আপনার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে টেলিফিল্ম 'শো-টক'। গল্পটি আসলে কী?
গল্পটি ঠিক আমার নয়। গল্পের ভাবনাটা আমার। বাকি কাজ কামরুল [কামরুল হাসান] করেছে।
তাহলে ভাবনাটাই শেয়ার করুন।
আমরা অনেক টক-শো দেখি। কিন্তু কখনো কোনো টক-শোতে আলোচকদের একমত হতে দেখি না। আর আমাদের গল্প এখান থেকেই। আমার টক-শোতে আলোচকরা একমত হয়ে যায়। আর এ নিয়ে সারা দেশে শুরু হয় জ্বালাও-পোড়াও। কারণ সবাই সন্দেহ করে, এর মধ্যে কোনো 'কিন্তু' আছে। তাদের একমত হওয়াটা সবার কাছে রসহ্যজনক মনে হয়। আসলে পুরো গল্পটা স্যাটায়ার ধর্মী। প্রচুর ফান আছে। মানুষ দেখে যেমন মজা পাবে, তেমনি টক-শো সম্পর্কে অনেককিছু জানবেও।
প্রচুর অ্যারেঞ্জমেন্ট নিয়ে নাকি এটি নির্মিত হয়েছে?
হ্যাঁ। বলতে পারেন পুরো বাংলাদেশই শুটিং স্পট। সারা দেশের জ্বালাও-পোড়াওয়ের দৃশ্য পাওয়া যাবে। নানা ধরনের আন্দোলনের চিত্র পাওয়া যাবে। আর আমাদের এটিএন নিউজের পুরো অফিসই শুটিং জোন ছিল।
অন্যান্য টক-শোগুলোও তো গল্পে থাকছে?
বাংলাদেশের সব টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় টক-শোগুলোই গল্পে থাকছে। কারণ আমাদের টক-শোতে আলোচকরা একমত হয়ে যাওয়ার পর সারা দেশ যখন উত্তাল, তখন অন্যান্য টক-শোগুলোতেও আলোচনা শুরু হয়। সবাই এটা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করে। মানে টক-শো নিয়েও শুরু হয় প্রচুর টক-শো। আমাদের টেলিফিল্মের সঙ্গে সবাই সম্পৃক্ত হয়েছেন। আমাদের হেল্প করেছেন। এজন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
এমন একটি গল্প আপনার মাথায় কেন এলো?
আমার বরাবরই মনে হয়, টক-শো নাটকের বাপ। আমরা তো সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছি, তাই জানি। যেমন ধরুন টক-শোগুলোর ব্রেকের মধ্যে যা হয়, এসব যদি দর্শক দেখে, তাহলে বিনোদনের ষোলআনাই পূর্ণ হবে।
'শো-টক'য়ে নিয়মিত অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, মুহম্মদ জাফর ইকবালদের মতো ব্যক্তিকে অভিনয় করতে দেখা যাবে। বিষয়টি কঠিন ছিল না?
কঠিন কাজটিই আমরা সহজের মতো করে করেছি। আমাদের গল্পের বিষয়ের সঙ্গে সবাইকে দরকার ছিল। তারা আমাদের হেল্প করেছেন।
আগে আমাদের দর্শক নাটক-সিনেমা-গান থেকে বিনোদন পেত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর তাদের কাছে টক-শোও বিনোদনের মাধ্যম। টক-শো তো সিরিয়াস বিষয়। দেশের সমস্যা-সমাধান নিয়ে আলোচনার স্থান। তাহলে মানুষ বিনোদন পাচ্ছে কেন? আর এতে তো গুরুত্বও কমছে।
একসময় টক-শোয়ের খুব গুরুত্ব ছিল। কিন্তু এখন পুরো বিষয়টিই সার্কাসে পরিণত হয়েছে। তাই নেতাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু করিয়ে দিতে পারলেই টক-শো হিট। আমাদের দর্শক সেটা পছন্দ করে। কারণ আমাদের সিরিয়াস দর্শক কম। অন্যদিকে রাজনৈতিক নেতারাও টক-শোতে আসেন নিজ নিজ এজেন্ডা নিয়ে। এক কথায় দুই কথায় তাই শুরু হয় ঝগড়া। পুরো বিষয়টির মধ্যে অভিনয়ও আছে। তারা যা বিশ্বাস করে তা বলে না, বলে এজেন্ডা বাস্তবায়নের কথা। তাই সবাই লাইভ অ্যাকটিং করছে। আর লাইভ অ্যাকটিং দর্শকের কাছেও খুব বিনোদনের ব্যাপার।
আপনি তো অভিনয়ও করেছেন। অভিনয় করে কেমন লাগল?
কিসের অভিনয়! আমি তো কোনো অভিনয় করিনি। আমি যা তাই করেছি। আসলে সব কৃতিত্ব কামরুল হাসানের। ও আমাকে যা যা বলেছে, যেভাবে যেভাবে বলেছে, তাই করেছি। আমার জন্য কোনো সংলাপও লিখিত ছিল না। কামরুলের জন্যই এ প্রজেক্টটি হচ্ছে।
'আপনার অনুভূতি কি'- আপনাকে নিয়ে এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফান হয়। এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কি?
আমার অনুভূতি হচ্ছে, মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা যায় না।
- জাকারিয়া সৌখিন