বাস্তব জীবনের প্রতি পদে পদে নারীরা বর্তমানে প্রমাণ করে দিচ্ছে তাদের ক্ষমতাকে। বলিউড কোন বিচ্ছিন্ন স্থান নয়। বরং বাস্তব জীবনের এক প্রতিফলনই বলা যায় একে। ফলে আর সবখানের মত বলিউডের নারীরাও বর্তমানে নিয়ম ভেঙে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে নতুন নতুন পথে পা বাড়াচ্ছেন। অধিকার করছেন ক্ষমতার বড় একটা অংশ। বলিউডের এমন ছয় ক্ষমতাধর নারীর কথা জেনে নিন-
একতা কাপুর
খুব সহজেই বিনোদন জগতের এক প্রচন্ড ক্ষমতাশালী নারী হিসেবে পরিচয় পেয়েছেন টিভি বিনোদনের নতুন মাধ্যমের জন্মদাত্রী একতা কাপুর। রাতারাতি প্রতিটি মানুষেরই খুব কাছের ও আপন নাম হয়ে যায় একতা। টিভি বিনোদনে প্রায় এক যুগ রাজত্ব করার পর একতা বালাজি টেলিফিল্মের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে ছবির জগতে নাম লেখান। শ্যুটআউট এট লক্ষন্ডওয়ালা, দি ডার্টি পিকচার এবং ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই নামক ছোট বাজেটের বেশ ব্যবসাসফল ছবি দিয়ে বাজিমাত করেন তিনি এখানেও। বর্তমানে বিনোদন জগতের একজন আইকনে পরিণত হয়েছেন একতা কাপুর।
বিদ্যা বালান
তার না আছে অন্য নায়িকাদের মতন চটকদার সাইজ জিরো অবয়ব, না আছে বিখ্যাত কোন বলিউড আত্মীয়। কিন্তু তবুও লড়াকু এই নারী নো ওয়ান কিলড জেসিকা, কাহানী, দ্যা ডার্টি পিকচার এবং ইশকিয়ার মতন ছবিগুলোতে অভিনয় করে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে সফল হবার জন্য শরীর বা পরিবার গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল অভিনয়ক্ষমতা। পরপর বেশ কয়েকবার জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত আত্নবিশ্বাসী ও সাহসী এই নায়িকা নিজের চরিত্রকে বাস্তব রুপ দিয়ে বদলে দিয়েছেন বর্তমান বলিউডের ধ্যান-ধারণাকে। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে অভিনেত্রীরা কেবল দর্শনীয় উপভোগ্য বস্তুই নয়।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
মিস ইন্ডিয়া খেতাব অর্জনের পর থেকেই বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লড়ে গেছেন প্রিয়াঙ্কা। বারবার হোঁচট খেয়েছেন, মুখ থুবড়ে পড়ে গেছেন। কিন্তু থামেননি। উঠে দাঁড়িয়েছেন আবারও। নতুন উদ্যমে। বরফিখ্যাত এই নায়িকার সেই পরিশ্রম আজ সার্থক। শুধুমাত্র বলিউডেই নয়, তিনি এখন পরিচিত হলিউডেও। তাও অভিনেত্রী হিসেবে নয়, গায়িকা হিসেবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গান গেয়েছেন পিটবুলের সাথে। বের করেছেন অ্যালবাম। বর্তমানে বলিউডের প্রতিটি অভিনেত্রীরই আদর্শ হিসেবে মানা হয় প্রিয়াঙ্কাকে।
দিপীকা পাড়ুকোন
বলিউডে খানদেরকে টেক্কা দেবার ক্ষমতা যদি কোন অভিনেত্রীর থেকে থাকে সে হলো মিষ্টি হাসির দুষ্টি মেয়ে দিপীকা। গতবছর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে পুরো বলিউডকে একেবারে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। তার করা চারটি ছবির চারটিই গতবছর একশ কোটির ঘর ছুঁয়ে যায়। আর কোন কোনটা পার করে দুই বা তিনশ কোটির ঘরও। তিনিই বলিউডের একমাত্র অভিনেত্রী যিনি এক বছরেই বক্স অফিসে নিজের ঝুলিতে ৫০০ কোটি রুপি ভরেন।
ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
বলিউডের ক্ষমাতাধর নারীদের তালিকায় যে নামটি না থাকলেই নয়, সেটি হল ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। সম্প্রতি নিজের নামের পেছনে বচ্চন পরিবারের তকমা লাগালে সেই ২১ বছর বয়স থেকে পুরোপুরি নিজের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমেই সবার মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছিলেন এই বিশ্বসুন্দরী। কেবল জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সবার কাছে এক প্রিয় নাম ঐশ্বরিয়া। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দরী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় তাকে। আন্তর্জাতিক অনেকগুলো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর ঐশ্বরিয়া ২০০৯ সালে ভারতীয সরকারের কাছ থেকে পদ্মশ্রী পুরষ্কার গ্রহণ করেন। ২০১২ সালে ফ্রেঞ্চ সরকারের কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ পদক গ্রহণ করেন এই অভিনেত্রী।
জোয়া আখতার
পরিচালক, অভিনেতা ও কাহিনীকার ফারহান আখতারের বোন জোয়া আখতার ভাই এর মতনই সৃষ্টিশীল। নিজস্ব ভঙ্গীর মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে একটি ছবিকে সৃষ্টি করা জয়া বলিউডে একজন চমত্কার পরিচালক হিসেবে বেশ পরিচিত। লাক বাই চান্স, বোম্বে টকিস এবং জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা ছবিগুলোর মাধ্যমে নিজের পরিচালনার দক্ষতাকে প্রমাণ করেন জোয়া। অনেকেই বিশ্বাস করেন ব্যাবসাসফল হতে হলেই যে ছবিতে চটকদার নাচ-গান থাকতে হবে এমন ধারণা থেকে বলিউড দুনিয়াকে বের করে আনতে হলে সেটা একমাত্র জোয়া আখতারের দ্বারাই সম্ভব।