বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভারতীয় মিডিয়ায় একই প্রচারণা

প্রিয়া সাহার শাস্তি দাবিতে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নালিশ নিয়ে তৈরি হওয়া প্রিয়া সাহা বিতর্ক থামছেই না। প্রিয়া সাহার বিতর্কিত বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিবের দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রধান প্রতিবেদন হিসেবে প্রকাশ করেছে ভারতীয় পত্রিকা যুগশঙ্খ। এতে সাড়ে তিন কোটি সংখ্যালঘু বাংলাদেশ থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রিয়া সাহার শাস্তির দাবিতে গতকাল ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়  হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সেখানে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রিয়্ াসাহাকে বহিষ্কারের দাবি করা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রিয়া সাহা নিউইয়র্কেই অবস্থান করছেন। তবে কারও সঙ্গেই কথা বলতে চাচ্ছেন না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের কারও সঙ্গে কথা বলতেও নারাজ তিনি। তবে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে চলতি সপ্তাহেই তিনি দেখা করতে যাবেন বলে জানিয়েছেন প্রিয়া সাহার এক আত্মীয়। ভারতের গোহাটি, কলকাতা ও শিলচর থেকে বাংলা ও অসমিয়া ভাষায় প্রকাশিত বহুল প্রচারিত দৈনিক যুগশঙ্খের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট  গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু নিখোঁজ থাকার যে অভিযোগ হিন্দু নেত্রী প্রিয়া সাহা করেছেন তা সঠিক। বাংলাদেশ সরকারের ‘ক’ ও ‘খ’ তফসিলের তালিকা দেখলেই বোঝা যাবে প্রিয়া সাহার তথ্যে ভুল নেই। এই নিখোঁজদের বেশিরভাগই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন উল্লেখ করে  তিনি আরও বলেন, আসামে নাগরিকত্বের তালিকা থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখ নাগরিক বাংলাদেশি ছিল। শুধু আসামেই নয়, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তরপূর্ব অংশে নিখোঁজ ৩ কোটি ৭০ লাখ বাংলাদেশির বেশিরভাগই রয়েছেন। এখন প্রিয়া সাহার সত্য উচ্চারণে সবার গায়ে আগুন জ্বলছে কেন বলেও প্রশ্ন উত্থাপন করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। অন্যদিকে, যুক্তরষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এতে  প্রিয়া সাহার ভয়ংকর মিথ্যা তথ্য প্রদান করার তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানানো হয়। উল্লেখ করা হয় যে, প্রিয়া সাহার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলারও তা সত্য নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তাকে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের দাবিও উঠেছে। কারণ নির্জলা মিথ্যাচারে লিপ্ত এই নারী যে কোনো সময় নিজের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে দ্বিধা করবে না বলে বিক্ষোভ-সমাবেশের বক্তারা উল্লেখ করেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের কাছে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রিয়া সাহা দেশদ্রোহী কাজ করেছেন। তার বক্তব্য শুধু বাংলাদেশকে নয়, বাঙালি জাতি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে কলঙ্কিত করেছে। প্রিয়া সাহা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছেন। তিনি তার যে দুই মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী তাদের নাগরিকত্ব পেতে ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি মিথ্যাচার করে তার দুই  মেয়ের নাগরিকত্ব নেওয়ার পথ পরিষ্কার করার পাশাপাশি নিজেরও গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির পথ সুগম করতে চেয়েছেন। বিক্ষোভ সমাবেশে ছিলেন  মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নুরল আমিন, সাধারণ সম্পাদক এম নবী বাকী,  গ্রেটার ওয়াশিংটন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি করিম সালাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবু সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু গুম হয়েছে। এমনকি তার নিজের বাড়িতেও আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তার ভিটে-মাটিও দখলে নিয়েছে। এমন অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রবাসীদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে। সবাই প্রিয়া সাহার বক্তব্যকে ডাহা মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন।

সর্বশেষ খবর