জন্মদিন মানে জীবনের সঙ্গে আরেকটি বছর যোগ হওয়া নাকি বয়স কমে যাওয়া?
জন্মদিন মানে তো জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়া। মানে বয়স কমে যাওয়া। সবাই বলে বয়স বাড়ে আমি বলি কমে। এটিই সত্যি, এই সত্যিই চিরন্তন। অন্য সময় এ সত্যটি মনে না থাকলেও জন্মদিন এলে তা বেশি মনে পড়ে। তারপরও জন্মদিন বলে কথা। তাই এ দিনে বয়স কমা-বাড়ার চিন্তা করে জন্মদিনের আনন্দ মাটি করতে চাই না।
ছোটবেলার জন্মদিন আর
এখনকার...। আনন্দের মাত্রা ক্রমেই বেড়েছে, নাকি...
ছোটবেলায়ও মজা করে কেক কাটতাম, এখন এই বুড়ো বয়সেও সমান আনন্দে কাটি। আনন্দ আর মজায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। জীবন মানেই তো হৃদয় দিয়ে তাকে অনুভব করা আর খুশির বন্যায় ডুব দেওয়া। জীবনকে উপভোগ করার ক্ষেত্রে বয়স বা যে কোনো বাধাই আমার কাছে তুচ্ছ। যতদিন বেঁচে আছি আনন্দ করে জন্মদিন পালন করে যাব।
আপনি বলেছেন প্রতি বছর বয়স কমে যায়, আসলে কি তাই?
আসলেই তো তাই। তবে জীবনের বয়সের মতো আমার মনের বয়সও কখনো বাড়েনি। আগের মতোই উৎফুল্ল আছি। আসলে মন সুন্দর আর চেহারাটা হাসি-খুশি রাখতে পারলে মানুষ শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকতে পারে। এভাবে শরীর মন সুস্থ রাখতে পারলে ডাক্তারের কাছেও কম যেতে হয়। আমার মনে হয় মন সুন্দর থাকলে চেহারাও সুন্দর থাকে। কারণ, মন হচ্ছে চেহারার প্রতিচ্ছবি। আমি সবসময় মন প্রফুল্ল রাখি বলে এখনো চিরসবুজ। তাই বয়স আমাকে ছুঁতে পারেনি।
সৌন্দর্য অটুট রাখার আর কোনো গোপন থিওরি আছে?
আসলে প্রত্যেকটা বয়সের আলাদা আলাদা সৌন্দর্য আছে। আর এই সৌন্দর্য অটুট রাখতে মনটাকে সব সময় ফ্রেশ রাখতে হবে। বয়স নিয়ে চিন্তা করা চলবে না। তাহলে দেখবেন বুড়ো বয়সেও নিজেকে কেমন ইয়াং লাগে। অন্তত আমি তাই মনে করি। আমি জানি বুড়ি হয়ে গেলেও সবাই বলবে 'বাহ, দেখ দেখি বুড়িটা তো বেশ সুন্দর...হা...হা...হা'।
আজ জন্মদিনের আয়োজন নিশ্চয়ই আনন্দে টইটমু্বর হবে...
না, মোটেও না, কারণ আমার মেয়ে এশা আর মেয়ের জামাই তানভীর থার্টি ফার্স্ট নাইটে ভুটান চলে গেছে। তাই জন্মদিনের কোনো আনন্দ আয়োজন থাকছে না। তা ছাড়া দেশের অবস্থাও ভালো না। তবে মজার কথা হচ্ছে, ওরা যাওয়ার আগেই আমার জন্মদিন পালন করে গেছে। মানে জন্মদিনের আগেই জন্মদিন পালন করা হয়ে গেছে। আসলে আমার জীবনের সব ব্যাপারই এমন মজার। ওরা দুজনে মিলে আমার জন্য বিশাল একটি কেক এনেছে, সঙ্গে ইয়া বড় একটা কার্ড। এটি ছিল আমার জন্মদিনের সবচেয়ে বড় উপহার।
আগামীতে নিজেকে কীভাবে দেখতে চান?
পুরোপুরি সমাজসেবক হতে চাই। মানুষের কল্যাণে জীবন বিলিয়ে দিতে চাই। আগে ক্যান্স্যার, এইডস নিয়ে কাজ করেছি। এবার এসবের পাশাপাশি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করতে চাই। গ্রামের জনগোষ্ঠী যারা দুই বেলা পেট ভরে খেতে পায় না, অধিক সন্তানের চাপে তাদের জীবন এখন নাকাল। এ বিষয়ে তাদের সচেতন করতে পারলে এদের ও দেশের কল্যাণ হবে। আসলে দেশ এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারার মজাটাই আলাদা।
* আলাউদ্দীন মাজিদ