সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

রিজেন্টের সাহেদকে খুঁজছে র‌্যাব-পুলিশ

পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, অন্যথায় গ্রেফতার করা হবে। তার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ নেই। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাহেদ কোথায় সেটা সাহেদ জানে। তারও উচিত আত্মসমর্পণ করা। সাহেদকে র‌্যাব-পুলিশ খুঁজছে। আশা করি, খুব শিগগিরই তার গ্রেফতারের বিষয়টি আপনাদের জানাতে পারব। সে কী ধরনের অন্যায় করেছে, সেগুলো ইনকোয়ারি করা হচ্ছে। রিপোর্ট এলে আপনাদের জানাতে পারব। তার অন্যায়ের গভীরতাটা কতটুকু। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে, বর্ডার যাতে ক্রস করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই তাকে ধরতে সক্ষম হব।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সে যে অন্যায় করেছে তার জন্য ইতিমধ্যে র‌্যাব ব্যবস্থা নিয়েছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে যেখানেই থাকুক আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় পুলিশ তাকে ধরে ফেলবে। সাহেদ বিভিন্ন পত্রিকা বের করার অনুমতি নিলে সেক্ষেত্রে সিটিএসবি (নগর পুলিশের বিশেষ শাখা) রিপোর্ট দেয়। সেক্ষেত্রে একটা দুর্বলতা ছিল কিনা। তা ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, উত্তরা থানা সবসময় তাকে শেল্টার দিয়ে আসছিল। এগুলো আপনারা আমলে নিচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনা উদ্ঘাটনের পর কেউ তাকে শেল্টার দেয়নি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরেছে। সে কী করেছে সেগুলো র‌্যাব ও পুলিশ তদন্ত করছে। তাকে অবশ্যই আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সাহেদ গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা চলবে। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা ও চামড়া পাচার রোধ এবং শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য একটি গাইড লাইন তৈরি করছে। এ গাইড লাইন বাস্তবায়নের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। ঢাকা শহরের বাইরে পশুর হাট বসানোর জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ বছর অনলাইন কেনাকাটার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কোরবানির হাটের ইজারাদারদের ব্যবস্থায় হাটের প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা (বেসিনসহ) হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ক্রেতাদের মাস্ক পরিধান করে হাটে প্রবেশ করতে হবে। কোনো ক্রেতা মাস্ক পরে না এলে ইজারাদারদের কাছে সংরক্ষিত মাস্ক কিনে হাটে প্রবেশ করতে হবে। হাটের কাছে ব্যাংক বুথ থাকবে। রাস্তাঘাটের ওপর পশুর হাট দেওয়া যাবে না। পশু ট্রাক কোন হাটে যাবে পশু ট্রাকের সামনে এরকম একটি ব্যানার লেখা থাকবে। পশুর ট্রাক অন্য কোথাও থামানো যাবে না। পশুবাহী কোনো গাড়ি রাস্তায় থামানো যাবে না। নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিবারের মতো, জাল নোট, চাঁদাবাজি, অজ্ঞান-মলম পার্টি হতে নিরাপত্তা দেবে। নদীপথে ফেরি, লঞ্চ ও জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করলে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। নদীপথে পশুবাহী ট্রলার যাতে অতিরিক্ত বোঝাই (ওভারলোড) না হয় সে ব্যাপারে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ লক্ষ্য রাখবে। পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ ও যথাযথভাবে বিপণনের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি অন্যান্যবারের চেয়ে কম সময়ের জন্য বন্ধ রাখা যেতে পারে। শ্রমিকদের বেতন বোনাস যথাসময়ে পরিশোধে বিজিএমইএ এবং কারখানা মালিকরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এবারের ঈদুল আজহার জামাত মসজিদে আদায়ের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর