দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এফডিসিতে নতুন ক্যামেরা এসেছে। কিন্তু এতে খুশি হতে পারেননি চলচ্চিত্রকাররা। তাদের কথায়, এগুলো বর্তমান প্রযুক্তি উপযোগী নয়। তাই কোনো কাজেই আসবে না ক্যামেরাগুলো। তা ছাড়া এফডিসি এসব ক্যামেরার যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে বাইরে এর চেয়ে কম ভাড়ায় তা পাওয়া যায়। আর ক্যামেরার পুরো সেটআপ অর্থাৎ ডাবিং, এডিটিং মেশিন আনা হয়নি। তাই এগুলো ব্যবহার সম্ভব নয়।
এফডিসির প্রকল্প পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ জানান, গত সপ্তাহে তিনটি ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্যামেরা আনা হয়েছে এফডিসিতে। এর মধ্যে দুটি হচ্ছে সনি এফ-৫৫, অন্যটি সনি এফ-৫। সঙ্গে মনিটর, লাইট ও লেন্স আনা হয়েছে। শীঘ্রই এডিটিং মেশিন আনা হবে। বর্তমানে এসব ক্যামেরা অপারেটিংয়ের জন্য এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলছে।
এদিকে চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি রেজা লতিফ বলেন, এফডিসি প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ক্যামেরা কেনা হলেও তা কোনো কাজে আসবে না। এখন প্রয়োজন অ্যালেক্সা ও রেড অথবা এর চেয়ে উন্নত প্রযুুক্তির ক্যামেরা। কারণ, বিশ্বে এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে এ দুই ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার হয়। পুরনো প্রযুক্তির ক্যামেরা আনার পেছনে দুর্নীতি এবং এফডিসির ক্যামেরা বিভাগের ইনচার্জ পদে অযোগ্য লোক নিয়োগকে দায়ী করেন তিনি। তার কথায়, নিয়ম থাকা সত্ত্বেও এই পদে কোনো ক্যামেরাম্যানকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ ছাড়াও মাত্র তিনটি নয়, এফডিসিতে এখন প্রয়োজন কমপক্ষে ১০টি ক্যামেরা। তা ছাড়া এফ-৫ ক্যামেরাটির ভাড়া সাত হাজার এবং এফ-৫৫ ক্যামেরার ভাড়া সাড়ে সাত হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে এফডিসি। অথচ বাইরে এফ-৫ পাঁচ হাজার এবং এফ-৫৫ একই ভাড়ায় পাওয়া যায়। রেজা লতিফ আরও জানান, এফডিসির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নতুন মেশিন বা যন্ত্রাংশ কেনার জন্য চলচ্চিত্রকারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি টেকনিক্যাল কমিটি ছিল। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী যথাযথ ও প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করা হতো। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ২০০৭ সালে বদরুল আনাম এমডি থাকাকালীন এ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এতে এখন মেশিন ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সংশ্লিষ্ট কারও মতামত নেওয়া হয় না। চলচ্চিত্রকারদের মতামত উপেক্ষা করা মানেই দুর্নীতির স্বার্থেই এ ব্যবস্থার প্রচলন।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি শহীদুল ইসলাম খোকন, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু, শিল্পী সমিতির সভাপতি শাকিব খানেরও একই অভিযোগ। তাদের মতে, এই ক্যামেরাগুলো যুগোপযোগী নয়। তাই এগুলো কোনো কাজে আসবে না। শুধুই অর্থের অপচয় হলো।
চলচ্চিত্রকারদের এ অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, নিয়মনীতি মেনেই ক্যামেরা কেনা হয়েছে। তা ছাড়া কেনার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে।