সুন্দরবন রক্ষায় বাগেরহাটের আইনজীবীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘আমাদের দেশের বন কমতে কমতে বনাঞ্চল এখন ৮ থেকে ১০ ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে। সুন্দরবন না থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপনারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আপনাদের দ্বিতীয় প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে এই উপকূলীয় এলাকার পানিতে লবণাক্ততা বেড়েছে। কৃষিজমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে খাওয়ার পানির সংকট। সুন্দরবনের বাঘ, হরিণ শিকারি ও বন ধ্বংসকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমি এ সফরে সুন্দরবন পরিদর্শন করব। তবে ভ্রমণের জন্য নয়। তাই পরিবার নিয়ে আসিনি।’ বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে আইনজীবীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গতকাল তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দেশ ও জাতি কত দূর উন্নত হলো এর পরিমাপ করা হয় সে দেশে আইনের শাসন কতটা নিশ্চিত হয়েছে তার ওপর। যে দেশে আইনের শাসন নেই, সেই দেশ যতই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হোক তারা রাষ্ট্রের প্রতি মর্যাদা পাবে না। তাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই আমার লক্ষ্য।’ বিচারকরা নিরপেক্ষ রায় প্রদান করলে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বাগেরহাট আদালতে আশির দশকের আপিল মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আইনজীবীদের সহযোগিতা ছাড়া দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আইনের শাসন সবার ওপরে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ কে এম আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা, জেলা ও দায়রা জজ মিজানুর রহমান খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জাহিদ হোসেন প্রমুখ। প্রধান বিচারপতি দিনভর বাগেরহাট আদালতের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনকালে দ্রুত মামলার জট কমতে থাকায় বিচারকদের প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি জজশিপের জুডিশিয়াল কনফারেন্সে অংশ নিয়ে বিচারকদের দিকনির্দেশনাও দেন।