বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি বলেছেন, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বুকে ধারণ করে সারা জীবন রাজনীতি করেছি। মানুষের ভালোবাসা আর অকুণ্ঠ সমর্থনই আমার পথচলার শক্তি। সর্বশক্তি দিয়ে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই। মির্জা আজম বলেন, যে বিশ্বাস আর আস্থা নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যেন রক্ষা করতে পারি সে জন্য জেলার সর্বস্তরের মানুষের দোয়া ও সমর্থন চাই। গতকাল বিকালে জামালপুর শহরের বৈশাখী মেলা মাঠে দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশে আবেগাপ্লুত মির্জা আজম আরও বলেন, জামালপুর আমার জন্মভূমি, এ মাটিতে জন্মেছি, এ মাটির আলো-হাওয়ায় বড় হয়েছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। সব সময় আমার সাধ্যমতো জেলার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমি জানি দরিদ্রতম এ জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনা কোথায়। প্রতিমন্ত্রী জনতার উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত, কৃতজ্ঞ। এক বছরের মধ্যে জামালপুরবাসীর প্রাণের দাবি জেলায় মেডিকেল কলেজ ও টেঙ্টাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন হবে বলে ঘোষণা দিয়ে মির্জা আজম বলেন, এ সরকারের মেয়াদেই স্থাপন করা হবে পলিটেকনিক্যাল কলেজ। আর এ সরকারের মেয়াদে দেশে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হবে। তিনি বলেন, এ সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদে আমি এমন কিছু করে যেতে চাই যাতে দরিদ্রতম এ জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে সহায়ক হয়। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভার শুরুতে প্রতিমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ; রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। শতাধিক সংগঠন ক্রেস্ট উপহার দেয় প্রতিমন্ত্রীকে। সংবর্ধনা সভায় সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ এমপি, ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বিজনকুমার চন্দ, এফবিবিসিআইর পরিচালক রেজাউল করীম রেজনু ছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সংবর্ধনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পীর পাশাপাশি সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপির আগমনকে কেন্দ্র করে উৎসবের শহরে পরিণত হয় জামালপুর। রঙিন সাজে সাজানো হয় প্রতিটি রাস্তাঘাট, অলিগলি। জামালপুর শহরের প্রধান সড়কসহ অলিগলিগুলো ছেয়ে যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও নেতা-কর্মীদের ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে। ঘোড়াধাপ থেকে জামালপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রাস্তা সাজানো হয় রঙিন তোরণ, পোস্টার-ফেস্টুনে। জেলার প্রবেশপথ ঘোড়াধাপ থেকে শুরু করে জেলাজুড়ে প্রধান সড়কে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্থাপন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, জাতীয় চার নেতা, শেখ হাসিনা ও মির্জা আজমের ছবিসংবলিত তিন শতাধিক বর্ণিল তোরণ। বেলা ১টায় জামালপুরের সীমানা ঘোড়াধাপে পেঁৗছান মির্জা আজম। এখানে শতাধিক গাড়ি ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে জেলাবাসী তাকে স্বাগত জানায়। পথে পথে মানুষের ভালোবাসা, শুভেচ্ছা আর ফুলেল শ্রদ্ধায় স্নাত হন মির্জা আজম এমপি। ঘোড়াধাপ থেকে গোপালপুর, লাহিড়ীকান্দা, নান্দিনাসহ ১২টি পয়েন্টে তাকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষমাণ জনগণের উদ্দেশে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি।