মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জেলহত্যা দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। জাতীয় জীবনে এক কলঙ্কময় দিন। জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও আবু হেনা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানকে কারা-অভ্যন্তরে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে ঘাতকের দল। জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পর এ দেশের ইতিহাস উল্টো পথে চলতে থাকে। জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে মানবতাবোধের চরম নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার   সাক্ষী ৩ নভেম্বর। দিবসটি পালনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে উদ্ভূত অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহচর জাতীয় এ চার নেতা মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে সেদিন বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। ক্ষমতা দখলকারী শাসকদের রক্তচক্ষু টলাতে পারেনি তাদের। আজীবন তারা বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে আপসহীন ছিলেন। এ জন্যই তারা ইতিহাসে স্মরণীয়। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাছে আদর্শ। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন স্বাধীনতা-সংগ্রামে প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও আবু হেনা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ছিলেন মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন ও জাতিকে নেতৃত্বহীন করার লক্ষ্যে জাতির পিতাকে হত্যার ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু ঘাতকচক্রের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার আদর্শ চিরজাগরূক থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর একটি কলঙ্কিত দিন। এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলার মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : প্রতিবারের মতো আওয়ামী লীগ শোকাবহ এ দিবসটিকে স্মরণ ও পালন করবে। জেলহত্যা দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র সংগঠনের শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালোব্যাজ ধারণ। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জমায়েত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। পৌনে ৮টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদ ও জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতিহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামরুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতিহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে জেলহত্যা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে সর্বস্তরের দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সব শাখা এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সব শাখার নেতা-কর্মী-সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর