সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মানব পাচারের নেপথ্যে মানি লন্ডারিং আইন থাকলেও সমস্যা প্রয়োগে

টিআইবি-কেটিএস যৌথসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ পাচারের (মানি লন্ডারিং) মাধ্যম হিসেবে মানব পাচারকে ব্যবহার করা হয় বলে ধারণা করছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) সভাপতি ডেলিয়া ফ্যারাইরা রোবিও। তিনি বলেন, যদি সামগ্রিকভাবে মানি লন্ডারিং ও মানব পাচারের বিষয়টি দেখি, তাহলে আমাদের খুঁজতে হবে কারা কোম্পানির মালিক, কোন ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ লেনদেন হয় কিংবা ব্যাংক হিসাবের মালিক কারা। কে লাভবান হচ্ছে তা খতিয়ে দেখলেই প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায়। গতকাল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও কুয়েত ট্রান্সপারেন্সি সোসাইটির (কেটিএস) যৌথভাবে আয়োজিত ‘মানব পাচার ও অর্থ পাচারের মতো সংঘবদ্ধ অপরাধে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট (সম্মানসূচক) সাবের হোসেন চৌধুরী, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, কেটিএসের সভাপতি মাজিদ আল মুতাইরি প্রমুখ। ডেলিয়া ফ্যারাইরা রোবিও বলেন, টিআই যেকোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ। দুর্নীতি এখন কেবল একটি দেশের ভিতরে নেই। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংঘবদ্ধভাবে দুর্নীতি হচ্ছে। যে কারণে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ সংঘঠিত হয়। তিনি আরও বলেন, মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ দমন বা প্রতিরোধে বিশ্বের অনেক দেশেই ভালো আইন থাকলেও এর প্রয়োগে প্রধান সমস্যা। আমাদের ফোকাস থাকতে হবে অর্থনৈতিক উৎস ও সাংগঠনিক কাঠামোর ওপর। তবে বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিগত বিষয়টির ওপর বেশি ফোকাস দেওয়া উচিত। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনীতি এখন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের একটি খাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্রমশ রাজনীতিতে ঝুঁকছেন। নিজেদের অবস্থান সুসংহত রাখতে রাজনীতি এখন পরিবারতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে। এমন অনেক পরিবার আছে যাদের স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, সম্প্রতি কুয়েতে আটক বাংলাদেশি সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রে এমন দেখা যাচ্ছে। নিজের অবস্থান সুসংহত করতে স্ত্রীকে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। মানব পাচার ও অর্থ পাচারের বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সিআইডি খতিয়ে দেখছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন তার অবৈধ সম্পদের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সংসদে বলেছেন, পাপুল কুয়েতের নাগরিক হলে তার সংসদ সদস্য পদ থাকবে না। তিনি বলেন, সরকারি দলের তিনজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক। মাদক ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত এমন একজন সাবেক এমপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অপরাধে আদালত থেকে সাজার রায় হয়েছে। মানব পাচার ও অর্থ পাচারের সম্পৃক্ততার ব্যাপকতা বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর