সিনেমায় খুনখারাবি হরহামেশাই হয়। এই খুন খলনায়ক তো করেই, নায়কও কম যায় না। কিন্তু বাস্তব জীবনে তারা কি খুন-খারাবি করতে পারে? বাস্তবে কি কোন নায়ককে সিনেমাটিক প্রতিশোধ নিতে হয়েছে? হ্যা, অনেক নামকরা তারকাই আছে যারা বাস্তব জীবনে প্রতিশোধ নিতে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন। অন্যের জীবন নিয়েছেন। তাহলে আসুন রঙিন জগতের এমন কিছু তারকার কথা জানি।
শ্রুতি চন্দ্রলেখা: তামিল ছবির ২২ বছর বয়সী এ তারকার গল্পটা পুরোপুরি সিনেমাটিক। কয়েক মাস আগে স্বামীকে খুন করার দায়ে গ্রেফতার হন তিনি। তাও আবার একা নন, খুনের সহযোগী হিসেবে তার সঙ্গে ছিলেন পাঁচ বন্ধু। তবে নিছক দাম্পত্য কলহ নয়। স্বামী রোনাল্ড পিটারের অত্যাচার সইতে না পেরেই কাজটা করেন শ্রুতি। অর্থাভাব চলছিল সংসারে। আর সেই জন্য স্ত্রীকেই অবৈধ দেহ ব্যবসায় নামতে প্ররোচিত করে যাচ্ছিলেন পিটার। শুধু তা-ই নয়, পর্নোগ্রাফি ছবিতে অভিনয় করতে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। উপায় না দেখে সিনেমা জগতের পাঁচ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে শ্রুতি খুন করেন পিটারকে। দক্ষিণের তিরুনেলভেলি নামের একটি জেলায় গোপনে মাটিচাপাও দিয়ে আসেন।
মাইকেল জেস: দ্য শিল্ড ও স্টেট অব প্লে সিরিজের অভিনেতা মাইকেল জেস অভিযুক্ত হয়েছেন স্ত্রী হত্যার দায়ে। এ বছরের ১৯ মে তারিখে জেসের স্ত্রীকে লস অ্যাঞ্জেলসের একটি বাসায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের গায়ে বেশকটি গুলি পাওয়া যায়। দোষী সাব্যস্ত হলে ৫০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে এ অভিনেতার। আপাতত জামিনে মুক্ত আছেন। ধারণা করা হচ্ছে দাম্পত্য কলহই এ হত্যাকাণ্ডের কারণ।
ম্যাথু ব্রডারিক: হলিউডের খ্যাতিমান এ অভিনেতা ১৯৮৭ সালে দু'জনের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ান। সাবেক প্রেমিকা জেনিফার গ্রেকে নিয়ে নর্দার্না আয়ারল্যান্ডের একটি রাস্তায় দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন ম্যাথু। সমস্যা হতো না, যদি রং সাইডে না গিয়ে ঠিক পথে থাকতো গাড়িটা। বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকখানা গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। নিজেদের কিছু না হলেও অপর গাড়িটির দুই আরোহী মারা যায়। প্রথমে পাঁচ বছরের জেল হলেও পরে মাত্র ১৭৫ ডলার জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান ম্যাথু।
রেবেকা গেহার্ট: ইচ্ছে করে কাউকে খুন করেননি এ হলিউড তারকা। তবে তার ভুলের কারণেই প্রাণ হারাতে হয়েছিল ৯ বছর বয়সী এক প্রতিবন্ধী শিশুকে। ক্রসওয়াক ব্যবহার করে রাস্তা পার হচ্ছিল ছেলেটা। বাকিরা সবাই গাড়ি ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়লেও ফোনে কথা বলতে থাকা রেবেকা বিষয়টি খেয়াল করেননি। খেয়াল করার পর কড়া ব্রেক কষলেও লাভ হয়নি। ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি। এক বছরের জন্য লাইসেন্স বাতিল, ২৮০০ ডলার জরিমানা ও ৭৫০ ঘণ্টার সামাজিক শ্রমের বিনিময়ে আইনগতভাবে দায়মুক্তি ঘটে রেবেকার।
চার্লস ডি ডাটন: রুডি ও এলিয়েন থ্রি খ্যাত এ অভিনেতার এক অন্ধকারাচ্ছন্ন অতীত রয়েছে। ১৭ বছর বয়সে রাস্তায় এক মারামারিতে প্রতিপক্ষকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছিলেন তিনি। সাড়ে সাত বছরের জেল হয় তার। জেলখানায় আরেক আসামী একটি বরফের টুকরো দিয়ে খুন করার চেষ্টা করে ডাটনকে। কিন্তু ততদিনে পাল্টে গেছেন ডাটন। প্রতিশোধ নিতে তৎপর না হয়ে শান্ত থাকেন। আর তখুনি মাথায় ঢোকে থিয়েটারের পোকা। এমনকি বের হয়ে এইচবিও’র জন্য একটি টিভি সিরিজের পরিচালনাও করেন। পরে অবশ্য একটি অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ফের শাস্তির মুখে পড়েন ডাটন। জেল খাটতে হয় আরও তিন বছর।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ অক্টোবর ২০১৪/ আহমেদ