অনেকেই মনে করেন, নানান বাস্তবতা ও মতলব এবং ২০১৩-১৪ সালের ঘটনাপ্রবাহের প্রভাবে দেশে অগণতান্ত্রিক ধারা দ্রুত চরম আকার ধারণ করে। আর নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে ভোটারের ভোট দানের প্রথা প্রায় বিলুপ্তির পথে চলে যায়। ফলে পাঁচ বছর পর পর নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি হয়ে দাঁড়ায় ক্ষমতা নবায়নের কাগুজে আনুষ্ঠানিকতায়। অনেকটা ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার মতো। এই ধারায় নিপতিত হয়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনও। এদিকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা ক্রমান্বয়ে ভেঙে পড়ে, অথবা পরিকল্পিতভাবে নাজুক করে ফেলা হয়। সব মিলিয়ে সরকার গঠন প্রক্রিয়া থেকে জনগণ অনেক দূরে চলে গিয়েছিল। আর এ স্থান দখল করে নেয় সন্ত্রাসী, চাটুকার ও লুটেরা শ্রেণি। পাশাপাশি জগদ্দল পাথরের মতো বেপরোয়া অটোক্রেটিক শাসনের আমলা-পুলিশ জেঁকে বসে রাষ্ট্রের ওপর। সামগ্রিক অবস্থায় ধরে নেওয়া হয়েছিল, অপশাসন আর অবসান হওয়ার নয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অবসান হয়েছে। কেবল তাই নয়, ছাত্র-জনতার চাপে। কেবল ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো নয়, ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাতেও হয়েছে শেখ হাসিনাকে। যে পলায়নকান্ড এর আগে চাপ ও প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও জেনারেল এইচ এম এরশাদ করেননি। তাদের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতা থাকা অবস্থায় হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন এবং জেনারেল এরশাদ ক্ষমতার মসনদে থাকা অবস্থায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। কিন্তু পালাননি।
শাসকদের উল্লিখিত সংক্ষিপ্ত এই ইতিহাসের সমীকরণ মিলিয়ে একটি ন্যারেটিভ হতে পারে, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিকতর চাপের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়েছেন। যা তিনি পালিয়ে প্রমাণ করেছেন। তিনি সেই প্রবচন আবার মনে করিয়ে দিলেন, ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম। চাচা আপন প্রাণ বাঁচা!’ নিজের প্রাণ বাঁচাতে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। যে পলায়ন তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদারদের ভয়েও করেননি। তা হলে শেখ হাসিনা কেন পালালেন এ বিষয়ে সরল উত্তর হতে পারে, ছাত্র-জনতার ভয়ে। আর এই ছাত্র-জনতা দেশবাসীর চেতনা ধারণ করেছেন। যে ছাত্রসমাজ পুরো জাতিকে জাগ্রত করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে এখানেই তারা থামেননি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অবদান রাখা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সড়কের আবর্জনা পরিষ্কারসহ নানান কাজ করে ছাত্ররা প্রমাণ করেছেন, কেবল আন্দোলন নয়, নানান ব্যবস্থাপনায় তারা সক্ষম ও দক্ষ এবং রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জেঁকে বসা আবর্জনা সাফ করার জন্যও তাদের ওপর ভরসা রাখা যায়। এই হচ্ছে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের রূপকার, কারিগর ও বাস্তবায়নকারী আমাদের ছাত্রসমাজ। যারা মোটেই সাধারণ নন, বরং তারা একেকজন অসাধারণ মেধাবী ও সাহসী দেশপ্রেমিক। এ ব্যাপারে কারও কোনো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। কিন্তু এর বাইরেও অনেক বিষয় নিয়ে অসংখ্য প্রশ্ন কিন্তু থাকতেই পারে। আছে আশঙ্কাও। কেউ কেউ এরই মধ্যেই সাবধান বাণী উচ্চারণ করতে শুরু করেছেন, ছাত্র-জনতার বিশাল অর্জন যেন হাতছাড়া হয়ে বর্জনের পথে না যায়। এ আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। মানুষের মনে এই ভয় জেঁকে বসেছে। এদিকে ৫ আগস্ট থেকে সংঘটিত অনেক ঘটনাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন কেউ কেউ। সঙ্গে অতীতও বিবেচনায় নিচ্ছেন অনেকে। আর এখনই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জিকিরকে বিয়ের আগে হানিমুনের তারিখ নির্ধারণের তোড়জোড়ের সঙ্গে তুলনা করছেন কোনো কোনো মহল।
উপদেষ্টাদের শপথ অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মিডিয়ার সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় দ্রুত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন প্রসঙ্গে কোনো মেয়াদের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে, যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারেন।’ উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর শারমিন মুরশিদ সরকারের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে ডিবিসি টেলিভিশনের সঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা কি ধ্বংসস্তূপের ওপর নির্বাচন করতে পারব, এখনই নির্বাচনের কথা বলে আমাদের কষ্ট দেবেন না।’ মেয়াদ নিয়ে একই কথা ৯ আগস্ট বলেছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। কিন্তু তার বলার ভঙ্গিমা এবং শব্দচয়ন ছিল আলাদা। এদিকে উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ যা বলেছেন তা কারও কারও বিবেচনায় অন্যরকম মনে হলেও এটিই কঠিন বাস্তবতা। আবার যারা নির্বাচন নিয়ে অতি উদ্বেল তারা অন্যরকম বাস্তবতায় আছেন। স্মরণ করা যেতে পারে, নব্বইর পটপরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর মুখ্য দায়িত্ব ছিল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এজন্য এ সরকারের মেয়াদ বেঁধে দেওয়া হয় ৯০ দিন। সঙ্গে অন্যান্য কাজ কেবল ‘রুটিন’-এর মধ্যে রাখার সীমানা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। রাবণের হাত থেকে রক্ষার জন্য চারদিকে গন্ডি এঁকে দেওয়ার মতো। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে অভিনব এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা হাজির করা হয়। কিন্তু শেষতক এই ব্যবস্থাও নির্ভরযোগ্য থাকেনি। এদিকে মানুষের মগজে রয়ে গেছে অনির্বাচিত সরকার মানেই নব্বই দিনের মেয়াদ। যদিও সেনা সমর্থিত ১/১১-এর সরকার অন্তত দুই বছর ক্ষমতায় ছিল। এই সরকার ২০০৮ সালে সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের মাইলফলক স্থাপন করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচনি এই ধারাকে পদদলিত করেছে।
এবারের অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যপরিধি ও মেয়াদ নিয়ে কোনো কোনো মহলে মৃদু আলোচনা আছে। কিন্তু যে পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে তাতে ‘কবে নির্বাচন দেবেন’ -এ প্রশ্ন নিয়ে গলা শুকানো কতটা ঠিক হবে তা নিয়ে অনেকেরই ভিন্নমত আছে। কারণ বর্তমান সরকারকে অতীতের যে কোনো সরকারের চেয়ে বেশি কাজ করার বাধ্যবাধকতা অনেক বেশি। আর এর মধ্যে অনেক কাজ আবার অতি কঠিন। এমনকি সংবিধান নতুন করে রচনা করতেও হতে পারে। নিদেনপক্ষে এর খোলনলসে পাল্টে দেওয়া তো অনিবার্য। কাজেই মাসের হিসাবে বর্তমান সরকারের মেয়াদ কাউন্ট করা হতে পারে আর একটি টানাপোড়েনের দিকে দেশকে ঠেলে দেওয়ার নামান্তর। এ প্রসঙ্গে একটি প্রবচন তো আছেই, ‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।’ অতীতে তাকালে দেখা যাবে, বারবার দেশের মানুষ আশাহত হয়েছে। প্রথমেই ধরা যাক মুক্তিযুদ্ধের কথা। কী প্রচন্ড আগ্রহ ও সাহসে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে! কিন্তু মানচিত্র ও পতাকা ছাড়া আর কোনো সুফল দেশের মানুষের ঘরে পৌঁছানো তো দূরের কথা, দোরগোড়ায়ই পৌঁছায়নি প্রত্যাশিত মাত্রায়। বরং একটি মমতাহীন লুটেরা শ্রেণির উদ্ভব হয়েছে। পাশাপাশি অযোগ্যতা জেঁকে বসতে থাকে সর্বত্র। মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। কিন্তু দেয়াল লিখন পড়তে ব্যর্থ হয় তৎকালীন শাসক শ্রেণি। যার সুযোগ নিয়ে সংঘটিত করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ড।
এরপরও হয়েছে অনেক রক্তপাত, অসংখ্য জীবন বলীদান। শেষমেশ এরশাদ আমলে অনেক জীবনদানের সঙ্গে নূর হোসেন যুক্ত হয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন অন্যরকম মোমেনটাম পায়। কিন্তু সেই অর্জনও পথ হারিয়ে নির্বাচিত স্বৈরাচারী ধারায় পরিণত হয়। বরং ক্রমাগতভাবে রাজনীতি এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার এত সর্বনাশ হয়েছে যা সোজা করা মোটেই সোজা কাজ নয়! সামরিক শাসক এরশাদের ৯ বছরের শাসনের অবসান ঘটে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর। এলো ’৯১ সালের সংসদ নির্বাচন, এরপর ’৯৬ সালের নির্বাচন। মোটামুটি গণতান্তিক ধারা চলেছে। মাঝখানে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পুরনো কলঙ্কের ধারা ফিরিয়ে আনা হয়।
এদিকে ২০২১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা সরকার পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে চরম খেলা খেলেছে। আবার অনেক অঘটন, রক্তপাত ও জীবনের অবসান। আসে ১/১১ সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার। দুই বছরের মাথায় সেই সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনা সরকার আবার পুরনো পথেই হাঁটার অপকৌশল অবলম্বন করে। এ ধারায় একটানা চারবারের প্রধানমন্ত্রীর মুকুট মাথায় নিয়েই পলায়নের কলঙ্কজনক কান্ডটি ঘটালেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
এসব ঘটনাবলি যাদের স্মরণে আছে তারা চলমান ঘটনাপ্রবাহ গভীরভাবে বিবেচনা করতে চান। তারা বলছেন, ‘পুরনো বোতলে নতুন মদ’ অথবা ‘যাহা বাহান্ন তাহাই তেপ্পান্ন’ গোছের ঘটনা যেন না ঘটে। ৭ আগস্ট রাজধানীতে একটি দলের বিশাল শোডাউন নানান দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন অনেকেই। বিশেষ করে দ্রুত নির্বাচন প্রশ্নে দলটির অস্থিরতা অনেকেই খুব একটা ভালো চোখে দেখছেন না। তারা বলছেন, নির্বাচনের কাভারেজে দেশে আবার পুরনো ধারা ফিরে এলে তা মোটেই মঙ্গল বয়ে আনবে না। বরং অকল্পনীয় মেধাবী ও অসাধারণ ছাত্রদের নেতৃত্বে দেশবাসী যে বিপ্লব ঘটিয়েছে তাকে আগের মতো বিপথে না দিতে চাইলে রাষ্ট্রের অনেক সংস্কার করতে হবে। এবং তা করতে হবে বর্তমান সরকারকেই। আর এ সরকারকে নানান তকমা দিয়ে ‘খুচরা সরকার’ বিবেচনা করলে দেশবাসীর লক্ষ্য উদ্দেশ্য থেকে যেতে পারে অধরাই। বিপর্যয় ঠেকাতে হলে বর্তমান সরকারকে বিপ্লবী সরকার হিসেবেই ভূমিকা রাখতে হবে। আর ভ্যানগার্ড হয়ে থাকতে হবে আমাদের অসাধারণ ছাত্রসমাজকে। যারা দুঃস্বপ্নের আঁধার পেরিয়ে দেশে আশার মশাল জ্বালাবার অসাধ্য সাধন করেছেন। এই আশার মশাল যেন নিভে না যায়। যতটুকু ধারণা করা হচ্ছে, তাতে জনতার এই প্রত্যাশার বিষয়টি ধারণ করেই দেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং মনে হচ্ছে তিনি ভরসাও রাখছেন ছাত্রসমাজের ওপর। এদিকে কারও কারও মতে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের রাজনীতিসহ নানান কাজে লাগাতে পারে দেশ। একটি উচ্চমানের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদের মধ্য থেকে যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরিতেও নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে ধসেপড়া পুলিশ বাহিনীতে। কিন্তু এ বিষয়ে মনে রাখা প্রয়োজন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন ’৭৩-এর মতো অথবা এরশাদ আমলে ৫০ মার্কের বিসিএস পরীক্ষার মতো না হয়।
বিবেচনায় রাখতে হবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে অদম্য একটি শক্তি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। যাদের সৃষ্টির কাজে না লাগালে অনাসৃষ্টির পথে যাবার আশঙ্কা থেকেই যায়। যেমনটা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর সময়ে। সামগ্রিক অবস্থার বিবেচনায় অনেকেই মনে করেন, হুট করে সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা হলে তা ত্রুটিমুক্ত হবে না। বরং সেই নির্বাচনের ডামাডোলের তোড়ে অসাধ্য সাধনকারী ছাত্রসমাজ ভেসে না গেলেও তাদের চেতনার শক্তি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ প্রচলিত অর্থে তাদের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো নেই, নেই পিরামিড নেতৃত্বও। এজন্য প্রথমেই প্রয়োজন স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সরাসরি ভোটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত করা। এক্ষেত্রে স্কুলে আগের ক্লাস ক্যাপ্টেন ধারায় ফিরে যেতে হবে। আর কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা অনিবার্য এবং এই নির্বাচনে দলীয় কোনো পরিচয় ব্যবহার করা যাবে না।
ছাত্র মানে ছাত্র-ছাত্রদের আবার দল কী! আর সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন দেশ টিভির সঙ্গে ৭ আগস্ট টকশোতে সময়ের দাবি হিসেবে অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তাঁর মতে, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়সসীমা ২৫ থেকে কমিয়ে ২০ বছর করা যেতে পারে। এ সময় তিনি বিরাজমান ব্যবস্থায় সংসদে সদস্যদের মান ও আচরণ নিয়েও সংগত প্রশ্ন তুলেছেন। হয়তো নিজস্ব মেধা-মনন-অভিজ্ঞতা এবং জনগণের পারসেপশন ধারণ করেই এ প্রশ্ন তুলেছেন সরকারের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি ৭ আগস্ট দিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দেশবাসীর উদ্দেশে তাঁর বার্তাটি হচ্ছে, ‘সবাই শান্ত থাকুন, ভুলের কারণে বিজয় যেন হাতছাড়া না হয়।’ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বলেছেন, ‘অভ্যুত্থানে পাওয়া দ্বিতীয় স্বাধীনতা নস্যাতের চক্রান্ত চলছে।’ তাঁর এই বার্তায় আসলে কঠিন বাস্তবতাকেই ধারণ করা হয়েছে। আর এ প্রসঙ্গে খুবই ছোট করে বড় কথাটি বলেছেন উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, ‘ওয়াদা পূরণই সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।’
লেখক : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক