মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
গুজব নিয়ে সরকারের হুঁশিয়ারি

পুলিশের সব ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা  ঠেকাতে সারা দেশে এসপিদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পর সব  জেলার পুলিশ সুপারসহ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে এই নির্দেশনা পাঠানো হয় বলে পুলিশের সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা শহরে এক যুবকের ব্যাগ তল্লাশি করে ‘শিশুর মাথা’ পাওয়ার পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। তারপর দেশের বিভিন্ন স্থানে  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে চলছে। ইতিমধ্যে অন্তত ১০ জন নিহত এবং অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল ধামরাইয়ে গণপিটুনিতে দুজন মারা যান। সদর দফতরের এআইজি তারিকুল বলেন, ছেলেধরা ঘটনায় এ পর্যন্ত কয়টি মামলা হয়েছে, কয়জন ধরা পড়েছে, প্রকৃত ঘটনা কী, পরবর্তী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে এসপিদের চিঠি দিয়ে তিন দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, গুজব ছড়ানো আর গণপিটুনির ঘটনা, দুটোই অপরাধ। যারা এর সঙ্গে জড়িত থাকবেন, তাদের আইনের আওতায় আনতে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে। এসপিদের পাঠানো ওই চিঠিতে বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, তারা যেন এসব বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন। মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজে গিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলতেও বলা হয়েছে এসপিদের। কোনো গুজব কানে এলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা  দেওয়া হয়েছে এসপিদের। এজন্য পুলিশ সদস্যদের টহল এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতেও বলা হয়েছে।

সরকারি হুঁশিয়ারি : সরকার কোনো সন্দেহজনক ঘটনা অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনো নিরীহ মানুষকে হত্যা করার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ‘এ ধরনের ঘটনা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ ছেলেধরা সন্দেহে সাম্প্রতিক কয়েকটি হতাহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার সতর্কতা উচ্চারণ করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

এই সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে হতাহত করা সংক্রান্ত খবরের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।’ এতে বলা হয়েছে, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এবং গুরুতর দ-নীয় অপরাধ।  কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর