স্ট্রবেরি চাষে সফলতা পেয়েছেন চিরিরবন্দরের অমূল্য রায়। তিনি জানান, ধান, গম ও পাটের চেয়ে স্ট্রবেরি চাষ বেশ লাভজনক। অল্প জমিতে, স্বল্প সময়ে ঝুঁকিবিহীন একটি সফল ব্যবসা হচ্ছে স্ট্রবেরি চাষ।
অমূল্য রায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের গোন্দল গ্রামের কালুশাপাড়ার মৃত খগেন্দ্র নাথের পুত্র। তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর মনোনিবেশ করেন কৃষিকাজে। এ সময় অন্য ফসলের আবাদের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। এ চাষে তার সাফল্য ফিরে আসে।
স্থানীয় এনজিও 'বহুব্রীহি' থেকে অমূল্য রায় স্ট্রবেরি চাষের জন্য প্রশিক্ষণ নেন। প্রথমে 'বহুব্রীহি' তাকে স্ট্রবেরির চারা সরবরাহ করে।
স্ট্রবেরি চাষের জন্য অমূল্য বাড়ির উত্তর-পূর্ব পাশেই ৩'কাঠার ছোট্ট জমি নির্ধারণ করেন। ধান, গম, পাট, বেগুন ইত্যাদি চাষ হতো এ জমিতে। রোপন করা হয় স্ট্রবেরির চারা। পরিচর্যা নিজেই করেন। চারা গাছের বয়স যখন দেড় মাস তখন থেকে গাছগুলোতে ফুল ধরা শুরু হয়। পরে লাল টুকটুক ফল হিসেবে স্ট্রবেরি দেখা দেয়।
বিভিন্ন গ্রামের মানুষ অমূল্যের হাতে ফলানো স্ট্রবেরি ফল দেখতে আসেন। প্রতিদিন সকালে স্ট্রবেরি উপজেলার রাণীরবন্দর সুইহারিবাজার, স্থানীয় এনজিও জেএসকেএস ও খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহির বাজারে বিক্রি হয়। ফলটি নির্ভেজাল আর শতভাগ ফরমালিনমুক্ত সতেজ অবস্থায় পাওয়া যায় বলে এটি কেনার ব্যাপারে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়।
অমূল্য রায় জানান, চারার বয়স দু'মাস হলে প্রতিদিন ৩/৫ কেজি স্ট্রবেরি উত্তোলন করি। স্থানীয় বাজারে পাইকারের নিকট দেড়শ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি করছি। জমিতে রোপনকৃত চারার বয়স ৩ মাস চলছে। প্রতিদিন ঘরে আসছে নগদ ৭/৮শ টাকা করে। সামনে আরো এক মাস বিক্রি করা যাবে। এ পর্যন্ত ২০হাজার টাকার ফল বিক্রি করেছি।
তিনি আরও জানান, আগামী এক মাসে অন্তত ৬/৭হাজার টাকার ফল বিক্রি করা যাবে। এ পর্যন্ত জমিতে চারা রোপন, সেচ, সার ও ঘেরাবাবদ অন্তত ৫/৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এভাবে মাত্র ৫/৬ হাজার টাকা খরচ করে ৩ কাঠা জমিতে অন্তত ২০ হাজার টাকা শুধু ফল থেকে আয় আসবে। এছাড়া এই জমিতে আড়াই থেকে ৩ হাজার চারা উৎপন্ন হবে।
আগামীতে বড় আকারে স্ট্রবেরি ফলের চাষ করার স্বপ্ন দেখছেন অমূল্য রায়। তিনি আশা করেন নিজের জন্য চারা রেখে আরো অন্তত ১০/১২ হাজার টাকার চারা বিক্রি করতে পারবেন।