হাসন নগর ঘুরে এলেন, কেমন লাগল ভাটি এলাকার এই জেলা শহর?
হাসন নগর তো হাসন রাজার দেশ। সেই হাসন রাজার অনেক গান যার কণ্ঠে এখনো শোনা যায় তিনি হাসন রত্ন আব্দুল লতিফ। মূলত তাকে দেখতেই জীবনে প্রথম সুনামগঞ্জে গিয়েছিলাম। ভাটি এলাকা এতো সুন্দর হয় কখনো কল্পনাও করিনি আমি। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে যাওয়ার পথটা এত সুন্দর যে প্রেমেই পড়ে গেলাম আমি। জীবনে এতো ব্যস্ততা না থাকলে হয়তো সুনামগঞ্জেই থেকে যাবার পরিকল্পনা করতাম।
হাসনরত্ন আব্দুল লতিফের সঙ্গে তো আপনার আগেও পরিচয় ছিল?
হ্যাঁ, তিন চার বছর আগে রুবেল শংকরের রচনায় ও শহীদুল আলম সাচ্চুর পরিচালনায় টেলিফিল্ম 'ভেতরের মানুষ'-এ তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়েই মূলত আমার পরিচয়। তারপর শুটিং চলাকালীন তার জীবনের গল্প, হাসন রাজার গানের গল্প শুনেছি। তখন আমি তাকে দাদু বলেই সম্বোধন করি। সেই থেকে তিনি আমার দাদু। শুটিং শেষের পর দাদু তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। তখন থেকে শুধু মুঠোফোনেই যোগাযোগ ছিল। দাদু বারবার তার বাড়িতে যেতে বলতেন। কদিন আগে যখন শুনলাম তিনি ভীষণ অসুস্থ তখন ঠিক করলাম দ্রুত দাদুকে দেখতে যাওয়া উচিত। তাই সব ব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে ছুটে গেলাম সুনামগঞ্জ। অবশ্য এৰেত্রে আমাকে ভীষণভাবে সহযোগিতা করেছেন সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীন আর আমার বন্ধু সুজন। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এ সময়ে ধারাবাহিক নাটকেও ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন আপনি?
একেবারেই বেছে বেছে খণ্ড নাটকে যেমন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, আমি ঠিক তেমনি ধারাবাহিকেও। নতুন যে চারটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছি আমি চারটিরই গল্প অসাধারণ। একটিতে আমার চরিত্র একেক রকম। আমার ডায়ালগ ডেলিভারি থেকে শুরু করে আমার পোশাকেও বেশ পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে নাটকগুলোতে। চারটি নতুন ধারাবাহিক হচ্ছে মাজহারুল ইসলামের 'একজন মায়াবতী', অরণ্য আনোয়ারের 'দহন', আলভী আহমেদের 'শূণ্য থেকে শুরু'ও মারুফ মিঠুর 'তিনি আসবেন'। চারটি ধারাবাহিক নাটকই খুব শিঘ্রই শুরু হওয়ার কথা।
ঈদের নাটকের রেসপন্স কেমন পেলেন?
ঈদে বেশ কয়েকটি নাটকই প্রচার হয়েছে। যেমন ঈদের আগে ২৬ জুলাই এনটিভিতে প্রচার হয়েছিল শিখর শাহনিয়াতের 'পলাশ রাঙ্গা ঘোর'। এই নাটকের গল্পের মূল বিষয়বস্তুটা আমার কাছে নতুন লেগেছে। তাছাড়া এ নাটকে আমি নিজে রবীন্দ্র সংগীতও গেয়েছি। সবমিলিয়ে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি নাটকটি প্রচারের পর। এছাড়া তারিক আনাম খানের 'কঞ্জুস', আলভী আহমেদের 'নেশালাগা স্বপ্ন', রাজীব সালেহীনের 'কেউ কথা বলে না' এবং অরণ্য আনোয়ারের 'জুয়াড়ি' নাটকের জন্যও বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি।
মাইলফলক 'মনপুরা'র পর আর নতুন কোনো চলচ্চিত্রে দেখা মিলেনি আপনার, কেন?
আমি নিজেও জানি না আসলে কবে নতুন আরেকটি ভালো চলচ্চিত্রে আমাকে দেখা যাবে। তবে যদি ভালো গল্প, ভালো চরিত্র না মিলে তবে হয়তো এ জীবনে আর নতুন চলচ্চিত্রে দেখা মিলবে না। মাইলফলক হয়ে থাক না শুধু 'মনপুরা', ক্ষতি তো নেই। তবে মন থেকে বলছি, আমি নিজেও চাই ভালো চলচ্চিত্রে কাজ করতে। বলতে পারেন, আগামী বছরটা আমি চলচ্চিত্রে কাজের প্রতি একটু বেশি মনোযোগী হব।
আসছে ঈদের কাজের ব্যসত্দতা শুরু হয়ে গেছে নিশ্চয়ই?
কিছুটা, খুব বেশি না। আমি কিন্তু টানা কাজ করতে অভ্যস্ত নই। একটু থেমে থেমে, বিশ্রাম নিয়ে, স্ক্রিপ্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ে তারপর অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। হুটহাট চরিত্রের গভীরেও যেমন প্রবেশ করতে পারি না ঠিক তেমনি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কোনোরকম সংলাপ আওড়ানোও আমার ভালোলাগে না। মন দিয়ে কাজ করতে চাই, চাই দর্শকের জন্য ভালো কিছু কাজ করতে। অভিনয়ে
ফাঁকি দেওয়াটা আমার যারা গুরুজন তারা আমাকে শেখাননি। তাই আমাকে যা শেখানো হয়নি, তা আমি করতে অভ্যস্ত নই। আমার শিক্ষা, আমার মন মানসিকতাই আমার আগামী দিনের পথ চলার পাথেয়।
শোবিজ প্রতিবেদক