প্রায় দুই যুগ ধরে মিডিয়াপাড়ায় নানা কাজে জড়িয়েছেন। জড়িয়েছেন মিডিয়ার বেশ কয়েকটি সেক্টরেই। এর মধ্যে র্যাম্পে বেশ দাপুটে ভাব নিয়েই আছেন তিনি। বেশ কিছু টেলিফিল্মও করেছেন। আর টিভিসি, তা তো অর্ধশতাধিক। এবারের ঈদে বেপরোয়া ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে এই সুদর্শন পুরুষের। বলছি, জনপ্রিয় মডেল খালেদ হোসেন সুজনের কথা। বড় পর্দা ও অন্যান্য সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে তুলে ধরেছেন তার অভিব্যক্তি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- শামছুল হক রাসেল
মিডিয়াতে প্রায় দুই যুগ ধরে কাজ করছেন, চলচ্চিত্রে আসতে এত দেরি?
- ব্যাপারটা হলো, আমি মনের মতো কিছু কাজ করতে চেয়েছি...
কিন্তু ভালো ছবি তো হচ্ছে...
- ছবি হচ্ছে। কিন্তু, আমি পর্দায় নিজেকে ভিন্নভাবে দেখতে চেয়েছি। 'বেপরোয়া'তে আমি সে রকম একটি চরিত্র পেয়েছি। অনেকে প্রশ্ন করেছেন এখানে কেন আমি খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছি। কিন্তু এতে আমাকে এমন একটি চরিত্র দেয়া হয়েছে আমি যা সততার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। বাকিটা দর্শকদের হাতে।
নায়কোচিত চেহারা থাকা সত্ত্বেও ভিলেন?
- আমি মনে করি প্রতিটা জিনিসেরই কালো-সাদা রূপ আছে। আমরা যেটাকে বলি হিরো তার সঙ্গে একজন এন্টি-হিরোও প্রয়োজন। চলচ্চিত্র ২/৩ ঘণ্টার একটা বিনোদন। এখানে এমন কোনো কথা নেই যে সাদা (হিরো) চরিত্রই করতে হবে। বাস্তব জীবনে যদি আমি হিরো হতে পারি সেটিই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পর্দায় মানুষ আমাকে ব্যতিক্রমী ভূমিকায় দেখবে, সেটি আমি ঠিকঠাক ফুটিয়ে তুলতে পারি কী না তাই গুরুত্বপূর্ণ। যদি কখনো ইতিবাচক চরিত্রে কাজের সুযোগ আসে অবশ্যই করবো। কারণ আমি দর্শকদের এ উপলব্ধির জায়গাটা তৈরি করে দিতে চাই যে আমি যেমন নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে পারি। তেমনিই ইতিবাচক চরিত্রেও আমি শতভাগ উজাড় করে দিয়ে কাজটা করবো। যেমনটা আমি 'বেপরোয়া'তে করেছি।
সহশিল্পী হিসেবে বরি-রোশান সম্পর্কে...
- দুর্ভাগ্য বলুন কিংবা সৌভাগ্য, নায়িকার সঙ্গে আমার একদিনও শুটিং হয়নি। একদিন শুধু দূর থেকে দেখা হয়েছে। তার 'নোলক' ছবির প্রচরণা চালানোর সময় কথা হয়েছে, আমরা একসঙ্গে বসে ছবিও দেখেছি। কিন্তু 'বেপরোয়া' ছবিতে তার সঙ্গে আমার সেভাবে কোনো আলাপ হয়নি। রোশানের সঙ্গে আমার কিছু অ্যাকশনভিত্তিক ফাইটিং দৃশ্য ছিল। আমি বলবো এ যাবৎকালে যে সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে তার মধ্যে এ ছবিতে হিরো আর এন্টি-হিরোর রসায়নটা দর্শক শতভাগ উপভোগ করতে পারবে।
বড় পর্দায় নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে আছে?
- আমার দ্বিতীয় ছবি 'বিশ্বসুন্দরী'র কাজ চলছে। এক লটের শুটিং করেছে। চরিত্রটা আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। শুটিংটা হয়েছে ফরিদপুরে।
'বিশ্বসুন্দরী'তে আপনার চরিত্রটা কেমন?
- বলবো না নেতিবাচক। ছবির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের সমান্তরালে এ চরিত্রের গল্প এগিয়ে গেছে, এ চরিত্রটা ছাড়া ছবি হবে না। চরিত্রটির বিষয়ে নির্মাতা পক্ষ থেকে সাসপেন্স রাখা হয়েছে আস্তে আস্তে যে রহস্যের জট খুলবে। টু বি অনেস্ট, ইট'স এ ভেরি ভাইটাল ক্যারেক্টার।
ছোট ও বড় পর্দার মধ্যে কী পার্থক্য পাচ্ছেন-
- ১০০০ এর ওপর র্যাম্পে কাজ করেছি। র্যাম্প আমার রক্তে মিশে গেছে। ওখানে টেক'র মতো বিষয় নেই। সরাসরি আমি পারফর্ম করছি। ছোট পর্দায় কিছু টেলিফিল্ম করেছি আর ৫০টির মতো টিভিসি করেছি। বড় পর্দায় টেক, রিটেক এবং পরে ডাবিংয়েও যাচ্ছি। র্যাম্পের তুলনায় এখানে আরও স্বস্তি নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে। একটা মাধ্যম থেকে আরেকটা মাধ্যমে পার্থক্য আছে, মজাও আছে। আমি প্রত্যেকটা মাধ্যমের নির্যাসটাই নিতে চাই এবং মানুষকে ভালো কিছু দিতে চাই।
তাহলে কী ছোটপর্দায় ব্যস্ততা কমিয়ে দিচ্ছেন...
- যদি আমি বড় পর্দায় পুরোপুরিভাবে থিতু হয়ে যাই তাহলে তো স্বাভাবিকভাবেই ছোট পর্দায় কাজ করার সময় ও সুযোগটা হয়ে উঠবে না। তখন একটা জায়গাতেই সময় দিতে হবে। সময় মানুষকে একটা জায়গায় নিয়ে যায়। আমাদের হাতে কিছু নেই।
নিজের পছন্দের ভিলেন কে?
- আমি নিজেকেই আদর্শের একটা জায়গায় দাঁড় করাতে চাই। আমি কাউকে আদর্শ মানলে আমার নিজের ওপর তার প্রভাবটা পড়তে পারে। আমি নিজেকে ব্যতিক্রমীভাবে উপস্থাপন করতে চাই।
বিডি প্রতিদিন/০৯ আগস্ট, ২০১৯/আরাফাত