প্রাচীন বিষ্ময়গুলোর মধ্যে মিশরের পিরামিডগুলো সবসময়ই সবার আগে নজর কেড়েছে কৌতুহলী মনের। পিরামিড তৈরি নিয়ে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়েছে নানা রোমাঞ্চকর গল্পগাথা। এবার বিষ্ময়ের মাত্রা ছাড়িয়ে মিশরের এক উপত্যকায় প্রত্নতাত্ত্বিকদের নজরে এল অন্তত চার হাজার ছ'শো বছরের পুরোনো এক 'রহস্যময়' স্টেপ পিরামিড। এ পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া স্টেপ পিরামিডগুলোর মধ্যে এটিকেই সবচেয়ে পুরনো মনে করছেন গবেষকরা।
পুরাতাত্ত্বিকদের অনুমান, বয়সে খুফুর তৈরি পিরামিডকে টেক্কা দিতে পারে এডফু উপত্যকায় সদ্য আবিষ্কার হওয়া এই স্টেপ পিরামিড। প্রাথমিক গবেষণার ভিত্তিতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন, গিজার বিখ্যাত স্টেপ পিরামিড তৈরি হওয়ারও বেশ কয়েক দশক আগে এই পিরামিড তৈরি করা হয়েছিল। সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে উঠে যায় বলে এই ধরনের পিরামিডের এমন নাকরণ। মিশরের স্টেপ পিরামিডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নামকরা চতুর্থ বংশের সম্রাট জোশুরের তৈরি পিরামিডটি।
এডফু উপত্যকায় নতুন আবিস্কৃত এই পিরামিডটি সম্রাট জোশুরের তৈরি পিরামিডের চেয়ে উচ্চতায় নিতান্তই 'শিশু' হলেও আভিজাত্যে নয়। একদল প্রত্নতাত্ত্বিক মনে করছেন, এই পিরামিড তৈরি করিয়েছিলেন সম্রাট হুনি। অন্য আর এক দলের বিশ্বাস সম্রাট স্নেফরুর উদ্যোগেই তৈরি হয়েছিল এই সৌধ। তবে এখনো কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন, তৈরির সময় পিরামিডটির উচ্চতা ছিল অন্তত ১৩ মিটার। সাড়ে চার হাজার বছরেরও বেশি সময় রোদ ও জলের মধ্যে পড়ে থাকতে থাকতে ক্ষয়ে গিয়ে বর্তমানে এর উচ্চতা মাত্র পাঁচ মিটারে এসে ঠেকেছে।
প্রত্নতাত্বিকদের মতে, এই ধরনের পিরামিডগুলো প্রাচীন শহরের আশেপাশে তৈরি করা হত। এইগুলি 'প্রাদেশিক পিরামিড' নামে পরিচিত। এসব পিরামিডে কোনও গোপন কক্ষ থাকে না। প্রাচীন সমাধিস্থল হিসেবেও এই পিরামিড ব্যবহার করা হত না। এ পর্যন্ত মিশরের মধ্য ও দক্ষিণ ভাগে এমন বেশ কয়েকটি প্রাদেশিক পিরামিডের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। তবে কোনওটিই এডফু উপত্যকার পিরামিডের মতো এত প্রাচীন নয়। -পিটিআই