চলে গেলেন ওমর শরিফ। শুক্রবার কায়রোর এক হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৮৩ বছরের প্রবীণ এই হলিউড অভিনেতা। রেখে গেলেন তার অভিনীত ১১৮টি চরিত্র। যার কোথাও তিনি চেঙ্গিস খাঁ, কোথাও আবার ডক্টর জিভাগো। শরিফের জীবনটাও ছিল ফিল্মের মতোই বর্ণময়।
১৯৩২ সালে রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম। বাবা-মা নাম দিয়েছিলেন মাইকেল দিমিত্রি চালহোব। অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে কলেজ পাস করার পর পরিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন। পাশাপাশি চলতে থাকে অভিনয়। ফিল্ম করতে গিয়েই আলাপ হয় মিসরের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফতে হামামার সঙ্গে।
ছবিটির নাম 'দ্য ব্লেজিং সান'। সেই ছবিতে প্রথম চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করবেন হামামা। বিপরীতে মাইকেল। প্রত্যাশিতই ছিল ওই দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক বাধবে। বাবার কাছে লুকোতে ছদ্মনামে অভিনয় করলেন মাইকেল। নিজের নাম রাখলেন 'ওমর শরিফ'।
সেই শুরু হলো ওমর শরিফের অভিনয় জীবন। পরে হামামার সঙ্গে বহু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। বন্ধুত্ব পরিণতি পায় প্রেমে। ১৯৫৫ সালে ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করলেন হামামাকে। তবে প্রথম বিয়ে টেকেনি। হামামার সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে ১৯৬২ সালে। ওমর শরিফ যখন হয়ে উঠলেন শরিফ আলি, ডেভিড লিনের 'লরেন্স অব আরাবিয়া' ফিল্মে।
লিন পরে জানান, অভিনয়ের জন্য নয়, শরিফকে তিনি বেছে নিয়েছিলেন তার বাদামি চোখের জন্য। ছবির নায়ক পিটার ও'টুলের নীল চোখের বিপরীতে। সাড়া ফেলে দিয়েছিল শরিফ আলি। এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য দুটো গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ও অস্কার মনোনয়ন পেলেন তিনি। শরিফ আলির হাত ধরেই শুরু হলো ওমর শরিফের হলিউড যাত্রা। কিন্তু থেমে গেল হামামার সঙ্গে পথ চলা। একের পর এক সাড়া জাগানো অভিনয়। ইংরেজি, ফরাসি, স্পেনীয়, ইতালীয়, আরবি, গ্রিক- ছয় ছ'টা ভাষা জানতেন। আর তাই ছবিতে সহজেই হয়ে উঠেছেন, 'বিদেশি', কখনো 'সুলতান', 'স্পেনীয় সন্ন্যাসী', কখনো আবার 'মেঙ্কিান কাউবয়' কিংবা 'চেঙ্গিস খাঁ'।
তার অভিনীত অন্য জনপ্রিয় ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে 'ম্যাকেনাস গোল্ড', 'দ্য ট্যামারিন্ড সিড'ও।