সোমবার, ২০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

সব হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সব হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করুন

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ফাইজুল্লাহ ফাহিম হত্যাসহ সব ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আমরা বরাবরই এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছি, এখনো করছি। আমরা এহেন বিচারবহির্ভূত হত্যাগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং অবিলম্বে এটা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশীদ, বিএনপি নেতা আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম ও শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মাদারীপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ফাহিমের মৃত্যু প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবিলম্বে এর তদন্ত হওয়া উচিত। এটি সম্পূর্ণভাবে আইনবহির্ভূত ব্যাপার। রিমান্ডে থাকা এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় একজনকে কোনোভাবেই হত্যার বিষয়টি জাতি মেনে নিতে পারে না। সরকার জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় ব্যর্থ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এত বড় একটি জটিল ও গুরুতর সমস্যা- জঙ্গিবাদ, তা নিয়ে ছেলেখেলা করছেন কেন? এর একটাই কারণ, সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এই সমস্যা চিহ্নিত করতে এবং প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে। কোনো সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়াই বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে সরকার তার দায়িত্ব শেষ করতে চাইছে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধের নামে’ শরিফুলের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকেও একটি ক্রসফায়ার হয়েছে। এর একদিন আগে ১৮ বছরের ছেলেকে একজন কলেজ শিক্ষককে হত্যার প্রচেষ্টার সময় মাদারীপুরের জনগণ ধরল বলা হলো, সেই ছেলেটিকে রিমান্ডে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যা করা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হত্যা ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যাকে ধরা হলো তাকেও ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে কাশিমপুর জেল থেকে আদালতে নেওয়ার পথে জঙ্গি হামলায় জড়িতদের একজন প্রিজনভ্যান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তাকেও ধরে হত্যা করা হলো। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব ঘটনায় একটি বিষয় পরিষ্কার যে ‘প্রকৃত তথ্য’ উদ্ঘাটন না করে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। আর এ থেকে জনমনে স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্নটি এসে দাঁড়িয়েছে, তা হলো- সরকার নিজেই কি এর সঙ্গে জড়িত? প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গুপ্তহত্যার সঙ্গে কারা জড়িত- এটা উদ্ঘাটন না করেই শুধু বিএনপির ওপর দোষ চাপানো- এটা একটি রাজনৈতিক নীলনকশা, অপকৌশল। উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেভাবে হোক বিরোধী দলকে ঘায়েল করা, দমন করা। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক সাপ্তাহের সাঁড়াশি অভিযানে যে ১৪ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হলো, তারাই (সরকার) বলছে, এর মধ্যে ১৭৯ জনকে জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছে মাত্র। বাকি ১৩ হাজারের বেশিই সাধারণ মানুষ। এভাবে গোটা দেশকে তারা ভয়াবহ আতঙ্কের রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, অন্ধকারের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই আজকে ‘এই সংকট’ তৈরি হয়েছে। এ সংকট নিরসনে অবিলম্বে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর