৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৬:১৪

দুই বিঘা জুড়ে মেলে আছে প্রাচীন ডালপালা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দুই বিঘা জুড়ে মেলে আছে প্রাচীন ডালপালা

ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে দেড়শ' বছর ধরে ডালপালা মেলে আছে এই প্রাচীন বটবৃক্ষ। দিনাজপুরের বিরামপুরে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আছে বৃক্ষটি। এ যেন ভাওয়াইয়া গানের কথায় সেই চিরায়ত কথা ‘বট বৃক্ষের ছায়া যেমন রে মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে...’।

বটবৃক্ষটি শাখা-প্রশাখা চারিধারে বিস্তৃত করে যেমন পরিবেশ রক্ষা করে তেমনি আবার দাবদাহ থেকে মুক্ত করে শীতল ছায়া দেয় হাজারো পথচারীকে। গাছটি দুই বিঘা জমি জুড়ে ডানা মেলেছে। বটগাছের লতানো শিকড়গুলো মাটিতে ঠেকে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। 

এই প্রাচীন বটবৃক্ষ বা বট গাছটি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে। এর উত্তর অংশে রয়েছে একটি শারদীয় দুর্গামন্দির। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা-অর্চনার পাশাপাশি এখানে  প্রতিবছর মেলা বসে। আবার দূরদূরান্ত থেকে অনেক পথিক গাছটি দেখতে আসেন, বিশ্রাম নেন।
 
আজও পরিবারের জীবিত বয়স্ক ব্যক্তিকে এই বটবৃক্ষের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তেমনি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে এই বট গাছটি কালের সাক্ষী হয়ে আছে। গাছটির বয়স দেড়শ’ বছর পেরিয়েছে। প্রাচীনতম বৃক্ষটি পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনের কর্মকতারা। এ অঞ্চলের একমাত্র বটগাছটি রক্ষণাবেক্ষণে সংস্কৃতি ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগকে এগিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন বিরামপুর উপজেলাবাসী। 

সময়ের বিবর্তনে বটগাছের ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে গেলেও গ্রামীণ জনপদে এখনো টিকে আছে শত শত বছরের বটগাছ এবং তাকে ঘিরে রয়েছে নানা কল্পকাহিনী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে গাছটি নমস্য বটে। বটগাছটির পাতা ঝরে পড়ে, নতুন পাতা আসে। এর পরেও ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে গাছটি।
 
বটগাছটি জেলার বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বারিন্দ্রনাথ সরকারের জমিতে এটি এ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো বটগাছ। লোকমুখে শোনা যায় এই গাছটির বয়স দেড়শ বছর পেরিয়েছে।
 
ওই এলাকার সবচেয়ে প্রবীণ দুর্গাপুর গ্রামের ৯৫ বছর বয়সী মঙ্গল সরেন জানান, ছোট থেকে দেখছি গাছটিকে এবং গাছটি ধীরে ধীরে তার শাখা-প্রশাখা চারিপাশে তার কলবর বাড়িয়ে চলেছে। বিরামপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যর প্রতীক দেড়শ' বছরের প্রাচীন গাছটি এলাকার একটি সম্পদ। গাছটিকে দেখার জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে লোক আসে। আমরা এখানে পূর্জা অর্চনা করি। বটগাছটি মনে করিয়ে দেয় অতীত স্মৃতি। এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গাছটির উত্তরাধিকার বারিন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে প্রভাষক কালী প্রসন্ন সরকার জানান,  আমার ঠাকুর দাদা এই গাছটি রোপণ করেছিলেন। পারিবারিকভাবে আমার বাবা বারীন্দ্রনাথ সরকার দেখাশুনা করতেন। আমাদের তিন প্রজন্মের কাছে গাছটির বয়স দেড়শ’ বছর পেরিয়েছে।
  
বিরামপুর উপজেলার নিজস্ব সাংস্কৃতি ও প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিকখ্যাত কালের সাক্ষী বটগাছটি রক্ষণাবেক্ষণের দাবি বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজুরও।

এদিকে,কালের সাক্ষী বটগাছটি রক্ষাসহ দৃষ্টিনন্দন করতে সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলাবাসী।


বিডি প্রতিবেদন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর