ভূত, প্রেতাত্মা, ইয়েতি, বুনিপ। যে যে নামেই ডাকুক, মনের অন্তরালে এগুলো নিয়ে গবেষণা কম হয়নি। চায়ের টেবিলে আড্ডায় একবার প্রসঙ্গ উঠলে কোন ফাঁকে যে সূর্য পশ্চিম দিকে হেলতে শুরু করে টেরই পাওয়া যায় না। মা-চাচীরাও ভয় দেখিয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়াতে শব্দগুলো ব্যবহার করে আসছেন সেই প্রাচীনকাল থেকে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান অবশ্য এসবের অস্তিত্বই মানতে নারাজ। তবে মাঝে মাঝেই কোন কোন পর্বতারোহীর মুখে শোনা যায় এভারেস্টে ওঠার সময় নাকি ইয়েতি দেখেছেন। কেউ আবার আমাজনের গভীর জঙ্গলে বুনিপ দেখে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার গল্প বেশ জোরে সোরে বলে বসেন।
তবে বিজ্ঞান এসবকে এককথায় খারিজ করে দিয়ে বলেছে, এগুলো সব মনের ভুল। তবু বিশ্বাসের কাছে অনেক সময়ই পরাজিত হয় যুক্তি। এর ফাঁক দিয়েই ডালপালা মেলে বুনিপ, ভূত আর ইয়েতিরা। বুনিপ, ইয়েতিরা ফিরে ফিরে আসে মানুষের কথায়, গল্পে। কেউ কেউ প্রমাণও জোগাড় করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যুক্তির কাছে সেসব প্রমাণ খড়কুটোর মত উড়ে যায়।
রিক ডায়ার নামের টেক্সাসের এক দামাল যুবক সেই প্রমাণ হাজিরের চেষ্টাটাই করে দেখিয়েছেন। বুনিপ মেরে দেখিয়েছেন রিক। প্রথমে অনেকে বিশ্বাসই করছিলেন না বুনিপ মারার কথা। এর আগে তো এমন দাবি কম শোনেনি বিশ্ব। প্রথমে শোনা যায় বুনিপ দেখেছি, তারপর শোনা যায় বুনিপ মেরেছি। পরে বাস্তবে দেখা যায় ওটা বড় জোর কোনও একটা বন্যপ্রাণী। কিন্তু এবার রিক একেবারে হাতে গরম প্রমাণ এনেছেন। বুনিপ মারার পর তার দেহাংশ জনসাধরণের জন্য প্রদর্শনীতে দিয়েছেন। সেই প্রমাণ নিয়ে গোটা বিশ্ব ঘোরার পরিকল্পনাও এটেছেন।
৮ ফুট লম্বা, ৮০০ পাউন্ডের বুনিপটা রিক মেরেছিলেন কয়েক বছর আগে স্যান অ্যানটোনিওতে। মৃতদেহটা সংগ্রহে রেখেছেন অতি যত্নে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে রিক বুনিপ খুঁজে বেড়াত। ওটাই ওর পেশা। পেশার পোশাকি নাম বিগ ফুট হান্টার।
স্যান্টিয়াগোর জঙ্গলে প্রথমে তার নজরে পড়ে বুনিপকে। তারপরই বুনিপ বধের অধ্যায়। দীর্ঘদিনের অর্জিত কৌশল কাজে লাগিয়ে হয়ত বুনিপের মতোই আজগুবি তন্ত্র-মন্ত্র ব্যবহার করে বধ করে ফেলেন বুনিপ। এরপর গল্প ছড়ানোর পালা।
বুনিপটা আসলে কী, কেমন দেখতে- এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায় মনের ভেতরে। আসলে এর পোশাকি নাম বিগ ফুট । কেউ বলে বিগ ফুট বিশালদেহী বনমানুষ। কেউ বলে গুহা মানব। অনেকে বলে বিগ ফুট বরফের দেশে থাকে যেখানে প্রায় সারা বছরই বরফ পড়ে আর এ কারনেই অনেকে একে তুষার মানবও বলে। তবে বরফ ছাড়াও অন্যান্য জায়গাতেও বিগ ফুটের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত এই পায়ের ছাপ বিগ ফুটের অস্তিত্বের জানান দিলেও তা থেকে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালেই।