বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : জয়া আহসান

আপাতত বিয়ের কোনো ইচ্ছা নেই

আপাতত বিয়ের কোনো ইচ্ছা নেই

দুই বাংলার সিনে-দুনিয়ায় এই মুহূর্তে বহুল আলোচিত অভিনেত্রী জয়া আহসান। একের পর এক বাঘা বাঘা ছবি তাঁর ঝুলিতে। বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ভেঙে-গড়ে প্রমাণ করেছেন তিনি। ঢাকা-কলকাতার পর জয়া বলিউডের ছবিতেও কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিভিন্ন ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

জীবন থেকে তো অনেক বসন্ত চলে যাচ্ছে এই বসন্ত কেমন যাবে?

বসন্ত চলে যায়, বসন্ত তো আবার জীবনে আসে (মৃদু হাসি)। তবে সত্যিকার অর্থে এখন আর ঋতুগুলোকে আলাদা করা যায় না। তবে ওই যে, ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজি বসন্ত’। পয়লা ফাল্গুনের সকালবেলা এক জায়গায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠতে যাব ঠিক তখনই হঠাৎ করে কোথা থেকে একটি ছেলে এসে রংতুলি দিয়ে আমার হাতে ‘শুভ বসন্ত’ এঁকে দিল। তখনই আমার মনে হলো, আরে আজ তো পয়লা ফাল্গুন। খুব ভালো লাগল। আসলে এই ছোট বিষয়গুলোই থেকে যায়, এই ছোট বিষয়গুলোই তো অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয়। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও রাস্তাঘাটে, শপিং মলে দেখলাম, সবাই হলুদ রঙের শাড়ি-কাপড় পরেছে। সে সব দেখে মনে হয়, বসন্ত এখনো বিরাজমান। আর এই বসন্ত বলুন, পৌষ বলুন বা নতুন বছর বলুন সেগুলো বাঙালিরা কিন্তু সুন্দর করে উদযাপন করে। জীবন তো উদযাপন করার জন্য।

 

জয়ার কাছে ভালোবাসার সংজ্ঞাটা কেমন?

ভালোবাসা! ঘুরে ঘুরে এই পৃথিবী কি কথা কয়, সে বলে যায় প্রেমের মতো আর কিছু নয়। সবকিছুতেই ভালোবাসা। নর-নারীর ভালোবাসা, মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের ভালোবাসা। আমি মনে করি, আমি যে ভালোবাসাটায় বেশি টান অনুভব করি তা হলো প্রকৃতির সঙ্গে ভালোবাসা। মানুষকে ভালোবাসা। সব ভালোবাসাই গুরুত্ব বহন করে। দিনের শেষে এ ভালোবাসাটাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। সব কাজের প্রেরণা দেয়।

 

ঢালিউড-টালিউডের পর এবার বলিউডের সিনেমায় কাজ করেছেনকড়ক সিং-এর কাজ কি শেষ?

এটাকে বলিউড ফিল্ম না বলে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম বলতে চাই। ভিন্ন ধরনের ছবি। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর বোধহয় এটি দ্বিতীয় কলকাতা-মুম্বাই মিলে প্রজেক্ট। ডাবিংও নেই, একেবারেই সিংকসাউন্ডে করা হচ্ছে। বাকিটা এখনই বলতে পারছি না। নিশ্চয়ই এডিটিং টেবিলে আছে।

 

ওপারের কোনো ছবি মুক্তির অপেক্ষায়?

অনেকই তো আছে। ভূতপরী রয়েছে, অর্ধাঙ্গিনী, ওসিডি, কালান্তরসহ চার-পাঁচটা ছবির মতো তো রয়েছেই।

 

কলকাতায় কোনো প্রজেক্ট শুরু করার প্ল্যান...

আছে। অনেকই রয়েছে। কথাবার্তা হয়েছে।

 

আপনার প্রযোজনা হাউসসি তে সিনেমা থেকে রইদ নির্মিত হওয়ার কথা সেটির শুটিং শুরু হতে দেরি হচ্ছে কেন?

মেজবাউর রহমান সুমন খুবই ভাবনাচিন্তা করে কাজ করেন। প্রি-প্রোডাকশনের কাজ চলছে, লেখালেখি চলছে। হয়তো শুটিং প্রসেসটা একটু দেরি হচ্ছে। আসলে তার প্রথম সিনেমা হাওয়া নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিলেন। হয়তো একটু সময় নিয়ে, সব কিছু ওয়ার্কআউট করে তারপর ছবির শুটিংয়ে যাবেন।

 

জয়ার পথ ধরে ওপারে মোশাররফ, চঞ্চল, বাঁধন, ফারিণ, মিথিলারা অভিনয় দিয়ে মাত করছেন-ভাবলে কেমন লাগে?

অনেক ভালো ছবি বাংলাদেশে কিন্তু আগেও হতো। তবে সেগুলো নিয়ে পশ্চিমবাংলার দর্শক পর্যন্ত আমরা পৌঁছাতে পারিনি। এখন ওটিটি প্ল্যাটফরম আসার কারণে বাংলাদেশি কনটেন্ট সেখানকার দর্শকরা দেখতে পারছেন খুব সহজেই। ওটিটিতে তো কোনো সেন্সর নেই বা মার্জিন নেই যে, এটা করা যাবে না, ওটা হবে না, যৌথ প্রযোজনা সংক্রান্ত যে ঝামেলাগুলো, সেগুলোও নেই। আমি বাঁধনের অভিনীত ছবি নিয়ে বলব। ছবিটা ওই বছর শুধু নয়, বাংলা ছবির ওয়ান অব দ্য বেস্ট পারফরম্যান্স বাঁধনের বলে আমার মনে হয়েছে। অন্যদিকে তাসনিয়া ফারিণ আমার খুবই পছন্দের ডিরেক্টর অতনু ঘোষের সঙ্গে কাজ করেছে। তাসনিয়ার কাজটা আমার দেখা হয়ে উঠেনি কিন্তু বুঝতে পারছি ভালো একটি কাজ হয়েছে। ও যেভাবে গেছে, যে আয়োজন হচ্ছে বা ওকে দর্শক যেরকম পছন্দ করছে সেটা দেখে মনে হয়েছে। আমি ছবিটি দেখার জন্য ওয়েট করছি। ছবিটি দেখব। শুনেছি ফারিণ খুবই ভালো করেছে। এবং ছবিটিও দুর্দান্ত। দেখুন, এই প্রত্যেকেই যদি জায়গা পায় তাহলে এটা কোনো ব্যাপারই নয় আমাদের বাংলাদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য সে দেশে ভালো করার। প্রত্যেকেই অসাধারণ! বাংলাদেশের আরও অনেকেই এখন অভিনয় করছে। তবে আমি কখনই বলব না আমাকে অনুসরণ করে। এটা এখন ওপেন হয়ে গেছে। আমি হয়তো প্রথমদিকে কাজ করেছি। আমি রিস্ক ফ্যাক্টরটা সবসময় নিতে ভালোবাসি। এ জন্যই আমি গেছি, কাজ করেছি। বা এখানকার কাজে আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। আমি কীভাবে কি করব। আমি বিশ্বাস করি অন্যান্য দেশে গিয়ে আমাদের বাংলাদেশি আর্টিস্টরা অনেক ভালো করবে এবং সেই অফারগুলো আসবে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের ছবি একটি এলিভেটেড জায়গায় রয়েছে। এটা খুবই প্লাস পয়েন্ট এবং এটার জন্য আরও বেশি অবদান রেখেছে আমাদের ওটিটি প্ল্যাটফরমগুলো। আমি খুবই আশাবাদী। শুধু বাংলাদেশি আর্টিস্ট নয়, বাংলাদেশি ডিরেক্টরসও দেখাচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমে দাঁড়ানোর জন্য তারা অসাধারণ কনটেন্ট বানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখন আসলে আলাদা করে বাংলাদেশের কনটেন্ট বা বাংলাদেশি, এরকম করে দেখার কিছুই নেই। এটা কখনোই ছিল না। সবসময়ই ভালো ছিল। তবে দুর্ভাগ্যবশত আমরা দেখাতে পারতাম না।

 

দেশে বলিউড ফিল্ম আমদানি...

এ নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। কিছুই তো জানি না!

 

ওটিটিতে জয়াকে দেখা যাবে কবে?

দেখা যাবে। কথাবার্তা চলছে। তবে আমি ওটিটি হলে বাংলাদেশি ডিরেক্টরদের সঙ্গেই কাজ করতে চাই। মানে পশ্চিমবঙ্গের ডিরেক্টরদের সঙ্গে নয়। আমি কনভেন্স হব এমন কোনো গল্প হলে কাজ করব। আমার এটা নিয়ে কোনো নাকউঁচু ভাব নেই। যে আমি এটা করব না, ওটা করব না।

 

লেখিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন কবে?

বই বের করার বা কোনোরকম ডিরেকশন দেওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। করার ধৃষ্টতাও নেই। এ বিষয়ে জ্ঞান-সাহস কোনোটাই নেই আমার।

 

ইদানীং জয়াকে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বিয়ের দাওয়াতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে নিজের বিয়ের দাওয়াত কবে খাওয়াবেন?

আমি অনেক ভালো আছি। কেন আমার পায়ের মধ্যে বেড়ি পরাতে চাইছেন? খুবই ভালো আছি। আমার তো কোনো ইচ্ছা নেই। তবে কোনো কিছুই কখনো বলা যায় না কখন কি হয়! এখন আমি ভালোই আছি। সো আপাতত আমার বিয়ের কোনো ইচ্ছা নেই।

 

সর্বশেষ খবর