জুলাই আন্দোলনে নারী তারকাদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তারা নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে শুরু থেকেই ছিলেন ছাত্র- জনতার সঙ্গে। জুলাই আন্দোলনে বিনোদন জগতের নারী তারকাদের সংগ্রামী ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ
আজমেরী হক বাঁধন
বাঁধনকে দেখা গেছে ৩ আগস্ট তথা ৩৪ জুলাই শহীদ মিনারের বিশাল জমায়েতে। ৫ আগস্ট তথা ৩৬ জুলাইয়ে বাঁধনকে দেখা গেছে বিজয় উল্লাসে রাস্তায় নেমে পড়তে। এরপর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে রাস্তায় টহল দিতেও দেখা গেছে যখন ডাকাতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। ১০ আগস্ট শহীদ মিনারে তাঁকে আবারও দেখা যায় নিজেদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে আশা ব্যক্ত করতে। এর মাঝে সবসময়ই সোশ্যাল মিডিয়াতে সোচ্চার ছিলেন তিনি।
জাকিয়া বারী মম
অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম মিছিলে-সেøাগানে ছিলেন মুখর। তবে তাঁর প্রতিবাদ আরও শক্ত অবস্থানে আসে শিল্পী সংঘ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর। ২ আগস্ট উত্তরায় ম্যাসাকারের পর তিনি সামাজিকমাধ্যমে জানান দিয়ে শিল্পী সংঘ থেকে অব্যাহতি নেন। কারণ হিসেবে সংঘের এমন অবস্থায় নীরবতাকে উল্লেখ করেন। ১০ আগস্ট তাঁকেও শহীদ মিনারে একই ব্যানারে বাঁধনের পাশে দেখা যায়।
কাজী নওশাবা
অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ জুলাই গণ অভ্যুত্থানে রাজপথ ও সামাজিকমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন। নওশাবা বলেন, ‘আমার কাছে জুলাই মানে একতা, আমি খুবই আশাবাদী একজন মানুষ। সব সময় আশা নিয়েই বাঁচি।’ নওশাবার ভাষ্য, ‘আমরা একাত্তর দেখিনি, কিন্তু এই জুলাই দেখেছি। এ সময়ে দেখেছি কত মানুষ জীবন দিয়েছেন, কত মানুষ হাত-পা হারালেন। এসব দেখার পর নিশ্চয় কোনো দেশপ্রেমিক তার দেশের ক্ষতি চাইবেন না।’
রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা
জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল অভিনেত্রী মিথিলার। তিনি বলেন, ‘এইভাবে শিশুদের, ছাত্রদের প্রাণ যেন না যায়। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। যে কোনো বিবেকসম্পন্ন মানুষই চাইবে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে। আমি নিজে শিক্ষার্থী, শিশুদের নিয়ে কাজ করেছি সারাটা জীবন। আমি চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক।’
সাবিলা নূর
গত বছরের ১৭ জুলাই রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন এ অভিনেত্রী। ফেসবুক পোস্টে সাবিলা নূর বলেন, রাজপথে আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থীদের কেউ আপনার-আমার-আমাদের ভাই, বোন, সন্তান কিংবা স্বজন। রক্তপাত কোনো সমাধান না। আজকের ছাত্রছাত্রীরাই আগামী দিনের সম্পদ।
নাজিয়া হক অর্ষা
অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষাও আন্দোলনজুড়ে ছিলেন রাজপথে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এত রক্ত, এত ক্ষত, এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। এটা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। তাদের দাবিগুলো নিয়ে যদি শুরুতে আলোচনা করা যেত, তাহলে এত মানুষ রক্তাক্ত হতো না। কোনো ধরনের আলোচনা না করে আচমকা কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়া, গুলি করা। এটা হতে পারে না।’
সাফা কবির
সাফা কবিরকে ১৯ জুলাই দেখা যায় ভিন্নরূপে। ১৬ তারিখ রংপুরে আবু সাঈদের বুক পেতে বুলেট নেওয়া, ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ, মুগ্ধ নামের ছেলেটির পানি দিতে দিতে কপালে গুলি লাগাসহ হোস্টেলে ঢুকে ছাত্রদের ওপর নির্যাতনসহ বিনা বিচারে সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে সংসদ ভবনের সামনে হওয়া একটি মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা কেন মারা যাবে?’
সানজিদা প্রীতি
বন্ধনের সানজিদা প্রীতিও জুলাই বিপ্লবের মিছিলে শামিল হন। ১৯ জুলাই থেকে শুরু করে ৩০ জুলাই, ২ আগস্ট ধানমন্ডির শিল্পী সমাজের প্রতিবাদ- সব মিছিলেই তাঁকে দেখা গেছে। তিনি গানে-স্লোগানে ছিলেন মুখর।
আরও যারা...
জুলাই আন্দোলনের তালিকায় আরও যারা রাজপথে সোচ্চার ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম আরও কয়েকজন হলেন- শ্রাবণী ফেরদৌস, ইদিলা কাছরিন ফরিদ তুরিন, মুমতাহিনা টয়া, এলিটা করিম, সাবরিনা আইরিন, তানহা জাফরিন, পারসা মেহজাবীন, আরমীন মুসা প্রমুখ।