বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

একমঞ্চে ‘জাতীয় ঐক্যে’র নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্র, জবাবদিহিতামূলক সরকার ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠাসহ বর্তমান সরকারের পতনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দিলেন অধ্যাপক ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্না। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘ইভিএম বর্জন, জাতীয় নির্বাচন ও রাজনৈতিক’ জোট শীর্ষক আলোচনা সভায় একই মঞ্চে দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি এ আহ্বান জানান তারা। জাতীয় ঐক্যের উদ্যোক্তারা বলেন, ‘আর নয়, অন্যায় বেশি দিন টিকে না। ১০ বছর টিকেছে। এবার সবাই মিলে আমরা এই অন্যায়কে দাফন করব। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।  বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘দেশে আজ মারাত্মক সংকট চলছে। গণতন্ত্র নাই। মানুষের অধিকার নাই। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নাই। কাকে কখন কীভাবে তুলে নিয়ে যায় তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না। যে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে আমরা তা চাই না। আমরা চাই জবাবদিহিতামূলক সরকার। আর যেন কোনো স্বৈরাচারী সরকার এদেশে আসতে না পারে। তার জন্যই প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য। এই ঐক্যের মাধ্যমেই আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাব ইনশা আল্লাহ।’

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যারা অসাম্প্রদায়িকতা ও সংবিধানের মূলনীতিতে বিশ্বাসী, দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে তাদেরকে দলমত নির্বিশেষে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর মাধ্যমেই দেশের হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা জবাবদিহিতামূলক সরকার ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্ভেজাল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে প্রকৃত অর্থেই আইনের শাসন থাকবে। মানুষ বিচার পাবে। সব অধিকার ফিরে পাবে। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তাই আসুন আমরা সবাই এক কাতারে দাঁড়াই।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যা মামলার বিচারের জন্য রাতের অন্ধকারে প্রজ্ঞাপন জারি করে কারাগারের ভিতরে আদালত বসিয়েছে সরকার। পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন নজির নেই। এটি প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে জেলখানায় এমন গোপন আদালত বসিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক নেতা-কর্মীদের বিচার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ভৌতিক মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন যে, ওপরের নির্দেশে তারা এসব মামলা করছেন। এই জুলুমবাজ, মামলাবাজ, অবৈধ সরকারকে সরাতেই হবে। এ জন্যই প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আমরা চেষ্টা করছি। সময়মতো কর্মসূচি আসবে। আপনারা সবাই আমাদের সঙ্গে থাকবেন। ইনশা আল্লাহ সত্যের বিজয় অনিবার্য।’

জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, এই সরকাকে জনগণ চায় না। আমাদের দায়িত্ব হলো জাতীয় ঐক্য করে এই সরকারকে বিদায় করা। কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিচার সংবিধানের কোথায় আছে? এটা সংবিধানের ৩৫ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মতো একজন নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়েই সরকার ক্ষান্ত হয়নি, এখন জেলাখানার ভিতরে গোপন আদালত বসিয়েছে তাঁর বিচার করার জন্য। কোথায় গিয়ে ঠেকেছে আজ আমাদের বিচার ব্যবস্থা? অন্যায় বেশি দিন টিকে না। ১০ বছর টিকেছে। আর নয়। এবার এই অন্যায়কে আমরা সবাই মিলে দাফন করব।’

এ জন্যই আমাদের দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতেই হবে।

সর্বশেষ খবর