা
সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে যে বার্তা দিলেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা

১৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

রাবির রেজিস্ট্রারের সঙ্গে জিএস আম্মারের বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল
রাবির রেজিস্ট্রারের সঙ্গে জিএস আম্মারের বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল

৭ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

এক দিনে পদ ফিরে পেলেন বিএনপির ৪০ নেতা
এক দিনে পদ ফিরে পেলেন বিএনপির ৪০ নেতা

২১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

হাসিনার সাথে আপস করিনি তাই বিএনপিতে যোগদান করেছি : স্নিগ্ধ
হাসিনার সাথে আপস করিনি তাই বিএনপিতে যোগদান করেছি : স্নিগ্ধ

২১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মার্কিন নাগরিকদের ২ হাজার ডলার দেওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের
মার্কিন নাগরিকদের ২ হাজার ডলার দেওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আরও ১৪ জেলায় নতুন ডিসি
আরও ১৪ জেলায় নতুন ডিসি

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গাজার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ২০০ ফিলিস্তিনির নিরাপদ প্রত্যাবাসনের চেষ্টা তুরস্কের
গাজার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ২০০ ফিলিস্তিনির নিরাপদ প্রত্যাবাসনের চেষ্টা তুরস্কের

৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

১২ বছর পর ফিরছে ‘রাউডি রাঠোর’, থাকছেন না অক্ষয় কুমার
১২ বছর পর ফিরছে ‘রাউডি রাঠোর’, থাকছেন না অক্ষয় কুমার

১৯ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

তেল রপ্তানিতে ইরানের নতুন রেকর্ড
তেল রপ্তানিতে ইরানের নতুন রেকর্ড

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ধানের শীষে ভোট চেয়ে মোশারফ হোসেনের গণসংযোগ
ধানের শীষে ভোট চেয়ে মোশারফ হোসেনের গণসংযোগ

১৯ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে ফারুক আহমেদ
হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে ফারুক আহমেদ

১৯ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

পুরান ঢাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে
পুরান ঢাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

প্রাথমিক শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বদল, কর্মবিরতি চলবে
প্রাথমিক শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বদল, কর্মবিরতি চলবে

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

কাফনের কাপড় হাতে শপথ ‘১০ম গ্রেড ছাড়া ফিরবেন না শিক্ষকরা’
কাফনের কাপড় হাতে শপথ ‘১০ম গ্রেড ছাড়া ফিরবেন না শিক্ষকরা’

২২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মেট্রোরেলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল
মেট্রোরেলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল

১৮ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

এনসিপির আইনজীবী সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
এনসিপির আইনজীবী সংগঠনের আত্মপ্রকাশ

১৭ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রিতে নামতে পারে যেসব অঞ্চলে
তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রিতে নামতে পারে যেসব অঞ্চলে

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইসরায়েলে ভূগর্ভস্থ গোপন কারাগার, বন্দী ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলে ভূগর্ভস্থ গোপন কারাগার, বন্দী ফিলিস্তিনিরা

৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে নামল
আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে নামল

৬ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

মাঠ পর্যায়ে এনআইডির বয়স সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
মাঠ পর্যায়ে এনআইডির বয়স সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নিষিদ্ধ দল বিক্ষোভের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রেস সচিব
নিষিদ্ধ দল বিক্ষোভের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রেস সচিব

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

রাজধানীতে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে একজন নিহত
রাজধানীতে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে একজন নিহত

৪ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

জিএমপির সাবেক কমিশনার নাজমুল করিম খান বরখাস্ত
জিএমপির সাবেক কমিশনার নাজমুল করিম খান বরখাস্ত

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

প্রিন্ট সর্বাধিক
গণভোটের নাটক ও গোপনে আঁতাত
গণভোটের নাটক ও গোপনে আঁতাত

প্রথম পৃষ্ঠা

কীভাবে হবে মীমাংসা
কীভাবে হবে মীমাংসা

প্রথম পৃষ্ঠা

একটি দাতিনা মাছ বিক্রি ১ লাখ টাকায়
একটি দাতিনা মাছ বিক্রি ১ লাখ টাকায়

পেছনের পৃষ্ঠা

আদানির বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে আজ সিদ্ধান্ত
আদানির বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে আজ সিদ্ধান্ত

পেছনের পৃষ্ঠা

রাজনীতির বিজ্ঞানে ম্যাটিকুলাস ডিজাইন!
রাজনীতির বিজ্ঞানে ম্যাটিকুলাস ডিজাইন!

সম্পাদকীয়

নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন : চাই রাজনৈতিক অঙ্গীকার
নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন : চাই রাজনৈতিক অঙ্গীকার

সম্পাদকীয়

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

বেড়িবাঁধে সরকারি জমি বিক্রি, দুই নেতার সিন্ডিকেট
বেড়িবাঁধে সরকারি জমি বিক্রি, দুই নেতার সিন্ডিকেট

পেছনের পৃষ্ঠা

তৃণমূলে চাঙা বিএনপি
তৃণমূলে চাঙা বিএনপি

নগর জীবন

বিচারিক ক্ষমতা চায় সেনাবাহিনী, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ২৮,৬৬৩
বিচারিক ক্ষমতা চায় সেনাবাহিনী, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ২৮,৬৬৩

প্রথম পৃষ্ঠা

পদ্মা ব্যাংক কেলেঙ্কারি
পদ্মা ব্যাংক কেলেঙ্কারি

প্রথম পৃষ্ঠা

কেন বাড়ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু
কেন বাড়ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু

প্রথম পৃষ্ঠা

নকল বিতর্কে শাকিব খান
নকল বিতর্কে শাকিব খান

শোবিজ

কেন পালালেন তেজস্বী
কেন পালালেন তেজস্বী

শোবিজ

ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে তরুণীর মৃত্যু
ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে তরুণীর মৃত্যু

পেছনের পৃষ্ঠা

‘হানি ট্র্যাপ’ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার
‘হানি ট্র্যাপ’ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

দেশগ্রাম

১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে এস আলমের বিরুদ্ধে মামলা
১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে এস আলমের বিরুদ্ধে মামলা

পেছনের পৃষ্ঠা

ভোটের আগে জাল নোট ছড়ানোর চেষ্টা
ভোটের আগে জাল নোট ছড়ানোর চেষ্টা

পেছনের পৃষ্ঠা

নির্ধারিত দিনই হাসিনার রায় ঘোষণার তারিখ
নির্ধারিত দিনই হাসিনার রায় ঘোষণার তারিখ

প্রথম পৃষ্ঠা

আলোচনায় তাহসান
আলোচনায় তাহসান

শোবিজ

সালমানের বিরুদ্ধে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ
সালমানের বিরুদ্ধে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ

নগর জীবন

বাংলাদেশিসহ ৯০ অভিবাসী নিয়ে নৌকাডুবি
বাংলাদেশিসহ ৯০ অভিবাসী নিয়ে নৌকাডুবি

পেছনের পৃষ্ঠা

আজীবন সম্মাননায় জুয়েল আইচ
আজীবন সম্মাননায় জুয়েল আইচ

শোবিজ

তামিমের সেঞ্চুরিতে সিরিজ হার এড়াল যুবারা
তামিমের সেঞ্চুরিতে সিরিজ হার এড়াল যুবারা

মাঠে ময়দানে

তামার পদক জিতলেন মারজিয়া
তামার পদক জিতলেন মারজিয়া

মাঠে ময়দানে

ফিলিপাইনে আঘাত হানছে সুপার টাইফুন
ফিলিপাইনে আঘাত হানছে সুপার টাইফুন

পূর্ব-পশ্চিম

স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপের অপেক্ষায়
স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপের অপেক্ষায়

মাঠে ময়দানে

নতুন পে-স্কেলের সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার
নতুন পে-স্কেলের সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার

প্রথম পৃষ্ঠা

প্রথম নারী চলচ্চিত্র নির্মাতারা
প্রথম নারী চলচ্চিত্র নির্মাতারা

শোবিজ

লিগে রোনালদোর শত গোল
লিগে রোনালদোর শত গোল

মাঠে ময়দানে