মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

গৃহযুদ্ধ থেকে ঘুরে দাঁড়ানো শ্রীলঙ্কায় প্রথম সন্ত্রাসবাদী হামলা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দীর্ঘ ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসানের পর ধীরে ধীরে শান্তি ফিরেছিল শ্রীলঙ্কায়। কিন্তু ইস্টার সানডের দিন তিনটি গির্জা ও চারটি অভিজাত হোটেলে একযোগে বোমা হামলা আবারো রক্তাক্ত করেছে দেশটিকে। এদিন হামলায় অন্তত ২৯০ জন নিহত এবং চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা গত কয়কেশ বছর ধরে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাধ্যমে। ১৬ শতকের পর পর্তুগিজ এবং ডাচ্রা শ্রীলঙ্কা নিয়ন্ত্রণ করেছে। ১৫০ বছর ব্রিটিশ শাসনের পর ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু দেশটিতে বহু বছর ধরে তুমুল গৃহযুদ্ধ চলেছে। ১৯৮৩ সালে শ্রীলঙ্কার তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এক হামলার মধ্য দিয়ে দেশটির রক্তাক্ত ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল। জুলাই মাসকে শ্রীলঙ্কানরা বলে ‘ব্ল্যাক জুলাই’ বা ‘কালো জুলাই’। এ মাসেরই ২৩ তারিখ তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দেশটির উত্তরাঞ্চলে ১৩ জন সৈন্যকে হত্যা করে। এটাই ছিল তামিল টাইগারদের প্রথম আক্রমণ। আর এর মাধ্যমেই শ্রীলঙ্কার রক্তাক্ত ইতিহাসের শুরু। প্রতিশোধ হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলি সম্প্রদায়ের উত্তেজিত জনতা পাল্টা হামলা চালায়। যার ফলে নিহত হয় তামিল সম্প্রদায়ের প্রায় তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (এলটিটিই) ওই ঘটনাকে যুদ্ধ শুরু বলে অভিহিত করে। এর পর এ গৃহযুদ্ধ চলে দীর্ঘ ২৬ বছর। নিহত হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ। দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় হাজার হাজার তামিল। সংঘাতের অবসান হয় ২০০৯ সালে। সরকারি বাহিনী যখন বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি দখল করে নেয় তখন গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। গৃহযুদ্ধকালীন একের পর এক ধাক্কা সামলিয়েছে শ্রীলঙ্কা। যুদ্ধে দেশটির অর্থনীতি হয়েছে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। পর্যটন খাতই ছিল শ্রীলঙ্কার প্রধান অর্থনৈতিক খাত।

 কিন্তু যুদ্ধ ও আতঙ্কের কারণে পর্যটন খাত ক্ষতির মুখে পড়ে। নিরাপত্তা শঙ্কায় পর্যটকের অভাব ছিল চরমে। সেই যুদ্ধের ভয়াবহ অতীত পেছনে ফেলে একটু একটু করে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছিল দেশটি। কিন্তু ঠিক সে সময়ে আবার অশান্ত হয়ে উঠল শ্রীলঙ্কা।

সর্বশেষ খবর