শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : এ বি এম সুমন

বিউটির নায়ক আমিই রংলাল

‘আশফাক’র পর ‘রংলাল’ হয়ে দর্শকের সামনে ২৩ তারিখে ভেলকি দেখাতে হাজির হচ্ছেন এ বি এম সুমন। মাহমুদ দিদারের ‘বিউটি সার্কাস’-এ জয়ার নায়ক হয়েই নিজেকে জানান দিতে আসছেন তিনি। ঢাকাই সিনেমার এই সুদর্শন অভিনেতার সঙ্গে সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

বিউটির নায়ক আমিই রংলাল

রংলালের ভেলকি কবে দেখবে সবাই?

২৩ সেপ্টেম্বর সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে। ‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমাটি মুক্তির আগের প্রস্তুতি চলছে। পুরো টিম প্রচারণা করছে। যে যার মতো করে করছে। বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের আমন্ত্রণে বিউটি সার্কাস টিম গিয়েছিল। যদিও বৃষ্টির কারণে আমি যেতে পারিনি। তবে নির্মাতার কাছ থেকে শুনে ও ফেসবুকে পোস্ট করা কিছু ছবি দেখে বুঝেছি, অডিটোরিয়াম ভর্তি মানুষ ছিল! জায়গা না পেয়ে অনেকেই বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেছে। এটা সত্যিই আনন্দের।

 

জয়ার বিপরীতে, চরিত্রটির মধ্যে কেমন টুইস্ট রয়েছে?

এই সিনেমার নায়ক কিন্তু রংলাল। আমি সেই চরিত্রটি করেছি। খুবই ইতিবাচক চরিত্র। বিউটির পাশে যে মানুষটা তার জীবনে সাহস হয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমিই বিউটির রংলাল। আমার মনে হয় এই চরিত্রটিও ছবিতে ইমপ্যাক্ট ফেলবে। অনেক রহস্য রয়েছে, যা ২৩ তারিখে বড় পর্দায় সবাই দেখতে পাবেন।

 

এরই মধ্যে সিনেমাটির ট্রেইলার আলোচনায় এসেছে...

এটি আসলেই আনন্দের ব্যাপার। সিনেমাটির কাজ শুরু হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। এত বছর পর এখনো মানুষ বিউটি সার্কাস নিয়ে কথা বলছে। সিনেমাটির ট্রেইলার, গান নিয়ে প্রশংসা করছে- যা খুবই ইতিবাচক। নির্মাতা মাহমুদ দিদার তাঁর সর্বোচ্চ দিয়ে কাজটি সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সঙ্গে আমরা আছি এই মিশনে। আমার বিশ্বাস, ভালো সিনেমার সঙ্গে দর্শক সর্বদা থাকবেন। আর বিউটি সার্কাসে অনেক বেশি পরিশ্রম করেছি। এটা আমার প্রথম ছবি, যার প্রতি সবচেয়ে বেশি নিবেদিত ছিলাম। তাই বলা যায় বিউটি সার্কাসে সবচেয়ে বেশি ইমোশন আছে।

 

কোন বিষয় নিয়েবিউটি সার্কাস সিনেমাটি?

আবহমান বাংলার সার্কাস শিল্পকে ঘিরে এক রোমাঞ্চকর ঐতিহাসিক প্রতিশোধের গল্পের নাম ‘বিউটি সার্কাস’। সার্কাসকন্যা বিউটির রহস্যজাগানিয়া এক লড়াই ও টিকে থাকার গল্প। সমাজে মেয়েদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে প্রতি পদে পদে প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু একজন নারী স্রোতের বিপরীতে গিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এখানে নারীর ক্ষমতায়নের দিক দেখানো হয়েছে।

 

অনেক সিনেমায় কাজ করেছেন। হাতেও রয়েছে কিছু। কিন্তু সিনেমা মুক্তির ভাগ্য কেন অনুকূলে নেই?

কাজ করার পর যখনকার সিনেমা তখন যদি মুক্তি না পায় তাহলে ভীষণ খারাপ লাগা কাজ করে। ‘আদি’ নামে একটি সিনেমা করেছিলাম, সেটি মুক্তির খবর নেই। সাত বছর আগে ‘আদি’ মুক্তি পেলে দর্শকের মধ্যে যে প্রভাব ফেলত এখন কি আর সেই প্রভাব ফেলবে? সেটি ছিল আধুনিক সিনেমা। এরপর ‘দাহকাল’ করলাম, রিলিজ হয়নি। ‘এমআর নাইন’ নিয়ে টানা দুই বছর পড়েছিলাম। তখন অন্য কাজ করার সুযোগ হয়নি। ‘বিউটি সার্কাস’ মুক্তির কথা কভিডের আগে। তবে ভালো লাগছে যে, শেষ পর্যন্ত দর্শকের সামনে আসছে। তবে ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর আশফাক চরিত্রটি মানুষ যতটা নিয়েছে, এরপর একে একে কিছু সিনেমা মুক্তি পেলে আমার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হতো।

 

তারপরও সিনেমা করতে চান?

সিনেমাটাই ঠিকভাবে করতে চাই। নিজেকে স্ক্রিনে দেখে যতবার হ্যাপি হব সেটাই সবচেয়ে শান্তির। আমাদের সিনেমা এখন চমৎকারভাবে রাইজ করেছে। ইতোমধ্যেই ওটিটি, সিনেমা বাইরের মানুষ পছন্দ করতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের সিনেমাও শিগগিরই বড় ইন্ডাস্ট্রিতে রূপান্তরিত হবে।

 

অক্টোবর হৃদিতা আসছে...

ইস্পাহানী আরিফ জাহানের ‘হৃদিতা’। একটু সাহিত্যনির্ভর কাজ। উপন্যাস থেকে সিনেমা। অনেকের পছন্দের এই উপন্যাসটি। সেটির একটি সিনেমাটিক ভার্সন তৈরি করে হৃদিতা বানানো। একটা সময়ের প্রেম-বিরহকে এখনকার সময়ের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়েছে। এটিতে আমি একজন পেইন্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে রয়েছেন পূজা চেরি। দর্শকের ভালো লাগবে এই সিনেমাটি।

 

সেই দুর্ধর্ষ মাসুদ রানাকে কবে দেখতে পাবে দর্শক?

আগামী এপ্রিলে মুক্তি পেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ মিলিয়ে এই সিনেমার শুটিং হয়েছে। এমআর নাইন হচ্ছে আমার লাইফের সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র। সবসময় ভাবতাম কেউ মাসুদ রানা বানালে আমাকে নিলে মোর দ্যান হ্যাপি হব। কারণ এটা ছিল আমার ড্রিম। তাই মাসুদ রানা সবচেয়ে রোমান্সকর।

 

সিনেমা নিয়ে কোনো মজার অভিজ্ঞতা রয়েছে?

অভিজ্ঞতা তো অনেকই আছে। ঢাকা অ্যাটাক সিনেমার শুটিং চলাকালে আমাদের শুটিং করতে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। পাহাড়ে ওঠা, জঙ্গলে পানির মধ্যে হাঁটা, ভারী পোশাক পরে অভিনয় করা ইত্যাদি। তবে একটা বিষয় আমাকে খুব প্রেরণা দেয়। আমার অভিনয় শেষে পরিচালক দীপংকর দীপন ভাই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলেন। এই যে ভালোবাসা, কাজের মূল্যায়ন- অভিনেতা হিসেবে অনেক বড় পাওয়ার।

 

সিনেমায় সাফল্য অব্যাহত রাখতে হলে কী জরুরি?

যে কোনো চলচ্চিত্রে সাফল্য পেতে হলে সবার প্রথম একটা ভালো গল্প নির্বাচন করা জরুরি। গল্পটা হতে হবে মানুষের গল্প, জীবনের, জীবনবোধের। আমাদের সমাজের গল্প। এরপর নির্মাণ। নির্মাতা যদি তাঁর নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শকদের ধরে রাখতে পারেন তবেই ভালো কিছু সম্ভব। অভিনেতা যদি চরিত্রের শতভাগ দিতে পারেন তবেই একটা সিনেমা পূর্ণতা লাভ করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর