মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অফিসে বসে শুধু চা খেলে হবে না

বিআরটিএকে হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় বিআরটিএর প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। বিআরটিএ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেছে, অফিসে বসে শুধু মিটিং করে চা খেলে হবে না, দেশপ্রেম থাকতে হবে। গতকাল বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই রাব্বানী আদালতের তলবে হাজির হওয়ার পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। বিআরটিএ’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুন মাহবুব। গতকাল আদালতে বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে জানান হয়, সারাদেশে ফিটনেস ডিফল্ডার গাড়ি রয়েছে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯টি। ঢাকায় এ সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩০৮টি। এরপর আদালত সারাদেশের নিবন্ধিত কিন্তু ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি এবং লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য দিতে নির্দেশ দেন। এছাড়া ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি এবং লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা আগামী এক মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে বিআরটিএ’র প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ২৩ জুলাই দিন ধার্য করেন হাই কোর্ট। আদালত বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানীকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। শুনানিতে আদালত বলেছে, পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে আনফিট গাড়ি রাস্তায় কীভাবে চলে? রাস্তায় এত মানুষ মরছে, বিবেক একটুও জাগে না? এভাবে চলতে পারে না। আমাদের একটা সিস্টেমের মধ্যে আসতে হবে। দেশের জন্য সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে হাই কোর্ট বলেন, প্লিজ দেশের জন্য কিছু করুন। আমাদের সবারই দায়িত্ব আছে। সবাইকেই দেশকে ভালবাসতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। এক পর্যায়ে আদালতে উপস্থিত বিআরটিএ পরিচালককে উদ্দেশ্য করে হাই কোর্ট বলে, অফিসে বসে বসে মিটিং আর শুধু চা খেলেই হবে না, দেশপ্রেম থাকতে হবে। বিআরটিএ কি করে? আমরা কেন ডাকবো, তাদের (বিআরটিএ) ডাকতে হবে কেন? তারা (বিদেশিরা) পারছে, আমরা পারছি না কেন? আমরা সোনার বাংলা গড়তে চাই। কিন্তু কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করছি না। এ দেশটাকে ভালবাসলে, দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেতে হলে আমাদের অবশ্যই (রুল অব ল’) আইনের শাসনের বাস্তবায়ন করতে হবে। এর আগে গত ২৭ মার্চ হাই কোর্ট রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সড়কে চলা ফিটনেস ও নিবন্ধনহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সহীন চালকের তথ্য জানতে চেয়েছিল হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানীকে আদালতে হাজির হয়ে ফিটনেস ও নিবন্ধনহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সহীন চালকের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছিল। গত ২৩ মার্চ একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘নো ফিটনেস ডক’স, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেয়।

সর্বশেষ খবর